Mamata Banerjee : 'অতুলনীয়' মোহনবাগানকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
কালীঘাটের বাড়ি থেকে মোহনবাগান তাঁবুর দূরত্ব খুব বেশি নয়। তবে কাজের চাপে সবুজ-মেরুনে পা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই প্রথম মোহনবাগান ক্লাবে এলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সবুজ-মেরুন তাঁর হৃদয়ে আছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর মা প্রয়াত গায়ত্রী দেবী সবুজ-মেরুনের সমর্থক ছিলেন। মোহনবাগানের খেলা থাকলেই তাঁর মা কালীঘাটে পুজো দিতে চলে যেতেন। স্বভাবতই মোহনবাগানকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর যে বাড়তি আবেগ থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মোহনবাগান (Mohun Bagan) তাঁর কাছে 'অতুলনীয়'। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে মোহনবাগানের তুলনা মোহনবাগান নিজেই। এহেন সবুজ-মেরুনকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার বিকেলের দিকে গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে এসে নতুন ভাবে গড়ে ওঠা মোহনবাগানের উদ্বোধন করলেন তিনি। এরপরেই বড় ঘোষণা করলেন তিনি। বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ তিনি সবুজ-মেরুন তাঁবুতে পা রাখেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে তিনি জানালেন, মোহনবাগানের আবেগ কোনওদিনও ভোলা যাবে না। যতই মোবাইলের জমানা আসুক না কেন, এই আবেগ কেউ ভুলতে পারবেন না।
কালীঘাটের বাড়ি থেকে মোহনবাগান তাঁবুর দূরত্ব খুব বেশি নয়। তবে কাজের চাপে সবুজ-মেরুনে পা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই প্রথম মোহনবাগান ক্লাবে এলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সবুজ-মেরুন তাঁর হৃদয়ে আছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর মা প্রয়াত গায়ত্রী দেবী সবুজ-মেরুনের সমর্থক ছিলেন। মোহনবাগানের খেলা থাকলেই তাঁর মা কালীঘাটে পুজো দিতে চলে যেতেন। স্বভাবতই মোহনবাগানকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর যে বাড়তি আবেগ থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক। ক্লাবের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে বরণ করে নিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য। সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় লাইফ মেম্বারশিপ কার্ড তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। ৫৮ বছর আগে পুরনো তাবুর উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেন। এরপর বুধবার বিকেলে প্রথমবার গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে পা রাখলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "মোহনবাগানের অনুষ্ঠানে আসব বলে সবুজ-মেরুন শাড়ি পড়লাম। আমার কাছে লাল-হলুদ শাড়ি নেই। ইস্টবেঙ্গলের অনুষ্ঠানে লাল-হলুদ শাড়ি বানিয়ে নেব।" এরপর তিনি আরও যোগ করলেন, "মোহনবাগানের অনুষ্ঠান বললে আমার মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। কারণ পেলে যখন খেলতে এসেছিল, আমার মা তখন কালীঘাটে পুজো দিয়েছিলেন। আমার দাদা ইস্টবেঙ্গলে, আমার ভাই মোহনবাগানে। মহামেডানে কেউ নেই। আমি আছি। ছোটো ছোটো যে ক্লাবগুলোর কেউ নেই, তাদের জন্য আমি আছি।" এরপর তিনি বলেন, "খেলা হবে কথাটা কেন বলেছিলাম জানেন? কারণ জীবনটাই তো খেলা।"
আরও পড়ুন: Virat Kohli : রোহিত, দ্রাবিড়ের জমানায় কোহলি, রাহুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কার কালো মেঘ! কিন্তু কেন?
