Jean-Luc Godard: শুধু জাম্প-কাট সৃষ্টির জন্যই তাঁর কাছে চিরঋণী থাকবে বিশ্বসিনেমা

ফরাসি নুভেল ভাগ আন্দোলনের অনন্য ব্যক্তিত্ব তিনি। বিশ্ব-ফিল্মের উচ্চমানের স্রষ্টা জাঁ লুক গোদার। এরিক রোহমের, জ্যাক রিভেট, ত্রুফো প্রমুখ ফরাসি স্রষ্টার মধ্যে জাঁ লুক গোদার এক অনন্য সৃজনধর্মিতা নিয়ে বরাবর কাজ করে গিয়েছেন। ১৯৫০ সালে মূলত ফ্রান্সে এবং পরবর্তী কালে গোটা ফিল্মি-বিশ্বে যে নবতরঙ্গের সিনেমা বিশেষ সাড়া ফেলেছিল তার প্রাণপুরুষদের মধ্যে অন্যতম গোদার।

| Sep 13, 2022, 17:14 PM IST

সৌমিত্র সেন: প্রয়াত হলেন নবতরঙ্গের অন্যতম মুখ বিশ্ববিখ্যাত 'ব্রেথলেস' ছবির নির্মাতা অনন্য় চিত্রপরিচালক জাঁ লুক গোদার। ফরাসি ছবির নবজন্মদাতাদের একজন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। ফরাসি নুভেল ভাগ আন্দোলনের অনন্য ব্যক্তিত্ব তিনি। বিশ্ব-ফিল্মের এক উচ্চমানের স্রষ্টা জাঁ লুক গোদার। এরিক রোহমের, জ্যাক রিভেট, ত্রুফো প্রমুখ ফরাসি স্রষ্টার মধ্যে জাঁ লুক গোদার এক অনন্য সৃজনধর্মিতা নিয়ে বরাবর কাজ করে গিয়েছেন। ১৯৫০ সালে মূলত ফ্রান্সে এবং পরবর্তী কালে গোটা ফিল্মি-বিশ্বে যে নবতরঙ্গের সিনেমা বিশেষ সাড়া ফেলেছিল তার প্রাণপুরুষদের মধ্যে অন্যতম গোদার।

১৯৬০-এর দশক জুড়ে গোদারের সোনার সময়। একের পর এক ব্যতিক্রমী ছবি উপহার দিয়ে গিয়েছেন। তবে গোদার সব চেয়ে বেশি বিখ্যাত 'ব্রেথলেস' এবং 'আলফাভিলে' ছবির জন্য। বিশ্বচলচ্চিত্রের ক্লাসিকের মধ্যেই পড়ে তাঁর সৃজন। যা নিয়ে এতকাল ধরে চিত্ররসিকেরা নানা ভাবে আলোকিত হয়েছেন, প্রণোদিত হয়েছেন, উৎসাহিত বোধ করেছেন। হয়তো আগামী দিনেও করবেন। তাঁর প্রথম ছবিই 'ব্রেথলেস'। এই ছবির নির্মাণকৌশল মুগ্ধ করেছিল বিশ্বচলচ্চিত্ররসিকদের। এ ছবির ব্যতিক্রমী ভিজুয়্যাল স্টাইল এক অন্যরকম নির্মাণ-ঐতিহ্য তৈরি করে দিয়েছিল। তখনই বিশ্বচলচ্চিত্ররসিকেরা বুঝে গিয়েছিলেন বিশ্বসিনেমার নতুন দূত এসে গিয়েছেন।

1/6

চর্চার কেন্দ্র

২০০২ সালে 'সাইট অ্যান্ড সাউন্ড' ম্যাগাজিনে আয়োজিত ভোটে সমালোচকদের ভোটে সর্বকালের সেরা দশ পরিচালকের তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন গোদার। বলা হয়, বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের যে কোনও চলচ্চিত্রনির্মাতার সমালোচনামূলক বিশ্লেষণের অন্যতম উপজীব্য ছিল তার সৃজন।

2/6

নব তরঙ্গ

আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে এসেছিল নিউ ওয়েভ বা নব তরঙ্গে। ১৯৬০-এর দশকে সিনেমা তৈরির পদ্ধতিতে নতুনত্ব এনেছিলেন পরিচালক। হাতে ধরা বা হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরায় নাগরিক যাপন উঠে এসেছিল গোদারের ছবিতে।

3/6

প্রেরণা বের্টোল্ট ব্রেখট

জার্মান নাট্যকার বের্টোল্ট ব্রেখট ছিলেন গোদারের অনুপ্রেরণা। ব্রেখটোর 'এপিক থিয়েটার' ফরম্যাটকেই চলচ্চিত্রের পর্দায় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন গোদার। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকাংশেই তিনি এ ক্ষেত্রে সফল হয়েছিলেন।

4/6

সিনেমাশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট

১৯৩০ সালের ৩ ডিসেম্বর জন্ম গোদারের। মাত্র চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে সুইটজারল্যান্ডে চলে যান। জেনেভা লেকের ধারেই কাটে তাঁর শৈশব এবং কৈশোর। যুদ্ধ-পরবর্তী ফ্রান্সে ফিরে যান যুবক গোদার। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন তিনি। কলেজজীবনে থাকাকালীনই গোদারের সিনেমাশিল্পের প্রতি আকর্ষণ বাড়তে শুরু করে।

5/6

নিজস্ব চলচ্চিত্রভাষা

গোদারের চলচ্চিত্র বহু বিখ্যাত পরিচালকদের অনুপ্রাণিত করেছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন মার্টিন স্করসেসি, কোয়েন্টিন ট্যারান্টিনো, ব্রায়ান ডি পালমা, স্টিভেন সোডারবার্গ, রবার্ট অল্টম্যান, জিম জারমুশ, বেরনার্দো বেরতোলুচ্চি, পিয়ের পাওলো পাসোলিনি। মৃণাল সেনকেও তাঁর নিজস্ব চলচ্চিত্রভাষা খুঁজে পেতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন গোদার।

6/6

'আভাঁ গার্দ ফিল্ম'

গোদারের তৈরি নতুন ধারার ছবিগুলিকে 'আভাঁ গার্দ ফিল্ম' হিসেবেই অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য ছবিগুলি হল-- 'আ উওম্যান ইজ আ উওম্যান', 'মাই লাইফ টু লিভ', 'দ্য লিটল সোলজার', 'লা চিনইজ', 'উইক-এন্ড' ইত্যাদি। ২০১৮ সালে তাঁর পরিচালিত আভাঁ গার্ড ছবি 'দ্য ইমেজ বুক' পাম ডি'ওর পুরস্কার পায়। যদিও সেই পুরস্কার গ্রহণ করেননি তিনি। চওড়া কপাল, এক-মাথা কাঁচা-পাকা এলোমেলো চুল, কালো রঙের মোটা ফ্রেমের চশমা-- গোদারের নিজের এই ছবিই যেন একটা কাল্ট ইমেজ হয়ে রয়ে গিয়েছে!