Gangasagar Mela| Mamata Banerjee: বাংলাদেশে আমাদের মত্সজীবীদের মারধর করা হয়েছে, গঙ্গাসাগরে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী
Gangasagar Mela| Mamata Banerjee: ওঁদের একটি ট্রলার এখানে চলে আসে। অনেকসময় জলের মধ্যে সীমানা ঠিক করা যায় না। পথ হারিয়ে যায়। কিন্তু আমরা নিষেধ করব, কখনওই আমাদের সীমানার বাইরে যাবেন না
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলাদেশের জেল থেকে ঘরে ফিরছেন বাংলার ৯৫ মত্সজীবী। তাদের উপরে জেলে অত্যাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি দেখতে সেখানে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বক্তব্য রাখার সময় তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন-বাংলাদেশে ফিরতেই হচ্ছে এবার! হাসিনা-সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল যখন মত্সজীবীরা হারিয়ে গেলে, জেলে থাকলে বা হারিয়ে গেলে কেউ কোনও খবর রাখত না। কিন্তু আমাদের সরকার আসার পরে আমরা ওদের একাট আইডি কার্ড দিয়েছি। ওই কার্ডের গুরুত্ব হল, মাছ ধরতে গিয়ে কেউ যদি হারিয়ে যায়, অন্য কোথায় চলে যায় তাহলে তাদের ট্র্যাক করতে পারি। ওই কার্ডের ফলেই আমরা জানতে পারি বাংলার ওইসব মত্জীবীরা বাংলাদেশের সীমানায় চলে গিয়েছে। আমরা খবর নিতে শুরু করি। তখন জানতে পারি ওদের আটক করে রাখা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যোগাযোগ শুরু করি। আমার এটা বলা উচিত হবে না বলে বলছি না, একটা লোক যখন পুলিস স্টেশন থেকে অন্তত যেন জেলে থাকতে পারে তার ব্যবস্থা করেছিলাম আইনের সাহায্যে।
বাংলাদেশ ফেরত মত্সজীবীদের উদ্দেশ্য়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা যারা ফিরে এসেছেন তাদের পরিবারের মানুষদের মুখে হাসি ফুটেছে। যতক্ষণ আপনারা ফিরে না আসছিলেন, আপনাদের মুখগুলো ওদের দেখতে না পাচ্ছিল ততক্ষণ ওরা গভীর চিন্তায় ছিল। একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ছিল। আজ ওরা ফিরে এসেছেন। এবার বাড়ি ফিরে যাবেন। একজন জলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। মারা গিয়েছেন। তার পরিবারকে আমরা ২ লাখ টাকা তুলে দিলাম। আর আমার ৯৫ জন ভাই যাদের অনেক কষ্টে আমরা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। আমি এটা জানতাম না, কয়েকজন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন কেন? তারা বলতে চায়নি। জানতে পারলাম তাদের কয়েকজনকে মারধরও করা হয়েছে। তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। ফলে কয়েকজনের শারীরিক চোট হয়েছে। জামা কাপড় পরে রয়েছে বলে বোঝা যাচ্ছিল না। ওরা কাঁদছিল বলে বুঝতে পারলাম। ডিএমকে বলব ওদের ভালোভাবে চিকিত্সার ব্যবস্থা করে দেবে।
বাংলাদেশি মত্সজীবীদের ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওঁদের একটি ট্রলার এখানে চলে আসে। অনেকসময় জলের মধ্যে সীমানা ঠিক করা যায় না। পথ হারিয়ে যায়। কিন্তু আমরা নিষেধ করব, কখনওই আমাদের সীমানার বাইরে যাবেন না। তাতে জীবন বাঁচবে। জীবন বেঁচে থাকলে অনেক মাছ উঠবে। এই যে দুমাস জেলে ছিলেন তাদের তাতে আপনাদের পরিবারের, আপানাদের কষ্ঠ হয়নি? অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশি ট্রলার আমাদের এখানে চলে এসেছিল। তাদের আমরা ভালো করে রেখেছিলাম। তাদের চিকিত্সা করেছিলাম। তাদের ফেরতও দিয়েছি। দুদেশই মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ থাক আমরা চাই। ওদের ট্রলার আটকে ছিল, আমরা সাহায্য করলাম। যাতে দেশের কোনও বদনাম না হয়। আমরা বিষয়টি ভারত সরকারকে জানিয়েছিলাম। নিজেরাও কথা বলেছিলাম। রোজ আমরা খবর রাখতাম। তার পরেই দুদেশের মধ্যে একটা আদানপ্রদান হয়। বাংলাদেশের যারা ছিল তাদের আমরা হ্যান্ডওভার করে দিই। ওরাও আমাদের মত্সজীবীদের ফেরত দেয়।
রাজ্যের মত্সজীবীদের জন্য একটি মত্সজীবী প্রকল্প চালু করছি। যাতে কোনও মত্সজীবীর মৃত্য়ুর পর তাতে ২ লাখ টাকা দেওয়া যায়। ইতিমধ্যেই ২০০ পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। আজও এখান থেকে একজনকে দেওয়া হল। ৬০ বছরের বেশি বয়সী মত্সজীবীকে ১ হাজার টাকা দেওয়া হবে। মত্সজীবীদের লোনের জন্য ক্রেডিট কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)