Ghost Station: গভীর রাতে রেললাইনে ভূত খুঁজতে এলেন খোদ সরকারি আধিকারিক!
অশরীরী আত্মার উপস্থিতিতে কাঁটা গ্রামবাসীরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রেলের সঙ্গে ভূতের যোগ আজকের নয়। দেশ-বিদেশের খ্যাত-অখ্যাত কত কত রেল স্টেশন যে আছে এরকম, তার ইয়ত্তা নেই, যেখানে রেলট্র্যাকে বা রেল স্টেশনে ভূতের অস্তিত্ব 'খুঁজে পেয়েছেন' এলাকাবাসী। কোথাও রাতে প্ল্যাটফর্মে কোনও নারী-অবয়ব হেঁটে বেড়ায়, কোথাও আবার রেললাইন ধরে কেউ হনহন করে হেঁটে গিয়ে বাতাসে মিলিয়ে যায়, কোথাও-বা টিকিট কাউন্টারে টিকিট পাঞ্চিংয়ের শব্দ শোনা যায় অথচ ভেতরে কাউকে দেখতে পাওয়া যায় না!
মুখে-মুখে এই সব কথা ও কাহিনি ছড়িয়ে পড়ে সংশ্লিষ্ট জায়গাটি নিয়ে রহস্য ক্রমশ আরও ঘনীভূত করে তোলে। বিষয়টি নিয়ে এক শ্রেণির মানুষের মনে অনর্থক ভয় ও আতঙ্ক দানা বাঁধে। হাতের কাছে এরকম সব চেয়ে পরিচিত উদাহরণ হল বেগুনকোদর। পুরুলিয়ার বেগুনকোদর স্টেশন নিয়ে এই ভূতুড়ে মিথ তথা মিথ্যা তথা রহস্যের অনুভব নিয়ে এবং রহস্যভেদের আগ্রহ নিয়ে বহু দিন থেকে বহু মানুষ উদগ্রীব।
সম্ভবত সেই তালিকাতেই নতুন করে যোগ হতে চলেছে জলপাইগুড়ি ময়নাগুড়ির দোমোহনী দক্ষিণ মওয়ামারী গ্রাম-সংলগ্ন রেলপথ। ময়নাগুড়ির দোমোহনী দক্ষিণ মওয়ামারী গ্রামে রেল দুর্ঘটনার পরে সেখানে নাকি অশরীরী আত্মা তাণ্ডব করে বেড়াচ্ছে বলে মত স্থানীয়দের! প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি দোমোহনীর কাছে লাইনচ্যুত হয় বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসে । এই দুর্ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
কী রকম ভূতুড়ে তাণ্ডব?
স্থানীয়দের মত-- দুর্ঘটনাস্থলে এখনও রেলের যে ক'টি কামরা পড়ে রয়েছে, সেখান থেকে নাকি ভেসে আসছে চিৎকারের আওয়াজ! আর এর সত্যতা যাচাই করতেই গভীর রাতে ঘটনাস্থলে যান ময়নাগুড়ি ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শুভ্র নন্দী।
কিন্তু কোথায় ভূত? কোথায় চিৎকার? কোনও কিছুই এদিন রাতে শোনা গেল না, বা দেখা গেল না। তা হলে কি এটা গ্রামবাসীদের নিছক মনের ভুল? কিন্তু গ্রামবাসীরা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কেন তাঁরা ভয় পাচ্ছেন? গ্রামবাসীরা বলছেন, রেল দুর্ঘটনার পর রাতে রেলের কামরায় নিহতদের আত্মার চিৎকার শোনা যাচ্ছে। রাত হলেই নাকি শোনা যায়-- 'বাঁচাও! বাঁচাও!'
যুক্তিতর্ক অনেকই থাকতে পারে, তবে ময়নাগুড়ি ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বলেছেন, ভূত বলে কিছু নেই, এটা মানুষের মনের একটা ভুল।
ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের মতে, ভূত এখানে নেই। তা সত্ত্বেও কেন গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্কও ছড়িয়েছে, এ বিষয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, চোখের সামনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা দেখে তাঁরা আতঙ্কিত। সেটা তাঁদের মনে ভয়ের সঞ্চার করেছে। তবে ধীরে ধীরে এটা কেটে যাবে বলে মত তাঁর। এ ব্যাপারে ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ঝুলন সান্যাল বলেন, ভূতের কোনও অস্তিত্বই নেই এখানে, এটা গ্রামবাসীদের ভ্রান্ত ধারণা।
অন্য দিকে, বিজ্ঞান মঞ্চের এক প্রতিনিধি বলেন, ভূত বলে কিছু আছে বলে আমরা মনে করি না। ভূত নিয়ে যে গ্রামবাসীরা ভয় পাচ্ছেন বা আতঙ্কে আছেন, তা নিছকই গ্রামবাসীদের ভ্রান্ত ধারণা। তবে এত বড় একটা ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে এলাকায়। সেটা থেকে তাঁদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হতেই পারে।
যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের কর্মীরাও দাবি করেছেন, নাহ্, এখানে সত্যিই রহস্যের কিছু রয়েছে!