Rohit Sharma: এবার বিশ্বকাপের দলে তাঁর পছন্দের লোকজনই! অকপট অধিনায়কের বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার
Rohit Sharma On World Cup Squad Selection: বিশ্বকাপে কেমন হবে দল? অধিনায়ক রোহিত শর্মার পছন্দ, অপছন্দের উপর ভিত্তি করেই হয় দলগঠন? এশিয়া কাপে নামার আগে রোহিত একাধিক ইস্যু নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ক্যালেন্ডার বলছে এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) শুরু ৩০ অগস্ট। পাকিস্তানের মুলতানে কাপযুদ্ধের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি পাকিস্তান-নেপাল (Pakistan Vs Nepal)। তবে সবার চোখ ২ সেপ্টেম্বরে। কারণ ওদিনই মাঠে নামছে বাইশ গজের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান (India vs Pakistan)। ফের একবার 'মাদার অফ অল ব্যাটল'। গত ২৩ অগস্ট থেকে বেঙ্গালুরুর আলুরে শুরু হয়েছে জাতীয় শিবির। এনসিএ-তে জড়ো হয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) শিষ্য়রা! সাত দিনের ক্যাম্প শেষ করেই রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) অ্য়ান্ড কোং উড়ে যাবে শ্রীলঙ্কায়। আলুরে ক্য়াপ্টেন রোহিত লম্বা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে। সেই সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন: PIC | Neeraj Chopra: 'ওখানে সই করতে পারব না'! বুদাপেস্টে বিদেশিনীর প্রস্তাব ফিরিয়ে নায়ক নীরজ
বিশ্বকাপের আগে রোহিত নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান?
'আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, আমি কীভাবে নিজেকে রিল্যাক্সড রাখছি। বাইরের কোনও ফ্যাক্টর নিয়ে ভাবিত নই। সেটা ইতিবাচক হোক বা নেতিবাচক। আমি সবটাই বার করে দিতে চাই। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ঠিক যেরকম অসাধারণ মানসিকতার মধ্যে ছিলাম, ওরকম জায়গায় থাকতে চাই। দারুণ প্রস্তুতি নিয়েই নেমেছিলাম মাঠে। ভালো শেপে, ভালো মাইন্ডসেটে ছিলাম। আমি সেটাই ফিরিয়ে আনতে চাই। সেটা করার সময়ও আছে। আমি মনে করার চেষ্টা করছি যে, সেবার বিশ্বকাপের আগে ঠিক কী কী করেছিলাম ক্রিকেটার হিসেবে। সেভাবেই ভাবনা-চিন্তা করছি।' উনিশের বিশ্বকাপে রোহিত পাঁচটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ছিলেন। করেছিলেন ৬৪৮ রান।
রোহিত তাঁর অধিনায়কত্বের উত্তরাধিকারকে কীভাবে দেখেন!
'আমি সেরকম মানুষই নই যে, ভাবব কী উত্তরাধিকার রেখে গেলাম। আমার উত্তরাধিকার মানুষের বিচারাধীন। তারা কথা বলবে। এই নিয়ে আমি ভাবব না। আমি সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে খুব একটা বিশ্বাসী নই। আমার মনে হয় যে মুহূর্তে আছি, সে মুহূর্তটা উপভোগ করার। এর বেশি কিছু ভাবতে চাই না। আমি স্মৃতি তৈরি করতে চাই। সতীর্থদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। যখন যা পাচ্ছি, তা নিয়েই খুশি থাকতে চাই।'
কীভাবে হয় দল নির্বাচন? দল থেকে কেউ বাদ পড়লে তাঁর সঙ্গে কীভাবে কথোপকথন হয়
সেরা কম্বিনেশন বেছে নেওয়ার সময়ে বিভিন্ন কারণে অনেকে বাদ পড়ে যায়। আমি এবং রাহুল ভাই সুযোগ না পাওয়া প্লেয়ারদের সাধ্য মতো বোঝাই যে, কেন তারা দলে নেই। প্রতিবার দল নির্বাচনের পর এবং প্রথম একাদশ ঘোষণার পর আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলি। মুখোমুখি কথোপকথন হয়। ধরে ধরে কথা বলি। বুঝিয়ে বলি কেন তারা নেই। কিছু সময় তাদের জুতোয় আমি নিজে পা গলিয়ে দেখি। ২০১১ বিশ্বকাপে আমাকে নেওয়া হয়নি। হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। আমি এটাই ভেবেছিলাম যে, বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়ার পর আর কী বা থাকতে পারে! মন খারাপ করে ঘরে বসেছিলাম। জানি না এরপর কী হবে।
আমার মনে আছে এরপর যুবরাজ সিং আমাকে ওর ঘরে ডাকে। আমাকে ডিনার করাতে নিয়ে যায়। ও বুঝিয়ে বলেছিল বাদ পড়ার অনুভূতি ঠিক কেমন হয়। যুবরাজ আমাকে বলেছিল যে, আমার সামনে আরও অনেক বছর রয়েছে। এটাই সবচেয়ে বড় ব্য়াপার। এরকম ভাবার কোনও কারণ নেই যে, তুমি আর দলে সুযোগ পাবে না বা বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না। বিশ্বকাপে বাদ পড়ার পরই আমি প্রত্যাবর্তন করি। এভাবেই চলছে তারপর থেকে। দল থেকে বাদ পড়া কোনও ক্রিকেটারকেই, আমাকে বলতে হবে না যে, কেমন লাগে বাদ পড়লে। আমি, কোচেরা এবং নির্বাচকরা যখন দল ঘোষণার আগে বৈঠকে বসি তখন প্রতিপক্ষ, পিচ, আমাদের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা হয়। আমরা একেবারে পারফেক্ট হব না। সেই সম্ভাবনা থেকেই যায়। দিনের শেষে কিছু মানুষ সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা ভুল করতে বাধ্য। আমরা সবসময় ঠিক হতে পারি না। এরকমটা মোটেই নয় যে, আমার পছন্দের বা অপছন্দের ক্রিকেটার রয়েছে কোনও। সেই ভিত্তিতে দল থেকে বাদ পড়ে! অধিনায়কত্ব ব্য়ক্তিগত ভালোলাগা ও মন্দলাগার উপর হয় না। কেউ দল থেকে বাদ পড়লে, তার পিছনে কারণ থাকে। কেউ অভাগা হবেই। আমাদের এখানে কিছু করার নেই।'
অজিত আগরকরের নির্বাচক কমিটি এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করে দিয়েছে। ১৭ সদস্যের শক্তিশালী স্কোয়াড হয়েছে রোহিত শর্মা , শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, কেএল রাহুল, সূর্যকুমার যাদব, তিলক বর্মা, ঈশান কিশান, হার্দিক পাণ্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, শার্দূল ঠাকুর, জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি , মহম্মদ সিরাজ , কুলদীপ যাদব ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। স্ট্যান্ড-বাইতে রয়েছেন সঞ্জু স্যামসন। চোট-আঘাত সারিয়ে দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করেছেন শ্রেয়স-রাহুল। এশিয়া কাপই হচ্ছে ভারতের কাছে বিশ্বকাপের আগে নেট প্র্যাকটিসের প্রকৃত মঞ্চ। আর এই দলটার প্রায় অধিকাংশ ক্রিকেটারই বিশ্বকাপে খেলবেন, তা নিশ্চিন্তে বলা যায়।