ক্রিকেট কুর্সির লড়াই: শ্রীনি বললেন ছাড়ব না, বিরোধীরা এখনও অঙ্কে ব্যস্ত
শ্রীনিবাসনের অবস্থা কি আজ ললিত মোদীর মত হতে চলেছে। ২০১০ সালে তৃতীয় আইপিএলের ফাইনালের পর ঠিক যেরকমভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ললিত মোদীকে, আজ রাতের ফাইনালের পর শ্রীনিবাসনের সঙ্গেও ঠিক তাই হবে না তো। সেদিন মুম্বইতে ফাইনালে পুরস্কার বিতরনের পরই নাটকীয়ভাবে মোদীকে সরানো হয়েছিল। আজ ধীরে ধীরে শ্রীনি বিদায়ের মঞ্চ বাধা হচ্ছে। এই শহরেই সকাল থেকেই চলছে সেই মঞ্চ বাঁধার কাজ। কলকাতায় এখন সব বড় ক্রিকেট রাজনীতিবিদরা এসে পড়েছেন। দেশের সবচেয়ে লোভনীয় কুর্সিতে (মানে বিসিসিআই-এর প্রধান হওয়া) টিকে থাকা, ফিরে আসা, দখল করার লড়াই বুঁদ রাজীনিতিবিদরা।
ছাড়তে পারি, কিন্তু কেন ছাড়ব? গোটা দেশ যখন তাঁর পদত্যাগের প্রহর গুনছে, তখন কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে বসে এমন কথাটাই একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বললেন বিসিসিআই সভাপতি এন শ্রীনিবাসন। সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার বলে দিলেন, "আমি পদত্যাগ করছি না। কারণ আমি কোনও অন্যায় করিনি। আমি আমার কাজ করে যাব। বোর্ডের কেউ আমায় পদত্যাগের কথা বলেনি। শুধু সংবাদমাধ্যমই আমার পদত্যাগের কথা বলেছে।" তবে শ্রীনিকে দেখেই মনেই হল তিনি নিজেও বুঝেছেন যা অন্যায় হচ্ছে তা ঢাকা দেওয়ার উপায় নেই। তাই মাঝে মাঝেই সংবাদমাধ্যমকেই আক্রমণ করে বসলেন।
বিকাল চারটেয় শুরু হওয়া সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুটা যেভাবে করেছিলেন শ্রীনি, শেষটা করলেন অন্যভাবে। শুরুতে বোর্ড সভাপতি বললেন, গত কয়েকটা দিন আমাকে বেশ কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, সেটা বোর্ড প্রধান হিসাবে, বাবা হিসাবে, শ্বশুর হিসাবে। এরপরই অবশ্য শ্রীনি ফিরলেন আইন 'যেমন আছে, তাঁর ফাঁকও আছে' সেই কথাটার দ্বিতীয় অংশে। বললেন, কোনও চাপের মুখে পদত্যাগ করার প্রশ্নই নেই। আমি তো কোনও অন্যায় করিনি। তা ছাড়া সংবাদমাধ্যম ছাড়া আমায় সরে দাঁড়ানোর কথা কেউ একবারও বলেনি। সংবাদমাধ্যম বোর্ডের অংশ নয় তাই পদত্যাগ করার প্রশ্নই উঠছে না। সেইসঙ্গে রুটিন মাফিক কিছু কথা বললেন শ্রীনি। এই যেমন বেটিং, স্পট ফিকিং সম্পর্কে অবগত বোর্ড। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তদন্তের জন্য কমিশন গড়া হচ্ছে, সেই কমিটিতে আমি থাকব না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে গিয়েও শ্রীনির মুখে সেই এক কথা। আমি দোষী নই, তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে, এসব আমায় জিজ্ঞাসা করছেন কেন, এই প্রশ্নের উত্তর দেব না, গোছের উত্তর দিয়ে সময় কাটালেন। আসল প্রশ্নগুলোই এডি়য়ে গেলেন।
সকাল থেকেই অবশ্য জল্পনা ছিল শ্রীনিবাসনের অবস্থা কি আজ ললিত মোদীর মত হতে চলেছে। ২০১০ সালে তৃতীয় আইপিএলের ফাইনালের পর ঠিক যেরকমভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ললিত মোদীকে, আজ রাতের ফাইনালের পর শ্রীনিবাসনের সঙ্গেও ঠিক তাই হবে না তো। সেদিন মুম্বইতে ফাইনালে পুরস্কার বিতরনের পরই নাটকীয়ভাবে মোদীকে সরানো হয়েছিল। আজ ধীরে ধীরে শ্রীনি বিদায়ের মঞ্চ বাধা হচ্ছে। এই শহরেই সকাল থেকেই চলছে সেই মঞ্চ বাঁধার কাজ।
কলকাতায় এখন সব বড় ক্রিকেট রাজনীতিবিদরা এসে পড়েছেন। দেশের সবচেয়ে লোভনীয় কুর্সিতে (মানে বিসিসিআই-এর প্রধান হওয়া) টিকে থাকা, ফিরে আসা, দখল করার লড়াই বুঁদ রাজীনিতিবিদরা। শ্রীনির সর্বনাশে এখনও অনেকেই পৌষমাস মনে করে যে যার মত করে গুটি সাজাতে শুরু করেছিলেন। দুপুর সাড়ে তিনটে অবধি মোট তিন দফার বৈঠক হল। এক একটা মিটিং শেষ হচ্ছে, আর নতুন নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে।
প্রথম দফার মিটিংয়ের পর মনে হচ্ছিল শ্রীনির জেদেরই জয় হচ্ছে, আপাতত টিকে যাচ্ছে শ্রীনি। কিন্তু বোর্ড তাঁর জামাইকে সাসপেন্ড করার পরই আবার সমীকরণ বদলে গেল। বিরোধিরা আবার নতুন উত্সাহে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। তৃতীয় দফার মিটিংয়ের পর আবার অন্য চিত্র। শ্রীনি-র জায়গায় কে আসবেন সেটা নিয়ে হঠাত্ বিতর্ক। শদর পাওয়ার নিজে আবার বোর্ড সভাপতির পদে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠলেন। এতে আবার অন্যদের গোঁসা হল। বিরোধিদের এই অনৈকই এখন শ্রীনিবাসনের বাঁচার একমাত্র পথ।