হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহানির ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজত, 'ফেরার' ঘোষণা সৌম্যরূপকে
হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানিকে তাঁর নিউ টাউনের ফ্ল্য়াট থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁর বাড়ি থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। তাঁর বিপুল সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে।
বাসুদেব চট্টোপাধ্য়ায়: চিটফান্ড মামলায় হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহানিকে ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলেন আসানসোল সি জি এম আদালতের বিচারক তরুণ কুমার মণ্ডল। পুজোর ছুটির জন্য পরবর্তী শুনানি হবে ১৫ অক্টোবর। রাজু সাহানির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র স্থানীয় থানায় জমা দিয়েছে সিবিআই। অন্যদিকে বর্ধমান সন্মার্গ চিটফান্ড কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সৌম্যরূপ ভৌমিককে 'ফেরার' ঘোষণা করা হয়েছে।
হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহানির থাইল্যান্ড, হংকং ও ব্যাংককে এনজিও রয়েছে। আবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খুলেছেন। আদালতকে এই তথ্য দেয় সিবিআই। সেই সূত্র ধরেই রাজু সাহানির আইনজীবী দাবি করেন, রাজু একজন ডিরেক্টর ওই এনজিওর। কিন্তু চিটফান্ড কোম্পানির যে মাথা, সেই সৌম্যরূপ ভৌমিককে ধরতে পারছে না সিবিআই। সিবিআই আইনজীবী শিবেন্দ্র সচ্চন পাল্টা বলেন, রাজু সাহানির যাবতীয় বিদেশি অ্যাকাউন্টের তথ্য ইন্টারপোলকে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে সেই তথ্য পেতে সময় লাগবে। রাজু শাহানির সঙ্গে সৌমরূপ ভৌমিকের বিভিন্ন লিংক তারা পেয়েছে। বহু নথি উদ্ধার হয়েছে। টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে।
বিদেশে যে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে তার ঠিকানা ও সৌম্যরূপ ভৌমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ঠিকানা একই। রাজু সাহানি চিটফান্ডের টাকায় রীতিমতো সুবিধা ভোগ করেছে। সৌমরূপ ভৌমিক যখন পলাতক ছিল তখন রাজু সাহানির বাড়িতে সে গিয়েছিল বলেও মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাকের মাধ্যমে জানতে পেরেছে সিবিআই। অর্থাৎ তাঁর সঙ্গে যে যোগাযোগ ছিল, সেই তথ্য উঠে এসেছে। রাজু সাহানির আইনজীবী প্রদীপ কর বার বার আবেদন করেন যে, যে টাকার লেনদেন চিটফান্ড কোম্পানির সঙ্গে হয়েছে, সেটা ধার হিসাবে নিয়েছিল রাজু সাহানি। পুনরায় তা শোধ করে দিয়েছে। রাজু সাহানির সঙ্গে ওই কোম্পানির ঋণ নেওয়া ছাড়া আর কোনও সম্পর্ক ছিল না। ঋণ শোধ করে দেওয়ার পরও ওই কোম্পানির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক নেই।
হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানিকে তাঁর নিউ টাউনের ফ্ল্য়াট থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁর বাড়ি থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। নিউ টাউনের ফ্ল্যাট ছাড়াও হালিশহরে তাঁর নিজের বাড়ি ও অন্য়ান্য জায়গা থেকেও বিপুল টাকার সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। নিউটাউনের পাশাপাশি এ রাজ্য় ও বেঙ্গালুরুতে মোট ৩টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। সিটিসেন্টার-২ এর সামনে একটি দোকান রয়েছে। নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ২-এ ফ্ল্যাট রয়েছে রাজুর। সেখানে একটি আবাসনের বারো তলায় থাকেন রাজুর স্ত্রী ও সন্তান। জানা যাচ্ছে, ওই আবাসনের এক একটি ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার উপরে। এরকম একটি আবাসনের ৯ তলাতেও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে রাজু।