Brij Bhushan Sharan Singh VS Wrestlers Protest: বহাল তবিয়তে থাকা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দুটি এফআইআরে, ১০টি নিগ্রহের ঘটনা উল্লেখ করলেন ভিনেশ-সাক্ষীরা
কয়েক মাসের মধ্যেই এশিয়ান গেমস, আগামী বছরেই অলিম্পিক্স। এহেন পরিস্থিতিতে অনুশীলন না করে রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন কুস্তিগীররা। অনুশীলনের বদলে রাস্তায় দিন-রাত কাটাচ্ছেন কুস্তিগীররা। ফলে সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়াদের পদক জয়ের সম্ভাবনাও অনেকখানি কমে যাবে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: যৌন হেনস্থার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতারির দাবিতে ক্রমাগত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীররা। সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat), বজরং পুনিয়ার (Bajrang Punia) মতো দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীরদের আন্দোলন (Wrestlers Protest) বড় আকার ধারণ করেছে। এমন প্রেক্ষাপটেই কুস্তিগীরদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েচ্ছিলেন ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিং (Brij Bhushan Sharan Singh)। তাঁর বিরুদ্ধে একটাও অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তিনি ফাঁসি বরণ করে নেবেন বলে জানালেন বিজেপি (BJP) সাংসদ। আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, "যদি আপনাদের কাছে কোনও প্রমাণ থাকে, তাহলে আদালতে জমা দিন। তাতে আমি যে কোনও শাস্তি গ্রহণ করতে রাজি আছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ফাঁসিতে ঝুলে যাব!" এদিকে ব্রিজভূষণকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসবাদ করলেও, দিল্লি পুলিসের দাবি বিতর্কিত কর্তার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে তাই বলে সাক্ষী-ভিনেশরা কিন্তু থেমে থাকার পাত্র নন। কুস্তিগীররা এবার দিল্লি পুলিসের (Delhi Police) কাছে দায়ের করা দু’টি এফআইআরে মোট ১০টি নিগ্রহের ঘটনার উল্লেখ করেছেন। সেখানে নির্দিষ্ট করে বলা আছে কোথায়, কখন, কাকে নিগ্রহ করেছেন ব্রিজভূষণ।
এবার দেখে নিন ছয় জন প্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগীর ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে কোন কোন মারাত্মক অভিযোগ করেছেন?
প্রথম: ব্রিজভূষণ সেই মহিলার সঙ্গে রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাঁর বুক, পেটে হাত দেন! এমনটাই অভিযোগ করেছেন সেই কুস্তিগীর। এমনকি পরবর্তী সময় নিজের অফিসে ডেকে সেই মহিলার অনুমতি ছাড়াই তাঁর শরীরে হাত দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
দ্বিতীয়: এক মহিলা কুস্তিগীরের নিশ্বাস-প্রশ্বাস দেখার নাম করে তাঁর শরীরে হাত দেন ব্রিজভূষণ। অনুশীলন করার সময় কোচের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তাঁর জামার ভিতর হাত ঢুকিয়ে দেন অভিযুক্ত ফেডারেশন সভাপতি। এমনকি জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
তৃতীয়: এই মহিলার কাছে ফোন ছিল না। পরিবারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার নাম করে অভিযোগকারী কুস্তিগীরকে ঘরে ডাকেন ব্রিজভূষণ। ফোন দেওয়ার নাম করে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অভিযুক্ত কর্তা।
চতুর্থ: নিশ্বাস-প্রশ্বাস দেখার নাম করে আর এক মহিলার শরীরেও হাত দেন ব্রিজভূষণ। সেই মহিলার বুক থেকে পেট পর্যন্ত হাত বোলান তিনি।
পঞ্চম: ছবি তোলার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই মহিলা কুস্তিগীরের কাঁধ ধরে তাঁকে একটা আটকে রেখেছিলেন ব্রিজভূষণ। এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছিল।
ষষ্ঠ: ছবি তোলার নাম করে তাঁকে কাছে টেনে নেন ব্রিজভূষণ। কাঁধ ধরে রেখেছিলেন। নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই কুস্তিগীর। ব্রিজভূষণকে ধাক্কা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। সেই ঘটনার পর ব্রিজভূষণ তাঁকে ভয় দেখান।
শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নন, এমনকি বেশ কয়েকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মহিলা কুস্তিগীরও ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করেছিলেন। সেই অপ্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের দাবি ছিল, তাঁদের সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার জন্য বারবার বিরক্ত করেছিলেন ব্রিজভূষণ। গত ২৮ এপ্রিল দিল্লি পুলিসের কাছে মোট দুটি এফআইআর দায়ের করেছিলেন দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীররা। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ৩৫৪, ৩৫৪এ এবং ৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এরমধ্যে একটি এফআইআর-এ বলা হয়েছে ছ’জন প্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগীরের কথা। দ্বিতীয়টিতে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগীরের বাবা অভিযোগ করেছেন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। তবে এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্ত কর্তা।