আরও পড়ুন: Lakshya Sen : কোন মন্ত্রে করলেন 'লক্ষ্য ভেদ'? কামব্যাকের গল্প শোনালেন 'সোনার ছেলে'
ঢেলে সাজানো হয়েছে সবুজ-মেরুন তাঁবু। কনফারেন্স রুম থেকে ক্যান্টিন- সবেতেই লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। বুধবার নতুন করে সেজে ওঠা এই সবুজ-মেরুন তাঁবুরই উদ্বোধনে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাও আবার সবুজ-মেরুন পাড়ের শাড়ি পরে। ঢাক বাজিয়ে তাঁকে ক্লাবে স্বাগত জানানো হয়। ক্লাবের খুদে সমর্থকরা ঘিরে ধরেন তাঁকে। হাসি মুখে তাদের সঙ্গে ছবিও তোলেন তিনি। এরপরই মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেন, যেখানে তাঁকে আজীবন সদস্য় পদের সম্মান দেওয়া হয়।
সবুজ-মেরুনের ইতিহাসও মমতার জানা। তাই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি যোগ করলেন, "খেলার শুধু একটা দিক নয়, ক্রীড়া সংস্কৃতির পাশাপাশি আর্থিক দিক, দেশপ্রেম, নিয়মানুবর্তিতা সবকিছু তৈরি হয়। সেই কাজটা করে চলেছে মোহনবাগান। তাই মোহনবাগানের মোহনবাগানের তুলনা মোহনবাগান নিজেই। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে যারা মোহনবাগানে খেলেছেন লড়েছেন তাদের স্যালুট। কারণ ভারতের জাতীয়তাবাদে মোহনবাগানের অবদান আছে। আমার মা মোহনবাগান করত। দাদাকে দেখি ইস্টবেঙ্গল করে। আরও কেউ কেউ মোহনবাগান করে, কেউ ইস্টবেঙ্গল করে। আমিও করি। মহামেডান স্পোর্টিংয়ের কেউ নেই বলে আমি মহামেডান স্পোর্টিংও করি।” তিনি আরও যোগ করেন, “আর যে সমস্ত ছোট ক্লাবগুলোর কেউ নেই, কিন্তু হৃদয় আছে, ভালবাসা আছে, তাদের জন্যও উপলব্ধি করি।”
অন্যদিকে এই অনুষ্ঠানে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, "আমি ওঁকে মুখ্যমন্ত্রী নয়, বরং নিজের দিদি হিসেবেই দেখি। আমাদের ক্লাবের ফ্লাডলাইট থেকে তাঁবু সংস্কার, সব কিছুতেই উনি সাহায্য করেছেন। যখন উনি আমাকে সময় দিয়েছিলেন, তাঁবু সংস্কার করার ভয় পেয়েছিলাম। আদৌ আসবেন তো! কারণ উনি এতো ব্যস্ত মানুষ। কিন্তু দিদি কথা রাখলেন। ইতিপূর্বে নেতাজি ইন্ডোরে এই ক্লাবের অনুষ্ঠানেও এসেছিলেন। কিন্তু সেই সময় তিনি ক্লাবে আসতে পারেননি। এমন ক্রীড়াপ্রেমী মুখ্যমন্ত্রী আগে কখনও দেখিনি।" মঞ্চে ছিলেন বাগান সচিব ছাড়াও সহ সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় সহ সভাপতি কুণাল ঘোষ, ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি, সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়, প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচাৰ্য এবং মোহনবাগান রত্ন সুব্রত ভট্টাচাৰ্য উপস্থিত ছিলেন।
সবুজ-মেরুনে তৈরি হচ্ছে হেরিটেজ লন। কয়েক মাসের মধ্যেই তৈরি হবে স্পোর্টস লাইব্রেরি। এছাড়াও আগামি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিলিয়ার্ড বোর্ড, টেবিল টেনিস বোর্ড ইত্যাদি নানা ক্রীড়া সরঞ্জাম রাখা হচ্ছে। এ ভাবেই যাতে ক্লাব উন্নতির সিঁড়ি চলতে পারে, তার জন্য রাখী পূর্ণিমার আগে ‘দিদি’ হিসেবে ক্লাবকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদানও ঘোষণা করলেন তিনি।