দাবার 'খুদে বিস্ময়' কে 'মার্কশিট' দিলেন কলকাতার দুই গ্র্যান্ডমাস্টার
খোদ কলকাতাতেই গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারত প্রজ্ঞানন্দ।
সুমন মজুমদার
ক্রিকেটের দেশে দাবার 'সূর্যোদয়'। 'খুদে বিস্ময়'-এর চোখে ভারতীয় দাবাসমাজ সেই সূর্যোদয়ের ঝলক দেখেছে ইতিমধ্যেই।
বিশ্বজয়ী বিশ্বনাথন আনন্দের পর আবার কোনও দাবাড়ুর মধ্যে অসম্ভব সম্ভাবনা দেখতে শুরু করেছে দেশের দাবামহল। ১২ বছর ১০ মাস ১৩ দিনের রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দের দাবা জ্ঞান ও প্রজ্ঞা বিস্ময় ছড়াচ্ছে দেশজুড়ে। শহরের দুই গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া ও সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়ও তামিলনাড়ুর খুদে দাবাড়ুর কাণ্ডে বিস্মিত।
আরও পড়ুন- ১২ মাসে আট সোনা! বন্দুক হাতে বিশ্বজয় 'বিস্ময়' কন্যার
ইতালিতে গ্রেডাইন ওপেনে গ্র্যান্ডমাস্টার লুকা মরোনিকে হারিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ডমাস্টারের শিরোপা পেয়েছে প্রজ্ঞানন্দ। দেশের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার এখন সে। দিব্যেন্দু বড়ুয়া অবশ্য জানালেন, সুদূর ইতালি নয়, খোদ কলকাতাতেই গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারত প্রজ্ঞানন্দ। গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া বলছিলেন, ''মে মাসে আমার আয়োজিত টুর্নামেন্টে খেলতে আসার কথা ছিল ওর। কিন্তু ততদিনে বিদেশের বিভিন্ন টুর্নামেন্টে প্রজ্ঞানন্দের অংশ নেওয়ার সূচি ঠিক হয়ে ছিল। ফলে ও আর আসতে পারেনি। এখানে আসলে ও ভাল পারফর্ম করতে পারলে কলকাতাতেই ও গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারত। ওর মধ্যে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। আসলে ওর দিদিও দাবা খেলে। ফলে বাড়িতে সব সময় ওরা পরস্পরের সঙ্গে প্র্যাকটিসের সুযোগ পায়। খুব নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে প্রজ্ঞানন্দ। ওর বাবা মা আর কোচ রমেশের অনেক অবদান রয়েছে। আমি ওকে প্রথম দেখেছিলাম ২০১৪-য়। স্কটল্যান্ডে কমনওয়েলথ চেস চ্যাম্পিয়নশিপে। তখন ও আরও ছোট। কিন্তু আমার ওকে সম্ভাবনাময় বলে মনে হয়েছিল। বিশ্বনাথন আনন্দের উত্তরসূরী হিসাবে ওকে দেখতে পাচ্ছি।''
আরও পড়ুন- দেশে ফিরল দাবার 'খুদে বিস্ময়', রাজকীয় সংবর্ধনা
প্রজ্ঞানন্দের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ ভারতের আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন সূর্যশেখরও। বলছিলেন, ''ওর এই উত্থানের পিছনে সব থেকে বেশি অবদান রয়েছে কোচ রমেশের। চেন্নাইয়ে রমেশের 'গুরুকুল' অ্যাকাডেমি থেকে প্রচুর ভাল ভাল প্লেয়ার উঠেছে হালফিলে। আমার সঙ্গে অনেক টুর্নামেন্টে প্রজ্ঞানন্দের দেখা হয়েছে। ও ওএনজিসি থেকে স্কলারশিপ পায়। প্রতিভাবান তো বটেই। তবে ওর আরেকটা বিশেষত্ব রয়েছে। সমবয়সী বাচ্চাদের থেকে ও অনেক বেশি পরিণত। ফলে চাল দেওয়ার ক্ষেত্রে ও অনেক দূরের পরিকল্পনা সেরে রাখতে পারে।