Molina Devi: আজও রুপোলি পর্দায় অমলিন মলিনার অনন্য অভিনয়দ্যুতি...

বেশিরভাগ বাংলা এবং হিন্দি ভাষার নাটক ও ছবিতে তিনি মাতৃস্থানীয়ার চরিত্রেই বেশি অভিনয় করেছেন। মলিনা দেবীর জন্ম ১৯১৬ অথবা ১৯১৭ সালে, কলকাতায় অথবা হাওড়ায়। তাঁর আসল নাম ছিল মলিনমালা। তিনি আমাদের সকলের পরিচিত মলিনা দেবী।   

| Aug 13, 2022, 16:09 PM IST

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আজও রুপোলি পর্দায় অমলিন তাঁর অভিনয়শিল্প। তিনি মলিনা দেবী। পর্দায় অভিনয় শুরু করেছিলেন ১৩ বছর বয়সে। আজ, ১৩ অগস্ট তাঁর মৃত্যুদিন। ১৯৭৭ সালের এই দিনে তিনি প্রয়াত হন। মলিনা দেবী বাংলা এবং হিন্দি চলচ্চিত্র ও থিয়েটারের এক অনন্য অভিনেত্রী ছিলেন। রানি রাসমণি রূপে তিনি মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে দীর্ঘদিন অভিনয় করেছেন। বেশিরভাগ বাংলা এবং হিন্দি ভাষার নাটক ও ছবিতে তিনি মাতৃস্থানীয়ার চরিত্রেই বেশি অভিনয় করেছেন। মলিনা দেবীর জন্ম ১৯১৬ অথবা ১৯১৭ সালে, কলকাতায় অথবা হাওড়ায়। তাঁর আসল নাম ছিল মলিনমালা।

1/6

৮-য়ে মঞ্চ, ১৩-য় পর্দা

মলিনা দেবী ৮ বছর বয়সে কলকাতার নাট্যমঞ্চে এক নাচের দলে কর্মজীবন আরম্ভ করেন। মিনার্ভা থিয়েটারে 'কিন্নরী', 'মিশরকুমারী' বিবিধ নাটকের পরে একসময় মনমোহন থিয়েটারে বালকচরিত্রে অভিনয় করতে আরম্ভ করেন। জাহাঙ্গীর নাটকে তিনি সাজেন বালক দারা শিকোহ (১৯২৯)। এর কিছুদিন পরে তাকে পুনরায় নৃত্যশিল্পী রূপে মঞ্চে দেখা যায়। এর পরে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় আরম্ভ করেন। ১৯৩০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'শ্রীকান্ত'-তে তাঁকে একটি ছোট চরিত্রে দেখা যায়। দীর্ঘদিন নিউ থিয়েটার্সের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। মীরাবাঈ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়োন।

2/6

অপরাজেয় কথাশিল্পীর কাহিনিতে পরের পর অভিনয়

অপরাজেয় কথাশিল্পীর কাহিনিতে পরের পর অভিনয় দিয়ে ক্রমশ নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন মলিনা। ১৯৩৬ সালে তিনি অভিনয় করেন প্রমথেশ বড়ুয়া পরিচালিত 'গৃহদাহ' ছবিতে ও ১৯৩৮ সালে প্রফুল্ল রায়ের অভিজ্ঞান। একই সঙ্গে হিন্দি ছবি অভাগীন-এও মূল চরিত্রে অভিনয় করেন। এর পরে তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত 'বড়দিদি' ছবিতে বিপুল সাফল্য পান। ১৯৪০ সালে নিউ থিয়েটার্সের বাণিজ্যিক পরিকাঠামো বদলের পরে তিনি অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থা দ্বারা নির্মিত ছবিতে অভিনয় আরম্ভ করেন।

3/6

বাংলা ও হিন্দি ভার্সানে

পরপর অনেকগুলি ছবিতে তিনি একই ছবির বাংলা ও হিন্দি ভার্সানে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য 'রামের সুমতি' ও 'বিন্দুর ছেলে'। 

4/6

সাড়ে চুয়াত্তর

১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'সাড়ে চুয়াত্তরে' তিনি তুলসী চক্রবর্তীর বিপরীত এক অবিস্মরণীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯৫৫ সালে 'রাণী রাসমণি' ছবিতে মুখ্য চরিত্রে সাড়াজাগানো অভিনয় করেন। তাঁর বিপরীতে গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীরামকৃষ্ণের ভূমিকায় অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে বহুবার তাকে মঞ্চ ও পর্দায় রাণী রাসমণির ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। 

5/6

পর্দায় বর্ণময়ী

প্রায় ৫ দশকের অভিনয়জীবন। কত ছবি দিনের আলো দেখেনি। কত ছবির প্রিন্ট নষ্ট হয়ে গেছে। কত ছবির কথা দর্শকের স্মৃতি থেকেই হারিয়ে গেছে। তবুও যে কটি ছবি আজও বাঙালি মনে করতে পারে সেগুলির মধ্যে কয়েকটি হল-- 'নিষ্কৃতি', 'ছোট বৌ', 'মেজো বৌ', 'অন্নপূর্ণার মন্দির', 'মহাকবি গিরিশচন্দ্র', 'নীলাচলে মহাপ্রভু', 'ইন্দ্রনাথ, শ্রীকান্ত ও অন্নদাদিদি', 'সাত পাকে বাঁধা' 'ওরা থাকে ওধারে', 'একটি রাত', 'মানময়ী গার্লস স্কুল' ও 'ছায়াসূর্য'। শেষ জীবনের উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে 'ফুলেশ্বরী'।

6/6

'সংগীত নাটক আকাদেমি' জয়ী

ছায়াছবির পাশাপাশি তিনি নিয়মিত মঞ্চে অভিনয় চালিয়ে যান। ১৯৪৩ সালে শিশির ভাদুড়ীর শ্রীরঙ্গমে (পরে বিশ্বরূপা) শরৎচন্দ্রের 'বিপ্রদাস' নাটকে বন্দনা চরিত্রে তিনি প্রশংসা পান। এর পরে কালিকা থিয়েটার দ্বারা প্রযোজিত বৈকুণ্ঠের উইল, মেজদিদি, 'যুগদেবতা' নাটকে তিনি অভিনয় করেন। 'যুগদেবতা' নাটকে তিনি রাণী রাসমণি ও গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীরামকৃষ্ণের ভূমিকায় অভিনয় করেন।  রেডিও শিল্পী হিসেবেও কাজ করেন তিনি। 'রাধারাণী' রেডিও নাটকে রাধারাণীর মায়ের ভূমিকায় তাকে শোনা গিয়েছিল। নাটকের ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ১৯৭৬ সালে 'সংগীত নাটক আকাদেমি' পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালের ১৩-ই অগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।