Manglahaat Fire: মঙ্গলাহাট অগ্নিকাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ; ব্যবসায়ীদের আশ্বাস, একুশের সমাবেশ থেকেই হাওড়ায় মমতা
Manglahaat Fire: ব্যবসায়ীদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের দোকান চাই। যে জায়গায় দোকান ছিল সেই জায়গাতেই দোকান চাই। অন্য কোথাও নয়। সামনেই দুর্গাপুজো। তাই জায়গা ছাড়া যাবে না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দেন তাদের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।
দেবব্রত ঘোষ ও রণয় তেওয়ারি: ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে হাওড়ায় আগুন ভষ্মীভূত মঙ্গলাহাটে চলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে কাছে পেয়ে ব্যবসায়ীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন আগুন লাগানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখবে সিআইডি। পাশাপাশি একটি টিম ও হাওড়া পুলিস কমিশনারেট বারবার আগুন লাগার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। পাশাপাশি মঙ্গলাহাটের জমি নিয়ে হওয়া সমস্যাও মেটানো হবে।
আরও পড়ুন-বকেয়া আদায়ের দাবিতে বিজেপি নেতাদের বাড়ি 'গণ ঘেরাও কর্মসূচি' ঘোষণা অভিষেকের
বৃহস্পতিবার রাতে এক বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে যায় হওড়ার মঙ্গলাহাটের এক বড় অংশ। শুক্রবার সেই হাট পরিদর্শনে গিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন অরূপ রায়। তাঁরা অভিযোগ করেন ওই হাট থেকে নিয়মিত তোলা তোলা হয়। শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অরূপ রায়কে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলাহাটে গেলে ব্যবসায়ীদের কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন, কেউ তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন।
এদিন মমতা বলেন, যারা পজিশনে রয়েছেন তাদের বিষয়টি ডিএমকে বলেছি খতিয়ে দেখতে। একটি টিম আগুন লাগার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। সেই টিমে অরূপ রায় থাকবেন, ফায়ার ব্রিগেডের লোক থাকবেন, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের লোকও থাকবেন, পুলিসের একজন থাকবেন। এরা দেখবেন, বারবার আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা। এখানে ব্যবসার সঙ্গে বহু গরিব মানুষ জড়িত। আমি ২-৩ প্রস্তাব দিয়েছি। এনিয়ে সবাইকে একমত হতে হবে। যদি দেখা যায় জমিটা আমাদের জায়গায় তাহলে বিল্ডিং বানিয়ে দেওয়া যেতে পারে। যদি দেখা যায় লিজ নিয়ে তা রিনিউ করা হয়নি তাহলে তা আমরা রিনিউ করে দেব। আবার সাঁতরাগাছি বাইপাসের কাছেও জমির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মমতার ওই কথা শুনে ব্যবসায়ীরা বলে ওঠেন, ওখানে আমরা যাব। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন , বারবার আগুন লাগছে। আপনারা এফআইআর করুন। পুলিস ব্যবস্থা নেবে। এত লোকের ব্যবসা রয়েছে এখানে, সিআইডি তদন্ত করে দেখবে। তবে এর মধ্যে চক্রান্তের কিছু দেখতে পাচ্ছি না। টাকা তোলার অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।
মঙ্গলাহাটের জমি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হাটের এই জমি কার, জমির মালিকের সঙ্গে কথা বলা হবে। কিম্বা সরকার নিজে জমিটা টেকওভার করে ব্যবসায়ীদের জন্য দোকান বানিয়ে দেওয়া হবে। চাইলে ব্যবসায়ীরা সরকারের 'ভবিষ্যত' নামে যে স্কিমটা রয়েছে সেখান থেকেও ৫ লাখ টাকা নিতে পারেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের দোকান চাই। যে জায়গায় দোকান ছিল সেই জায়গাতেই দোকান চাই। অন্য কোথাও নয়। সামনেই দুর্গাপুজো। তাই জায়গা ছাড়া যাবে না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দেন তাদের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।
এদিকে, হাওড়া মঙ্গলাহাটের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। আজ দুপুরে বিজেপির হাওড়া জেলা সদরের সভাপতি মনিমোহন ভট্টাচার্য এর নেতৃত্বে একদল বিজেপি নেতা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বিজেপি রাজ্য সম্পাদক উমেশ রায়ের অভিযোগ, এই হাটে ব্যবসায়ীদের থেকে মোটা টাকা তোলা তোলা হয়। যদিও ব্যবসায়ীদের কোন স্বার্থ দেখা হয় না। এই হাটে কোন অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। যার ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়। এর পাশাপাশি তাদের ব্যবসা করার জায়গা দিতে হবে বলেও দাবি করা হয়। বিজেপির হাওড়া জেলা সদরের সভাপতি মনিমোহন ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন মঙ্গলাহাটের বেচাকেনার দিন বদল করা হচ্ছে। এই হাটকে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।
বিজেপির ওই অভিযোগ উড়িয়ে সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় জানান পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। কোনো অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেবে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জেলা শাসকের সাথে আলোচনা করা হবে। আজ দুপুরে ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে সি আই ডি বোম্ব স্কোয়াডের আধিকারিকরা।ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে।