Wrestlers Protest: যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ব্রিজভূষণের পাশে ফের মেরি কমের কমিটি! বিস্ফোরণ ঘটালেন কুস্তিগীররা
এদিকে দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীরদের জোরাল আন্দোলনের জের। শনিবার অর্থাৎ ১৩ মে সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের বিদায়ী কর্তাদের নিষিদ্ধ করল ভারতীয় অলিম্পিক্স অ্যাসোসিয়েশন। এই নিষিদ্ধকরণের জেরে, কুস্তি ফেডারেশনের কোনও সরকারি কাজ বা প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না এই কর্তারা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (Wrestling Federation Of India) বরখাস্ত সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিং (Brij Bhushan Sharan Singh)। তাঁর বিরুদ্ধে সরব দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীর। দিল্লির যন্তরমন্তরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশকে পদক এনে দেওয়া ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat), সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik) ও বজরং পুনিয়ারা (Bajrang Punia)। তবে এবারও সেই ব্রিজভূষণের পাশেই থাকছে মেরি কমের (Mary Kom) নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি। এই কমিটির দাবি, ব্রিজভূষণ নাকি বাবার মতো সম্মানীয় মানুষ! তিনি মহিলাদের হেনস্তা করতেই পারেন না! তাঁর 'স্নেহের স্পর্শ'-কে হেনস্থা বলে ভেবে ভুল করেছেন কুস্তগীররা! এমনটাই দাবি করেছে মেরি কমের কমিটি। এমনকি অভিযোগকারী মহিলা কুস্তিগীরদের বলা হয়েছে, তাঁদের হেনস্তার অডিয়ো এবং ভিডিয়ো প্রমাণ দিতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন কুস্তিগীর একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার দেন। সেখানেই একজন দাবি করেন, "কমিটির এক সদস্য বলেন, ব্রিজভূষণ আসলে বাবার মতো মানুষ। তিনি হয়তো স্নেহের বশেই কুস্তিগিরদের স্পর্শ করেছেন। কিন্তু সেটাকে ভুল বুঝে যৌন হেনস্তা হিসাবে মনে করছে সকলে।" আরও এক প্রথমসারির কুস্তিগীর বলেন, "মেরি কমের কমিটির সদস্যরা হেনস্তার অডিয়ো এবং ভিডিয়ো প্রমাণ চেয়েছেন।
কুস্তিগীররা এখানেই থেমে থাকেননি। তাঁদের অভিযোগ, ভিনেশ ফোগাট-সাক্ষী মালিক শুধুমাত্র মহিলাদের সামনেই যেন তাঁদের বয়ান নেওয়া হয়। কিন্তু সেই অনুরোধকে মান্যতা দেওয়া হয়নি। এছাড়াও বয়ান দিতে যাওয়ার সময়ে কুস্তি ফেডারেশন সভাপতির অনুগামীরা আন্দোলনকারী কুস্তিগীরদের ভয় দেখাচ্ছেন বলেই অভিযোগ। এমনকি বয়ান রেকর্ডের সময়ে একাধিকবার ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে কমিটি সদস্যের বিরুদ্ধে। ফলে ফের একবার মেরি কমের তদন্ত কমিটির কার্যপদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
অন্যদিকে, সোমবারই দিল্লিতে মিছিল করেন আন্দোলনরত কুস্তিগীররা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন ভীম আর্মির নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ। ইতিমধ্যেই কুস্তিগীরদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের প্রতিবাদ এবার যন্তর মন্তরের গণ্ডি পেরিয়ে আরও বড় আকার ধারণ করবে। দেশের নানা প্রান্তেও নানা সংগঠন মহিলা কুস্তিগীরদের সমর্থনে মিছিল করেছেন। যদিও কুস্তিগীরদের দাবি মেনে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি অভিযুক্ত ব্রিজভূষণকে।
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে এক নারীই হয়ে উঠছে পারেন অন্য নারীর সবচেয়ে বড় কণ্ঠস্বর। এই আশা নিয়েই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং নির্মলা সীতারমণ-সহ মোট ৪৩ জন বিজেপি নেত্রীকে চিঠি লিখলেন কুস্তিগীররা। চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, "আমরা, ভারতে মহিলা কুস্তিগির ফেডারেশন সভাপতির যৌন হেনস্তার শিকার। তিনি সভাপতি থাকাকালীন একাধিকবার যৌন নিগ্রহ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর চেষ্টা করা হলে সুবিচার পাওয়া তো দূরস্ত, কুস্তিগিরদের ভবিষ্যৎ শেষ করে দিয়েছেন তিনি। এবার মাথার উপর জল উঠে গিয়েছে। মহিলা কুস্তিগিরদের সম্মান রক্ষার জন্য লড়াই ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।" কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা। সংযুক্ত কিষান মোর্চাও তাঁদের সমর্থনে সুর চড়িয়েছে। কিন্তু তাতেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। এবার এই চিঠিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কী পদক্ষেপ করেন, সেটাই দেখার।