Canning: স্ত্রীকে সৎকারেরও অর্থ নেই, মৃতদেহ নিয়ে হুতাশ স্বামীর! সাহায্যের হাত বাড়ালেন পুলিস-স্থানীয় মানুষ

 রাঁচীর বীণা দেবী ঢাকুরিয়া এলাকায় কোনও এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতেন। অশান্তির কারণে আত্মহত্যা করার জন্য রেললাইনে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছিলেন। মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন অসিত রঞ্জন। এরপর দুজনের মন দেওয়া নেওয়া। কেউ কারোর হাত আর ছাড়েননি।

Updated By: Apr 30, 2024, 10:12 AM IST
Canning: স্ত্রীকে সৎকারেরও অর্থ নেই, মৃতদেহ নিয়ে হুতাশ স্বামীর! সাহায্যের হাত বাড়ালেন পুলিস-স্থানীয় মানুষ
নিজস্ব ছবি

প্রসেনজিৎ সর্দার: দীর্ঘদিন রোগশয্যায় চিকিৎসা চলছিল। অবশেষে রাতে মৃত্যু হয় বছর ৫০ বয়সের বীণা দাসের। হাসপাতাল থেকে সঠিক সময়ে মৃতদেহ বাড়ির লোকের হাতে তুলে দিতে গেলে সমস্যা তৈরী হয়। কারণ স্ত্রীর মরদেহ সৎকারের কোনও ক্ষমতা নেই স্বামী অসিত রঞ্জন দাসের। অসিত বাবুর কোনও আত্মীয়-বন্ধুবান্ধব,সন্তান নেই। এমনকি অর্থনৈতিকভাবেও তিনি অক্ষম। স্ত্রীর দেহ নিয়ে কী করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না। রাতেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আরও পড়ুন, Dilip Ghosh: 'শাহজাহানদের টাকা কালীঘাট পর্যন্ত গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এরপর ভিখারির দশা হবে'

এরপর সমস্যা সমাধানের এগিয়ে যায় স্থানীয় মানুষ এবং সাংবাদিক সুভাষ চন্দ্র দাস ও বান্টী মুখোপাধ্যায়। ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষকে ঘটনার কথা জানান তারা। তিনিও এগিয়ে আসেন। এগিয়ে আসেন হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী নন্তু দাস, সিভিক ভলেন্টিয়ার তাপস বিশ্বাস, সমাজসেবী প্রভাকর দাস, পবিত্র মন্ডল, শ্মশানবন্ধু গোবিন্দ  সরদার ও গোপাল সরদার। পূর্ণ মর্যাদায় বীণা দেবীর মৃতদেহ রাত প্রায়  ১২টা নাগাদ ক্যানিংয়ের বৈতরণী শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সৎকার করা হয় বীণা দেবীর দেহ। স্ত্রী-র শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন অসিত রঞ্জন দাস।

জানা গিয়েছ, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের টাকি থানার ইটাহার গ্রামে জন্ম। তিন ভাই পাঁচ বোন। অভাবের সংসার। কলকাতায় চলে আসেন। অর্থনৈতিক অভাব অনটনের জন্য ১৯৭৬ সালে স্নাতক স্তরের ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়া হয়নি, যবনিকাপাত ঘটে পড়াশোনায়। এরপর ঢাকুরিয়া এলাকায় ফুটপাথে বই দোকান করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করে। রাঁচীর বীণা দেবী ঢাকুরিয়া এলাকায় কোনও এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতেন। অশান্তির কারণে আত্মহত্যা করার জন্য রেললাইনে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছিলেন। মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন অসিত রঞ্জন। এরপর দুজনের মন দেওয়া নেওয়া। কেউ কারোর হাত আর ছাড়েননি।

বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। শুরু হয় দাম্পত্য জীবন। সংসার চালানোর তাগিদে দিনমজুরের কাজ শুরু করেন। সাংসারিক খরচ বাঁচাতে দম্পতি বারুইপুরের পিয়ালীতে একটি ভাড়া বাড়িতে চলে আসে। দিব্যি চলছিল। আচমকা ২০১৮ সালে কলকায় দুটি বাসের রেষারেষিতে অসিতের দুটি পা প্রায় অকেজো হয়ে যায়। বীণা দেবীর প্রচেষ্টায় প্রায় সুস্থ হয়ে ওঠে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। এরপর ওই ২০১৮ সালে আবারও বিপদ আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন বীণা দেবী। স্ত্রীকে ভালো করার চেষ্টা করেন অসিত বাবু। কিন্তু  গত একমাস আগে ব্রেন স্ট্রোক হয়।

চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। শেষ হয় দম্পতির বেঁচে থাকার লড়াই। মৃত্যু হয় বীণা দেবীর। স্ত্রীর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হতেই চোখের জল ফেলতে ফেলতে অসিত জানিয়েছেন, ‘জানি না কী অপরাধ করেছিলাম ,যাকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়েছিলাম, তাকেই কেড়ে নিল বিধাতা!'

আরও পড়ুন, Bengal Weather Today: স্বস্তির বৃষ্টির পূর্বাভাস, কবে ভিজবে রাজ্য? ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহের মাঝেই বড় আপডেট

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.