Nadia: দলীয় পদ নিয়ে দ্বিচারিতার অভিযোগ, দলীয় বৈঠক থেকে পদত্যাগ তৃণমূল নেতার
চলতি মাসের ১২ তারিখ রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের ৮২ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছিল ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকা নেতা পিন্টু সরকারকে। কিন্তু এমন কী ঘটল যে কারণে তাকে জেলা কমিটির সদস্যপদ ছাড়তে হলো?
বিশ্বজিৎ মিত্র: দলীয় পদ নিয়ে দ্বিচারিতা হয়েছে এমনই অভিযোগ এনে বুধবার নদিয়ার রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের দলীয় বৈঠক থেকে পদত্যাগ করলেন তৃণমূল নেতা পিন্টু সরকার। ভরা মিটিং ছেড়ে মাঝপথেই তিনি বেরিয়ে যান। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ঘটনা জোড়া ফুল শিবিরে অস্বস্তি বাড়িয়েছে।
‘আবার এদিনের বৈঠকে দলের সাংগঠনিক জেলার উপদেষ্টা কমিটির অধিকাংশ নেতারাই অনুপস্থিত ছিলেন। এই দলের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। তাড়াতাড়ি এই দল শেষ হয়ে যাবে। নদিয়া দক্ষিণ এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই তারা তাদের অবস্থান বুঝে নেবে’ কটাক্ষ বিজেপির। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে রানাঘাট শহর তৃণমূলের কার্যকারী সভাপতি পদের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিন্টু সরকারকে। ২০০৫ সালে তিনি রানাঘাট শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পান। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রানাঘাট শহর সহ সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
চলতি মাসের ১২ তারিখ রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের ৮২ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছিল ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকা নেতা পিন্টু সরকারকে। কিন্তু এমন কী ঘটল যে কারণে তাকে জেলা কমিটির সদস্যপদ ছাড়তে হলো?
আরও পড়ুন: Bengal Weather Today: বৃহস্পতিবারও তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা, রবিবার থেকে বৃষ্টি হতে পারে কলকাতায়
পিন্টু সরকার জানান, ‘আমি দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১৯৯৮ সালে আনন্দমোহন বিশ্বাসের হাত ধরে আমার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে পথচলা শুরু। দলের বিভিন্ন পদে যখন যেমন দায়িত্ব দিয়েছিল, আমি সেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন শুধুমাত্র জেলা কমিটির একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে আমাকে রাখা হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার চিৎকার করে বলছেন পুরনো দের দলে গুরুদায়িত্ব দেওয়া হবে। আমার মনে হচ্ছে, রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করা হয়েছে। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের ছিলাম। আগামী দিনেও তৃণমূল কংগ্রেসের আছি। দলের একজন কর্মী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করব। মূলত পদ নিয়ে দ্বিচারিতার কারণেই আমি জেলা কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছি’।
পদত্যাগ প্রসঙ্গে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘একটি পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন এবং সেই পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণও করা হয়েছে। এছাড়া জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপদেষ্টা মন্ডলীর যারা উপস্থিত হননি, তারা অনেকেই দলীয় কাজে ব্যস্ত রয়েছেন বলে এই দলীয় বৈঠকে হাজির থাকতে পারেননি’।
আরও পড়ুন: Paschim Medinipore: বিকেল হলেই সেলাইন খুলে হাতে চ্যানেল নিয়ে রাস্তায় বসে রোগী, কিন্তু কেন?
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতার পদত্যাগ প্রসঙ্গে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি আশীষ বরণ উকিল কটাক্ষ করে বলেন, ‘এটা নতুন কিছু নয়। পিন্টু সরকার পদত্যাগ করেছে। এই রকম কত পিন্টু সরকার চলে যাবে দুই একদিনের মধ্যে। সদ্য নতুন কমিটি হয়েছে, এখান থেকে পদত্যাগ করেছেন। তৃণমূলের মধ্যে খেয়োখেয়ির লড়াই। কোনও নীতি আদর্শ নেই। তৃণমূল কংগ্রেস দলটা হল ক্ষমতা দখল করো, কাঠমানি খাও, যারা যেখানে কম্পিটিশনের টিকে থাকতে পারবে তারাই খাবে। এ দলের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। তাড়াতাড়ি এ দল শেষ হয়ে যাবে। যদিও নদিয়া দক্ষিণ এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই তারা তাদের অবস্থান বুঝে নেবে’।