Period : পিরিয়ড আসলে পবিত্রই, না জানলে জেনে নিন! কারণ...

Aug 26, 2022, 20:08 PM IST
1/7

২০২২ সালে দাঁড়িয়েও চারিদিকে ঘটে চলা নানা ঘটনায় ভাবতে অবাক লাগে এই মানুষই নাকি মহাকাশে পারি দিয়েছে বহুবার। আজও পিরিয়ড নিয়ে প্রচলিত বহু মিথ ও পিরিয়ড চলাকালীন মেয়েদের উপর চলা অকথ্য অত্যাচার, মানব সভ্যতার অগ্রগতিকে প্রশ্ন করে! পিরিয়ড (মাসিক বা ঋতুস্রাব) শ্বাসপ্রশ্বাসের মতোই একটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক জৈবিক প্রক্রিয়া। অথচ ভারতে মাসিক নিয়ে কথা বলা, আলোচনা এখনও প্রায় নিষিদ্ধ। এখনও ঠাকুরঘরে ঢোকা বারণ, রান্নায় না বা চুল খোলা রাখার বিধান। কোনও মেয়ে শহর ছাড়িয়ে মফস্সলের দোকানে নিজের পছন্দের স্য়ানিটারি ন্য়াপকিন কিনতে ঢুকলে এখনও পাশের পুরুষ ক্রেতা আড়চোখে দেখেন আর ভাবেন, কী অসভ্য় মেয়েছেলে বাবা! তবে এ শুধু ভারতের নয়,  এশিয়া, আফ্রিকা, এমনকি ইউরোপে আজও বহু মেয়ে অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের শিকার। ভাবলে আরও অবাক লাগে এই প্রচলিত কুপ্রথাগুলি দীর্ঘদিন ধরে নারীরা নিজেরাই বয়ে চলেছে। কিন্তু বর্তমানে পিরিয়ড সম্পর্কে প্রচার ও শিক্ষা মাসিক চক্রকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনছে। আপনিও যদি না জেনে থাকেন কোনটা মিথ আর কোনটা বিজ্ঞান, তাহলে জেনে নিন। কারণ, ওই যে... কথায় আছে, শিক্ষা আনে চেতনা আর চেতনা আনে বিপ্লব!

2/7

মিথ : পিরিয়ডের সময় বেরনো রক্ত অপবিত্র!

বিজ্ঞান : মাসিক চক্র নারীর প্রজনন প্রক্রিয়ার অংশ। পিরিয়ডের সময় নারীর অনিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুর নরম পুরু আবরণ ভেদ করে রক্ত ও নষ্ট হয়ে যাওয়া টিস্যুর সাথে যোনিপথ দিয়ে নির্গত হয়। এই সময় রক্তের রঙ গাঢ় লাল থেকে বাদামী রঙের হয়। অক্সিজেনের সাথে রক্তের প্রতিক্রিয়ার কারণে রক্তের আদর্শ রঙের পরিবর্তন হয়। সুতরাং কোনভাবেই পিরিয়ডের রক্ত অপবিত্র নয়। বরং পিরিয়ড নারীর শরীরকে গর্ভাবস্থার জন্য প্রস্তুত করে। এক বাঙালি অধ্য়াপক বলেছিলেন, পিরিয়ড কিছুই, একটি ডিম্বাণুর মরণে জরায়ুর কান্না।

3/7

মিথ : পিরিয়ড মিস করা মানেই প্রেগন্যান্ট!

বিজ্ঞান : ডিম্বাণু নিষিক্ত না হলে কোন নারী প্রেগন্যান্ট হতে পারেন না। মাসিক দেরিতে হওয়া অথবা মিস যাওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। বহুক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অতিরিক্ত ওজন, অস্বাস্থ্য়কর খাদ্যাভ্যাস,  PCOD (Polycystic Ovarian Disease) বা PCOS (Polycystic Ovary Syndrome)-এর মতো ওভারিতে সিস্টের সমস্যা, এমনকি মানসিক চাপের কারণেও মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। তবে মাসিক অনিয়মিত হতে থাকলে ডাক্তার দেখান উচিত।

4/7

মিথ : পিরিয়ডের সময় সেফ সময়, গর্ভধারণের সম্ভাবনা নেই!

বিজ্ঞান : পিরিয়ড চলাকালীন সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার সম্ভবনা থাকে না, কিন্তু একেবারে অসম্ভবও না। পিরিয়ডের সময় অনেকেই ধরে নেয়, ডিম্বাণু নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এই সময়ও ডিম্বাণু সক্রিয় থাকতে পারে। তাই পিরিয়ড চলাকালীন অসুরক্ষিত যৌনমিলনে সামান্য হলেও ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকেই। এছাড়াও কিছুক্ষেত্রে নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুর আস্তরণের সাথে সংযুক্ত হওয়ার সময় সামান্য রক্ত নিঃসৃত হয়। অনেকেই  এটিকে পিরিয়ড মনে করেন। এটিকে এমপ্লান্টেশন ব্লিডিং বলে।

5/7

মিথ : পিরিয়ড চলাকালীন চুল ধোয়া উচিত না!

বিজ্ঞান : এটি সম্পূর্ণ অ-বৈজ্ঞানিক। মাসিক চলাকালীন সাধারণ জীবন-যাপন ও ব্যাক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির সাথে আপসের কোন প্রয়োজনই নেই। তাই চুল ধোয়ার সাথে পিরিয়ডের কোন সম্পর্ক নেই। বরং পিরিয়ডের সময় শরীরে হাইজিন বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

6/7

মিথ : ন্যাপকিনের বদলে ট্যাম্পন ব্যবহার করলে ভার্জিনিটি নষ্ট হয়!

বিজ্ঞান : এই জেট যুগে কুমারিত্ব বা ভার্জিনিটির ধারণাটাই মিথ। এখনও অধিকাংশ মানুষের ধারণা যোনিপথে কোন কিছুর প্রবেশ ঘটালেই ভার্জিনিটি নষ্ট হয় অর্থাৎ হাইমেনের পর্দা ভেঙে যায়। কিন্তু সাইকেল চালান, জিম করা আরও নানা কঠোর ফিজিক্যাল কাজে কোন মেয়ের হাইমেনের পর্দা ভেঙে যেতে পারে। তবে বর্তমানে বিজ্ঞান বলছে হাইমেন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন হয়ে থাকতে পারে। কোরো হাইমেন পুরু, কারো আবার খুব পাতলা আবার কারো প্রাকৃতিকভাবেই হাইমেন নেই। সুতরাং হাইমেন নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা আসলে বোকার স্বর্গে বাসের মতো।

7/7

মিথ : ভ্রান্ত ধারণাকে বলুন টাটা বাই বাই...

মাসিকের সময় লোকের কথা না শুনে নিজের শরীরের কথা শুনুন। পিরিয়ডের সময় মেয়েদের শরীর দুর্বল থাকে। তাই শরীরের দরকার এক্সট্রা যত্ন। বাকি আপনার জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ বজায় থাকুক, মন ভরে টক খান, পুজো দিন ভক্তি নিয়ে। মনে রাখবেন শুধুমাত্র কিছু লোকের কথায় লাইফের সাথে নো কম্প্রোমাইজ।