Surajit Sengupta Passed Away: ৭০-এ থামল লড়াই, বন্ধু সুভাষের কাছে চলে গেলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

Updated By: Feb 17, 2022, 02:49 PM IST
Surajit Sengupta Passed Away: ৭০-এ থামল লড়াই, বন্ধু সুভাষের কাছে চলে গেলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন: অবশেষে থামল লড়াই। জীবন যুদ্ধে হেরে গেলেন সাতের দশকের শিল্পী ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত(Surajit Sengupta)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। রেখে গেলেন স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে স্নিগ্ধদেবকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ১.৫৪ মিনিটে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে(Kolkata Footballer) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান ফুটবলার(Veteran Footballer)। 

গত ২২ জানুয়ারি চিরঘুমে চলে গিয়েছিলেন ১৯৭৫ সালের ৫-০ গোলে জেতা ডার্বি(Derby) জয়ের নায়ক সুভাষ ভৌমিক(Subhas Bhowmick)। পুরোনো সতীর্থকে নিয়ে বাংলার একটি বহুল প্রচলিত সংবাদপত্রে লিখেছিলেন বিশেষ প্রতিবেদন। তখন থেকেই তাঁর শরীরে কোভিড(Covid-19) থাবা বসিয়েছিল। সেই রোগ নিয়েই গত ২৩ জানুয়ারি ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিন প্রধানে খেলা এই প্রাক্তন উইঙ্গার-স্ট্রাইকার(Winger-Striker)। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার জন্যই একাধিক রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করেন সুরজিৎ(Surajit Sengupta)। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তাঁকে ভেন্টিলেশনে(Ventilation) রাখা শুরু হয়েছিল। 

সাতের দশকের শুরুতে খিদিরপুর ক্লাবের জার্সি গায়ে তাঁর কলকাতা ময়দানে(Kolkata Maidan) আবির্ভাব। প্রথম বড় ক্লাব মোহনবাগান(Mohunbagan) হলেও, ১৯৭৪ সালে ইস্টবেঙ্গল(East Bengal) ক্লাবের জার্সি গায়ে চাপিয়ে নেন। এরপর টানা ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন লাল-হলুদ বাহিনীর অপরিহার্য ফুটবলার(Footballer)। তাঁর পায়ের জাদুতে মোহিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গল(East Bengal) সমর্থকরা। শুধু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা নন, আপমর ক্রীড়াপ্রেমী সুরজিৎ সেনগুপ্তর(Surajit Sengupta) পায়ের জাদুতে মোহিত হয়ে পড়েছেন  সাতের দশকে। 

১৯৭৮ সালে তাঁর অধিনায়কত্বে ইস্টবেঙ্গল(East Bengal Captain) যুগ্মভাবে ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন(Federation Cup) হয়েছিল। এছাড়া সেই বছর ইস্টবেঙ্গল জিতেছিল ডুরান্ড কাপ(Durand Cup) এবং বরদলুই ট্রফি। ১৯৭৫ সালে আইএফএ শিল্ডের(IFA Shield) ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে হারিয়ে দেয়। প্রথম গোলটা এসেছিল সুরজিতের পা থেকে। এর পাশাপাশি সেই ম্যাচে আরও দুটি গোলের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত। বরদলুই ট্রফিতে বিদেশি দল পোর্ট অথরিটির(Port Authority) বিরুদ্ধে সুরজিৎ সেনগুপ্তর(Surajit Sengupta) খেলা এখনও ময়দানে আলোচনার বিষয়। বিদেশি দলের বিপক্ষে লাল-হলুদকে জেতানোর জন্য নিজে গোল করার পাশাপাশি সতীর্থ ফুটবলারদের দিয়ে গোল করিয়েছিলেন। 

শুধু লাল হলুদ জার্সি গায়ে নয়, সন্তোষ ট্রফিতে বাংলাকে বেশ কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন করতে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। এমনকি ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে এশিয়ান গেমসে প্রতিনিধিত্ব করার কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। শুধু ফুটবলার হিসেবে নন, একজন তবলা বাদক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী প্রয়াত সুচিত্রা মিত্রের সঙ্গে বেশ কয়েকবার তবলা সঙ্গত করেছিলেন। পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানানোর পর দীর্ঘদিন একটি বাংলা দৈনিকের ক্রীড়া বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুরজিৎ। 

তবে ফুটবলের নিরলস সেবা করে গেলেও পদ্মশ্রী কিংবা অর্জুন পুরস্কার পাননি শিল্পী ফুটবলার সুরজিৎ। এমনকি ২০১৭ সালে ব্যান্ডেলে তাঁর পৈতৃক বাড়ি থেকে খেলোয়াড় জীবনের সব পদক, স্মারক ও সম্মানিক চুরি হয়েছিল। অনেক ঘাম-রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সেই পদকগুলো শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। সেটা নিয়ে মাঝেমধ্যেই অফশোস করতেন সদ্য প্রয়াত। 

সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন থেকে স্বীকৃতি না পেলেও বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলে তাঁর অবদান কখনও ভোলার নয়। শিল্পী ফুটবলার হিসেবে সে ভাবে স্বীকৃতি না পেলেও ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁকে জীবন কৃতি সন্মানে সন্মানিত করেছিল। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলে এক যুগের অবসান হল। তাঁর মৃত্যুতে তিন প্রধানের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। স্বভাবতই তাঁর প্রয়াণে ময়দানে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)            

.