ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাউ হাউ করে কাঁদতাম, বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি পাকিস্তানি ওপেনারের
তিনি কিন্তু তারকার ছেলে নন। তবে তাঁর কাকা নামজাদা ক্রিকেটার। আর তাই তাঁর যত ঝামেলা!
নিজস্ব প্রতিবেদন- নেপোটিজম নিয়ে চারপাশে এখন এত কথা। যে কোনো সেক্টর-এই এই স্বজনপোষণের ব্যাপার রয়েছে। কিন্তু উল্টোদিকে, স্টার কিড হলেও কিন্তু সমস্যা কম নয়। তারকার ছেলে বা মেয়েকে দিন-রাত তাঁর বাবার সঙ্গে তুলনা করা হয়। এমনকী একজন স্টার কিড নিজের প্রতিভা ও যোগ্যতায় ভর করে সাফল্য পেলেও অনেকে বাঁকা চোখে দেখে। লোকজনের মনে সন্দেহ থাকে, সেই ছেলে বা মেয়ের সাফল্যের পিছনে তাঁর বাবার হাত নেই তো! সব সময় বাবা তারকা না হলেও এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই যেমন ধরুন পাকিস্তানের ওপেনার ইমাম উল হকের কথা। তিনি কিন্তু তারকার ছেলে নন। তবে তাঁর কাকা নামজাদা ক্রিকেটার। আর তাই তাঁর যত ঝামেলা!
পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ইনজামাম উল হকের ভাইপো তিনি। ইনজামাম এখন আবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচকও বটে। ফলে ইমামেম সাফল্যে লোকজন সব সময় ইনজামামের প্রভাব খুঁজে বেড়ায়। অনেকেই মনে করেন, ইমাম আহামরি ক্রিকেটার নন। ইনজামামের জন্যই তিনি পাকিস্তান দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। অনেকেই ইমামকে মধ্য মেধার ক্রিকেটার বলে বদনাম করেন। আর এসব কথায় প্রচণ্ড আঘাত পান ইমাম। তিনি এবার মুখ খুললেন এই নিয়ে। একটি বেসরকারি স্পোর্টস চ্যানেলে বাংলার ধারাভাষ্যকার দীপ দাশগুপ্তের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে বসেছিলেন ইমাম। সেখানেই তিনি দাবি করেন, ইনজামামের ভাইপো হওয়ায় তাঁর লাভের থেকে ক্ষতি হয়েছে বেশি। তিনিও এটাও দাবি করেন, পাকিস্তানের জাতীয় দলে তাঁর সুযোগ পাওয়ার পিছনে ইনজির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনও প্রভাব নেই।
আরও পড়ুন- মোষের গায়ে উইকেট আঁকা! ''এখানে আজীবন ব্যাট করা যাবে!'' বলছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকা
২০১৭ সালে পাকিস্তান দলে ডাক পান ইমাম। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে তিনি দলে ডাক পান। তাঁর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে পাকিস্তান পাঁচ ম্যাচের সেই সিরিজ ৩-০ তে পকেটে পুরে ফেলে। কিন্তু ওই সময় ইমামে মনের অবস্থা ভাল ছিল না। ইমাম বলেছেন, "দলে তখন বাবর আজম ছাড়া আমার কোনও বন্ধু ছিল না। কিন্তু বাবরের সঙ্গে তখন বেশি কথা হত না। ও পাকিস্তানের ওয়ান ডে দলে খেলছিল. কিন্তু টেস্টে ওর সময় ভাল যাচ্ছিল না। আমি মোবাইল ঘাঁটতাম না বেশি। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে উল্টোপাল্টা আলোচনা হত। বাড়ির লোককে কিছু বলিনি। ওদের চাপে রাখতে চাইতাম না। ক্রমশ একা হয়ে পড়ছিলাম। আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাউ হাউ করে কাঁদতাম. লোকজন যা খুশি বলত। আমি খালি ভাবতাম, এবার যদি পারফর্ম করতে না পারি তা হলে তো লোকজন আমাকে নিয়ে আরও উল্টোপাল্টা বলবে। ভাবুন, তখনও জাতীয় দলের হয়ে খেলিনি। তার আগেই আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকছিল। আমি মোবাইল বন্ধ করে দলের ম্যানেজারের কাছে জমা করে দিয়েছিলাম। একাই থাকতাম বেশিরভাগ সময়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম।" প্রসঙ্গত পাকিস্তানের হয়ে ৩৭টি ওয়ানডে, ১১টি টেস্ট ও ২টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ইমাম। টেস্টে এখনো সেঞ্চুরি পাননি। ওয়ান ডে তে সাতটি সেঞ্চুরি করেছেন।