আরামবাগে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মৃত এক, রাজ্যে রাজনৈতিক তরজায় ১২ ঘণ্টায় মৃত ৪
সন্দেশখালিতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের পর তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল আরামবাগের হরিণখোলা। শনিবার রাতে দুই গোষ্ঠীর খণ্ডযুদ্ধে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। মৃত শেখ মোফিজুল স্থানীয় যুবনেতা শেখ লাল্টু খানের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সন্দেশখালিতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের পর তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল আরামবাগের হরিণখোলা। শনিবার রাতে দুই গোষ্ঠীর খণ্ডযুদ্ধে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। মৃত শেখ মোফিজুল স্থানীয় যুবনেতা শেখ লাল্টু খানের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সন্ধ্যায়। ২০১১ সাল থেকেই বিরোধ ছিল যুবনেতা শেখ লাল্টু খান এবং অপর এক নেতা তাইবুল হোসেনের মধ্যে। প্রায়ই লেগে থাকত দুই পক্ষের সংঘর্ষ। নির্বাচনের পর সেই দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। লাল্টু অনুগামীদের অভিযোগ, এদিন সন্ধ্যায় হরিণখোলা বাজারে চায়ের দোকানে বসেছিলেন শেখ মোফিজুল। তখন একা পেয়ে তাঁর উপর চড়াও হয় তাইবুল গোষ্ঠীর লোকজন। প্রথমে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। বেধড়ক মারধরের পর মোফিজুলের মাথায় টাঙ্গির কোপ দেয় দুষ্কৃতীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি সংঘর্ষের দায় নিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই, দাবি মুকুল-কৈলাসের
মোফিজুল অনুগামী তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক বিরোধের জেরে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে মোফিজুলকে। শনিবার ঘটনার পরেই সেখানে পৌঁছয় পুলিস। আটক হন তৃণমূলের দাপুটে নেতা পার্থ হাজারি। রবিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিস। এদিনই পার্থকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে তাঁকে ছয় দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযুক্ত পার্থ হাজারি বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বলেন,"আমি জামাই ষষ্ঠীতে গিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।"
রবিবার শোকের পরিবেশ মৃত শেখ মোফিজুলের বাড়িতে। এদিন মোফিজুলের বাড়ি পৌঁছন আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের দ্বায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা দিলীপ যাদব। ঘটনার নিন্দা করে তিনি বলেন, "অন্যায় সহ্য করা হবে না। কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।"
আরও পড়ুন: 'মুকুল-সায়ন্তনের উস্কানিতেই হামলা, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না,' পাল্টা দাবি 'অভিযুক্ত' শাহাজাহানের
অন্যদিকে, পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত সন্দেশখালির ন্যাজাটের হাটগাজি এলাকা। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে এক তৃণমূল কর্মী ও দুই বিজেপি কর্মীর দেহ। দুই পক্ষেই নিখোজ একাধিক। নিখোঁজদের খোঁজে স্থানীয় ভেড়ি এবং মাছের গাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। আতঙ্কে থমথমে গোটা হাটগাজি এলাকা। উত্তেজনা প্রশমনে বন্ধ রাখা হয়েছে এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা। চলছে পুলিসি টহল। রবিবার ন্যাজাটে যাচ্ছে বিজেপির রাজ্য প্রতিনিধি দল। সেই দলে রয়েছেন, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, জগন্নাথ সরকার, শান্তনু ঠাকুর, অর্জুন সিং, দুলাল বর প্রমুখ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরূদ্ধে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী উস্কানি দিচ্ছেন বাংলায় গন্ডগোল করার জন্য। সন্দেশখালিতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছে আমাদের কর্মীরা। আরও অনেক কর্মী গ্রাম ছাড়া হয়ে গিয়েছে।"