'গঙ্গা থেকে মাছ ধরলে দিতে হবে কর'! কোথায় এই একুশে আইন?

Malda Mothabari Fishermen: গঙ্গানদীর তীরে বড় সাইনবোর্ড। তাতে ফরমান--নদী থেকে মাছ ধরলে দিতে হবে কর! উল্লেখ রয়েছে করের পরিমাণও। নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিলেই মাছ ধরা যাবে নদী থেকে। অভিযোগ, সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই ওই অঞ্চলের মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে বেআইনি টাকা আদায় চলছেই।

| Mar 23, 2023, 16:16 PM IST

রণজয় সিংহ: গঙ্গানদীর তীরে বড় সাইনবোর্ড। তাতে ফরমান--নদী থেকে মাছ ধরলে দিতে হবে কর! উল্লেখ রয়েছে করের পরিমাণও। মাছের দামের সাপেক্ষে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিলেই মাছ ধরা যাবে নদী থেকে। অভিযোগ, কলকাতা হাইকোর্ট ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গঙ্গানদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহকারী স্থানীয়দের কাছে বেআইনি টাকা তোলা চলছেই। আর এই তোলা দিতে অস্বীকার করলেই তোলাবাজদের চোখরাঙানি, পাশাপাশি মাছ ধরার জাল কেটে নেওয়ার মতো শাস্তি। দাবি, যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়বে তার বাজারমূল্যের ২০ শতাংশ তোলা দিতে হবে। একেবারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নামাঙ্কিত বোর্ড টাঙিয়ে টাকা আদায় হচ্ছে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে। মোথাবাড়ি ধীবর সমবায় সমিতি লিমিটেডের বিরুদ্ধে তোলাবাজির এই অভিযোগ উঠেছে।

1/6

কে টাঙাল বোর্ড?

মানিকচক বিধানসভার বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, এমন কোনও সিদ্ধান্ত প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীও নদী থেকে মাছ ধরার ক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের জলকর মকুব করেছেন। তার পরেও কেন এমন হচ্ছে, তা প্রশাসনকে জানাব। ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।  

2/6

মৎস্যজীবীদের কোনও কর দিতে হবে না!

২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, গঙ্গায় মাছ ধরার ক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের কোনও কর দিতে হবে না। একই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টও। কিন্তু অভিযোগ, সরকারি এই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গত আট বছর ধরে চলছে তোলাবাজি।

3/6

মানিকচকের নারায়ণপুরের মৎস্যজীবী

মানিকচকের নারায়ণপুরের মৎস্যজীবী বুলবুল চৌধুরী জানান, আমরা গঙ্গা নদীতে প্রায় সাত হাজার টাকার মাছ ধরেছিলাম। মাছ নিয়ে ঘাটে আসতেই তোলাবাজদের মাস্তানরা টাকা চাইল। টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমাদের সমস্ত মাছ ও জাল ওরা কেড়ে নেয় এবং ১৪০০ টাকা দাবি করে। শেষমেষ ১২০০ টাকা দিয়ে ওদের কাছ থেকে মাছ ও জাল ছাড়ানো যায়। তাই আমরা সমস্ত মৎস্যজীবীরা একত্রিত হয়ে মানিকচক থানায় ও জেলাশাসকের কাছে তোলাবাজদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি। অন্য এক মৎস্যজীবী সতীশ চৌধুরী জানান, তোলাবাজদের ভয়ে গঙ্গানদীতে মাছ ধরতে পারছি না। বিপন্ন আমাদের জীবিকা।

4/6

মোথাবাড়ি ধীবর সমবায় সমিতি

মোথাবাড়ি ধীবর সমবায় সমিতির লিমিটেডের কর্ণধার পঞ্চানন মাহাতো টেলিফোনে অবশ্য উল্টো কথা জানান। তিনি বলেন, সরকারি নিলামে তিনি ১১ লক্ষ ৫১ হাজার ৯৯৯ টাকা প্রতিবছর হিসেবে লিজ নিয়েছেন তিনি। সাতবছরের জন্য এই লিজ। ২০২০ সালে দরপত্র করে এই লিজ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে জলকর আদায়ের বৈধ কাগজও আছে। সেই অনুযায়ী তাঁরা মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে জলকর নেন। 

5/6

জলকর?

তবে, ২০ শতাংশ তোলা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন পঞ্চানন মাহাতো। তাঁর দাবি, ৫ শতাংশ হারে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে জলকর নেওয়া হচ্ছে‌। যদি আমাদের জলকর বাতিল হয় তবে বাতিলের শংসাপত্র দিক প্রশাসন এবং লিজের সমস্ত টাকা ফেরত দিক। এমন ঘটলে আমরাও জলকর নেওয়া বন্ধ করব। 

6/6

শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ বিজেপি নেতার

এই বিষয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিজেপি নেতা গৌরচন্দ্র মণ্ডল। তাঁর দাবি, সরকার নির্দেশ দিয়েছে গঙ্গা নদী থেকে মাছ ধরলে মৎস্যজীবীদের কোনও কর দিতে হবে না। তা সত্ত্বেও তোলাবাজ মস্তানবাহিনী চড়া হারে তোলা তুলছে। তোলাবাজদের মাথায় তৃণমূলের বড় সারির নেতাদের হাত রয়েছে বলেই সরকারি নির্দেশকে অমান্য করে তাদের পক্ষে তোলা আদায় করা সম্ভব হচ্ছে।