Thunderstorm Lightning Death: প্রথম কালবৈশাখিই কালান্তক! বাংলায় বজ্রাঘাতে মৃত ১৫...
তীব্র গরম থেকে রেহাই পেয়েছে রাজ্যবাসী। তবে বৃহস্পতিবারের ঝড়-বৃষ্টির প্রকোপে জেলায় বহু মৃত্যু ঘটেছে। বজ্রপাতে বিভিন্ন জেলায় মৃত্যু হয়েছে সাধারণের। আহতও অনেকে। পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুরে ও হাওড়া, মুর্শিদাবাদ জেলায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিপাতের পর জেলায় জেলায় বজ্রপাতে প্রাণহানির খবর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বজ্রপাতে মৃত ২, আহত ১। শালবনিতে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বপন ভূঁইয়া নামে এক ব্যাক্তির। চন্দ্রকোনায় তাপস পাতর নামে এক ব্যাক্তির মৃত্যুর পর বাজ পড়ে আবারও গুরুতর আহত এক মহিলা। চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই মহিলা। এমনই ঘটনাটি ঘটেছে চন্দ্রকোনা থানার নীলগঞ্জ গ্রামে। আহত মহিলার নাম সম্বরি হেমব্রম(৪২),বাড়ি চন্দ্রকোনার নীলগঞ্জ গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, বিকেল নাগাদ বাড়ির সামনে থাকা ছাগলের দড়ি খুলে গোয়ালঘরে আনার সময় হঠাৎই বজ্রপাত হয়। তাতেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান ওই মহিলা। তাঁকে উদ্ধার করে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই মহিলা। দুপুর থেকে একনাগাড়ে বজ্রপাতে চন্দ্রকোনার যাদবনগর গ্রামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার কিছু পরেই ফের বজ্রপাতে এক মহিলার আহত হওয়ার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য চন্দ্রকোনায়।
পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের বেলেন্ডা গ্রামে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মাঠ থেকে ধান আনার সময় মাঠেই বজ্রপাতে মারা গেলেন মনসুর আলী শেখ। মাঠে বোরো ধান আনছিলেন, সে সময় বজ্রপাতে মারা যান তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাবা শেখ আজগর। তিনি জানান যে, আমরা তিন ফুট দূরত্বে ছিলাম। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চমকালো, আর বিকট আওয়াজ। আমার মাথা ঘুরে গেল। চোখ খুলতেই দেখি আমার ছেলে মাঠের জমিতে পড়ে রয়েছে। গায়ে হাত দিতেই দেখি ছেলে আমার নেই। খবর আসতেই গ্রামে শোকের ছায়া। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে ভাতার থানায়।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে বজ্রাঘাতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালে ৪ জন,আহত ১। ভাতারের ঘটনা ছাড়া কালনা মহকুমাতেও বজ্রাঘাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম খোকন সেখ (৪০)। বাড়ি কালনা ১ ব্লকের কালিনগর পশ্চিমপাড়া এলাকায়। এছাড়াও এদিন খণ্ডঘোষের তোরকোনার বাসিন্দা বাসুদেব রায় (৫২)-এর মৃত্যু হয়েছে বজ্রাঘাতে। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এদিন মাঠ থেকে ধান কেটে তোলার কাজ করছিলেন বাসুদেববাবু। সেই সময় বজ্রাঘাতে তিনি জখম হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, এদিন বজ্রাঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন বর্ধমান থানার নতুনগ্রামের বাসিন্দা মফুজা বেগম (৩৫)। তিনিও মাঠ থেকে ধান তোলার কাজ করছিলেন। বজ্রাঘাতে তিনি গুরুতর জখম হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে, মঙ্গলকোটের জাঁহাপুর গ্রামের বাসিন্দা আপাল লোহারের (৪১) মৃত্যু হয়েছে এদিন বজ্রাঘাতে। পূর্ব বর্ধমান জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতর সূত্রে জানা গেছে, এদিন বিকাল পর্যন্ত জেলায় ৪ জনের বজ্রাঘাতে মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন একজন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এখনও পর্যন্ত বজ্রাঘাতে মৃত ৩, আহত ৪। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুর-২ ব্লকের কাগ্রাম এলাকার বাসিন্দা হাবিব শেখ (২৪) এবং নেকবস শেখ (২৬)-এর মৃত্যু হয় বজ্রপাতে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুপুরে মাঠে কাজ করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময়েই প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। বজ্রপাতে জখম হওয়ার পর তাঁদের সালার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এমনকী মৃত্যু হয়েছে হেলু শেখ, আমিনুর শেখ এবং হেরু শেখ নামে তিন ব্যক্তিও। সামসেরগঞ্জের লক্ষ্মীনগরে নৌকোয় মাছ ধরে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় সালাউদ্দিন শেখ (২১) নামে এক যুবকের। গুরুতর জখম হন আরও তিন জন।
হাওড়া গ্রামীন এলাকায় আমতা ও বাগনানে বাজ পড়ে মৃত ৩, আহত ৩। বৃহস্পতিবার বিকেলে আমতা ও বাগনানে বাজ পড়ে মৃত্যু হল তিনজনের। বাজ পড়ার ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ জন। আহতরা আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃতেরা হল আমতা থানার শেরপুরের বাসিন্দা মহানন্দ ঘুকু (৫৩), আমতা থানার মিল্কিচক ধুনুড়িপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ ইসমাইল (৩৭) এবং বাগনান থানার বাকসি দেউলগ্রাম ছিলামপাড়ার বাসিন্দা জুলফিকার হোসেন (২২)। পুলিস মৃতদেহগুলি ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে।
ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে বাজ পড়ে মৃত এক মহিলা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘর বাড়ি সহ ফষলের। মাঠে কৃষিকাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় সময় হঠাৎ বজ্র বিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হয়। বাজ পড়ে মাঠেই লুটিয়ে পড়ে ওই মহিলা তাকে উদ্ধার করে মানিকপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ফসল বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হল দুই কৃষকের। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে হাবরা থানার অন্তর্গত মসলন্দপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সালতিয়া এলাকায়। মৃত দুই কৃষকের নাম মিলন বিশ্বাস ও ধীরাজ শর্মা। মৃত এই দুই কৃষকের বাড়ি বেরগুম দু'নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর পালপাড়া এলাকায়।
আরও পড়ুন, BJP North Bengal Strike: বাস ভাঙচুর! পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, উত্তরবঙ্গে বিজেপির বনধ ঘিরে অশান্তি