Gangarampur Murder: ঘর থেকে উধাও বৃদ্ধ, খুনের পর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি নাতির!
প্রতিবেশীদের চাপে পড়ে রবিবার থানায় দাদুর নিখোঁজের ডায়েরি করে অমরেশ। পাড়ার লোকের দাবি, শনিবার থেকে সময় যত গড়াতে থাকে ততই অমরেশ ও তার স্ত্রীর আচরণে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়
শ্রীকান্ত ঠাকুর: একমাত্র নাতিকে বড় করেছিলেন। সেই নাতি ও তার বউয়ের সঙ্গেই থাকতেন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার ভগবানপাড়া এলাকার বাসিন্দা গৌরলাল সরকার। বয়স প্রায় ৮৫। বেশ কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। গত শনিবার থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিবেশীরা গৌরলালের কথা জিজ্ঞাসা করেও কোনও সদুত্তর পাচ্ছিলেন না নাতি-নাতবউয়ের কাছে থেকে। শেষপর্যন্ত পুলিসের হস্তক্ষেপে বেরিয়ে এল ভয়ঙ্কর তথ্য।
আরও পড়ুন-নিলামে বিক্রি হয়ে গেল বিখ্যাত বলটি! অর্থের পরিমাণ শুনলে মাথা ঘুরে যাবে
গৌরলাল সরকারের দেখা না পাওয়াতে তাঁর নাতি অমরেশ ও তার স্ত্রী প্রমীলাকে বারবার এনিয়ে জিজ্ঞাসা করতে থাকেন প্রতিবেশীরা। গৌরলাল সরকারের এক প্রতিবেশী সংবাদমাধ্যমে জানান, শুনতে পেলাম শনিবার অমরেশ ও তার স্ত্রী বল্লার মেলায় গিয়েছে। পরদিন বিকেলে দেখি পাড়ার দুটো ছেলে দৌড়ে যাচ্ছে গৌরলালের বাড়ির দিকে। ওদের জিজ্ঞাসা করতে ওরা বলল, এ বাড়ির দাদু হারিয়ে গিয়েছে। তখন অমরেশকে জিজ্ঞাসা করলে ও বলে দাদুকে রেখে মেলায় গিয়েছিলাম। খাওয়ার ব্যবস্থা করে গিয়েছি। দরজায় একটা পাথর বেঁধে গিয়েছিলাম যাতে বেরিয়ে না চলে যেতে পারে। ওর স্ত্রী বলে রান্না ঘরে খাবার রাখা ছিল। তখনই সন্দেহ হয়। রান্না ঘরে যদি খাবার থাকে তাহলে ঘরের দরজায় পাথর কেন? কীভাবে সে দরজা খুলে খাবার খাবে? অমরেশকে বললাম তোর দাদু কোথায় বের কর। এরপর গ্রাম থেকে সবাই মিলে থানায় একটা দরখাস্ত করি। পুলিস এসে অনেক খুঁজেও পায়নি। পরে আজ সকালে অমরেশের বাড়ির পেছন থেকে গৌরলালের লাশ উদ্ধার করে। ওরা দুজনই দাদুকে মেরে ফেলেছে।
পুলিস সূত্রে খবর, প্রতিবেশীদের চাপে পড়ে রবিবার থানায় দাদুর নিখোঁজের ডায়েরি করে অমরেশ। পাড়ার লোকের দাবি, শনিবার থেকে সময় যত গড়াতে থাকে ততই অমরেশ ও তার স্ত্রীর আচরণে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এরপরই গ্রামের লোকজন মিলে বুধবার থানায় ওই বৃদ্ধের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে একটি পিটিশন করে। এদিন রাতেই অমরেশকে থানায় নিয়ে যায় পুলিস। মনে করা হচ্ছে পুলিসের কাছে সবকিছু বলে দিয়েছে অমরেশ। বৃহস্পতিবার বৃদ্ধ গৌরলালের মৃতদেহ উদ্ধার হয়ে তার বাড়ির পেছনের পুকুর থেকে। এখন কীভাবে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু, তা খুন কিনা তা এখনও জানা যায়নি। এদিন লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় পুলিস। অমরেশ সরকার, তার বউ প্রমীলা সরকার ও অমরেশের শাশুড়িকে আটক করে পুলিস। এলাকাবাসীদের অনুমান নাতি নাতি বউ এবং তার শাশুড়ি মিলেই খুন করেছে বৃদ্ধ গৌরলাল সরকারকে।