Health and Education: শীতের রোদ গায়ে মেখে দক্ষিণী উল্লাসে মাতল কচিকাঁচার দল
অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের সন্তানদের একটি স্বাভাবিক জীবন দিতে দক্ষিণী প্রয়াস।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সালটা ১৯৯৩। হাতে গোনা কয়েকজন পড়ুয়াকে নিয়ে গাছের নীচে পড়ানো শুরু করেছিলেন নলিনী মুখোপাধ্যায় নামে এক শিক্ষানুরাগী এবং সমাজসেবী। কলকাতার দক্ষিণ-পূর্ব শহরতলিতে শুরু হয়েছিল এই প্রয়াস। তাই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নাম রাখা হয় দক্ষিণী প্রয়াস। দক্ষিণী প্রয়াস। ধীরে ধীরে ছাত্রের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ক্রমশ পাশে পান আরও কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষানুরাগীকে। কয়েক বছর পর এরকমই এক বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী কমল প্রকাশের সহায়তার জমি কিনে নির্মিত হয় সংস্থার নিজস্ব ভবন। শুরু হয় দক্ষিণী প্রয়াসের শিক্ষা শাখা মাদুরদহ সত্যবৃত্তি বিদ্যালয়ের পথ চলা। চার জন ছাত্র বেড়ে আজ তা চারশো ছাড়িয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষালাভের ব্যবস্থা রয়েছে এই স্কুলে। ছাত্রছাত্রীদের তো বটেই, তাদের অভিভাবকদেরও আত্মনির্ভর করার প্রয়াস চালিয়ে চলেছে দক্ষিণী প্রয়াস। লেখাপড়ার পাশাপাশি সেখানে রয়েছে পড়ুয়াদের পড়াশোনা ছাড়াও হাতে কলমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা, পুষ্টিকর খাদ্য, সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল সবই দেওয়া হয় সাধ্যমতো। বর্তমানে এটি মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের সন্তানরা এখানে একটি স্বাভাবিক জীবন পায়। সঙ্গে রয়েছেন দক্ষিণী প্রয়াসের কর্মী, শিক্ষিকা এবং সমাজকর্মীরা। জানালেন দক্ষিণী প্রয়াসের সভাপতি অনুভূতি প্রকাশ।
আরও পড়ুন: Local Train: অফিস টাইমে হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনে ব্যাহত ট্রেন চলাচল, দুর্ভোগে যাত্রীরা
পড়াশোনার পাশাপাশি নজর দেওয়া হয় খেলাধুলো এবং এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিতেও। সম্প্রতি মাদুরদহ সত্যবৃত্তি বিদ্যলয়ের খেলার মাঠে আয়োজন করা হয়েছিল বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এর পোশাকী নাম উল্লাস '২৩। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইতালিয় কনস্যুল জেনারেল ডক্টর জিয়ান লুসা রুবাগোতি। উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণী প্রয়াসের সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবী অনুভূতি প্রকাশ সহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, বাণিজ্য, ক্রীড়াবিভাগের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। আর ছিলেন মাদুরদহ সত্যবৃত্তি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষিকা এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীরা। খেলার প্রতিযোগিতা ছাড়াও মার্চ পাস্ট, অ্যারোবিক্স, ড্রিল ইত্যাদির মাধ্যমে মেতে উঠেছিল কচিকাচার দল। গোটা অনুষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন নিঃস্ব প্রবীণদের নিয়ে গড়ে ওঠা দক্ষিণী প্রয়াসের বিশ্ব আশার সদস্যরা।
আরও পড়ুন: 'শিল্প ধর্ম দ্বারা বিভক্ত নয়!' কঙ্গনা-উর্ফির মধ্যে পাঠান নিয়ে ধুন্ধুমার
দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে দুঃস্থ মানুষের পাশে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণী প্রয়াস। আগামী দিনে নিজেদের কর্মকাণ্ডকে আরও বৃদ্ধি করতে মরিয়া তারা। পাশে চান আরও অনেককে। যাঁরা এভাবে সকলের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন তাঁদের সংস্থায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সভাপতি অনুভূতি প্রকাশ এবং তাঁর সহকারীরা।
www.dakshinipraysh.org ওয়েব সাইটে গেলেই সংস্থার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যাবে। সামাজিক অংশগ্রহণ তো বটেই অর্থনৈতিকভাবে সাহায্যেরও প্রয়োজন তাদের। অর্থ বা সুযোগের অভাবে পিছিয়ে না পড়ে আজকের প্রজন্ম যাতে সময়ের সঙ্গে পা মিলিয়ে এগিয়ে চলতে পারে সেটাই লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।