কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পাঠাতে দেরি হাসপাতালের, মৃত্যুর ৪ দিন পরেও দেহ পেলনা ‘গৃহবন্দি’ পরিবার

চরম সমস্যায় পড়েছেন পরিবারের অনান্য সদস্যরাও। বেনজির ঘটনা মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়া এলাকায়।

Updated By: Sep 4, 2020, 04:40 PM IST
কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পাঠাতে দেরি হাসপাতালের, মৃত্যুর ৪ দিন পরেও দেহ পেলনা  ‘গৃহবন্দি’ পরিবার
প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন:  মৃত্যুর ৪ দিন পরেও দেহ পেলনা পরিবার।  করোনা আতঙ্কে উল্টে এলাকাবাসীরা বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছে মৃত ব্যক্তির বাড়ির চারপাশ, বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না পরিবারের কাউকে।  চরম সমস্যায় পড়েছেন পরিবারের অনান্য সদস্যরাও। বেনজির ঘটনা মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়া এলাকায়।

দিন কয়েক আগেই জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন রঞ্জিত রজক। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরেই অগাস্ট মাসের ২৪ তারিখ তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় শালবনি কোভিড হাসপাতালে। ২৯ তারিখ তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর "স্টেপ ডাউন" করে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই ৩১ তারিখ ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় রঞ্জিত রজকের। মৃত ব্যাক্তির পুনরায় করোনা সংক্রামিত হতে পারে এই সন্দেহেই মৃতের লালারস সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।

পরিবারের অভিযোগ, মৃত্যুর আগে রঞ্জিতের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। অথচ কলকাতা থেকে এখনও রিপোর্ট না আসার কারণ দেখিয়ে পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে নিত্যদিন টালবাহানা করছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এমনকি হাসপাতালের গাফিলতির কারণেই তাঁদের গণ্ডিবদ্ধ অবস্থায় থাকতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মৃতের পরিজনেরা। মৃত্যুর ৪ দিন পরেও কেন কোভিড রিপোর্ট আসছে না সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
হাসপাতলের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর কাজল মণী মুর্মু। যদিও এবিষয়ে মুখ খুলতে চাননি এলাকাবাসীরা।

এদিকে একইরকমভাবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পড়ে রয়েছে ৯টি মৃতদেহ। যাঁদের প্রত্যেকের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে কলকাতায়। মৃতদেহ না পাওয়ার ফলে সমস্যায় পড়তে হয়েছে ৯টি পরিবারকে।

উল্লেখ্য, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ভাইরাল রিসার্চ ডায়গনেস্টিক ল্যাবে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর কারণে দিন সাতেক বন্ধ রাখা হয়েছে আরটি- পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা। আর সেই কারনেই এই ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। চাপের মুখে পড়ে আপাতত পড়ে থাকা মৃতদেহগুলির  অ্যান্টিজেন টেস্ট করে নেগেটিভ রিপোর্ট এলেই দেহগুলি পরিবারের হতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: মত্ত শেয়ালের তাণ্ডবে তুলকালাম মেদিনীপুরে, প্রাণে বাঁচতে পিটিয়ে মারল গ্রামবাসী

মেডিক্যাল কলেজের ফেসিলিলিটি ম্যানেজার সঞ্জীব গোস্বামী জানান, বৃহস্পতিবার থেকে ফের মেডিক্যাল কলেজে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে, আর অসুবিধা হবে না। যেহেতু এই মৃতদেহ গুলি আগের তাই পরীক্ষা করতে এসএসকেএম-এ পাঠাতে হয়েছিল। রিপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছিল। এবার সেই সমস্যা হবেনা।

.