স্ত্রীর হাতে স্টিয়ারিং, স্বামী কনডাক্টর, রোজ সকালে ছুটছে বাস

দম্পতির দিন শুরু হয় ভোর সাড়ে তিনটেয়। সংসারের প্রাথমিক কাজকর্ম সামলে, বাস নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ভোর সাড়ে চারটের মধ্যে।

Updated By: Feb 14, 2018, 05:37 PM IST
স্ত্রীর হাতে স্টিয়ারিং, স্বামী কনডাক্টর, রোজ সকালে ছুটছে বাস

নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বামী বাস কন্ডাক্টর। স্ত্রী সেই বাসেরই চালক। একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে বেঁচে থাকার লড়াই। একেবারে মেড ফর ইচ আদার, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র এক্কেবারে আদর্শ জুটি শিবেশ্বর পোদ্দার ও প্রতিমা দেবী। বাবার কাঁধে টাকার ব্যাগ, মায়ের হাতে স্টিয়ারিং। নিমতা-হাওড়া রুটের মিনিবাসে নিয়মিত দেখা মিলবে এই হর-পার্বতী জুটির।
 
পনেরো বছর শিবেশ্বর পোদ্দারের সঙ্গে ঘর করছেন প্রতিমা দেবী। অভাবের সংসারে একসময় আর্থিক টানাটানি ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। সেই সময় ট্যাক্সি চালাতেন শিবেশ্বরবাবু। তারপর হাত দিলেন ম্যাটাডোরের স্টিয়ারিংয়ে। সবশেষে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে একটি মিনিবাস কেনেন শিবেশ্বর পোদ্দার। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। শিবেশ্বর পোদ্দার নিজে বাস চালালেও, মাঝেমাঝেই কন্ডাক্টর আসতেন না। আর তখনই হত সমস্যা।

নিরুপায় হয়ে বছর চারেক আগে স্ত্রীর কাঁধেই কন্ডাকটরের ব্যাগ ধরিয়ে দিয়েছিলেন শিবেশ্বর বাবু। সেই থেকে আবার নতুন করে একসঙ্গে পথ চলা শুরু। এরই ফাঁকে চলতে থাকে প্রতিমাদেবীকে বাস চালানোর প্রশিক্ষণ। তারপর থেকেই নিমতা-হাওড়া রুটে প্রতিদিন ছোটে মিঞা-বিবির গাড়ি।

দম্পতির দিন শুরু হয় ভোর সাড়ে তিনটেয়। সংসারের প্রাথমিক কাজকর্ম সামলে, বাস নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ভোর সাড়ে চারটের মধ্যে। দু্'টো ট্রিপ করে সকাল দশটার মধ্যে বাড়ি ফিরে দুই মেয়ের খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় প্রতিমাদেবীকে। মেটাতে হয় শাশুড়ির প্রয়োজন। বিকেলে ফের হেঁশেল ছেড়ে স্টিয়ারিং ধরেন প্রতিমা দেবী। ফিরতে ফিরতে অন্তত রাত ন'টা।

আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রী সবুজ সংকেত দিলেই ভাঙা হবে বিপজ্জনক পোস্তা উড়ালপুল

রোজকার এই কর্মব্যস্ততার মধ্যেও দুই মেয়ের বেড়ে ওঠায় কোন খামতি রাখেননি পোদ্দার দম্পতি। অনেক অভাবের মধ্যেও তাই 'বড়‍' হওয়ার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেনি রাখি আর সাথী। জীবনের প্রতিপদে পাশে পেয়েছে মা আর বাবাকে। মা-বাবার স্বপ্নকে সত্যি করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারাও।

.