Jagdhatri Puja: দাঁড়িয়ে গেল লোকাল-দূরপাল্লার ট্রেন, ধীরেসুস্থে লাইন পেরলেন দেবী জগদ্ধাত্রী
প্রায় আড়াইশো বছর আগে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণও চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেন। এখনও পর্যন্ত এই পুজোয় দেওয়ান চৌধুরীদের উত্তরপুরুষের নামে সংকল্প হয়
অয়ন ঘোষাল: ভারতীয় রেল অত্যাবশ্যক গণ পরিষেবা। বিশেষ কারণ বা অবরোধ ছাড়া ট্রেন কারুর জন্য দাঁড়ায় না। ট্রেন যাওয়ার সময় মানুষ ও সবরকম গাড়িকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় লেভেল ক্রসিংয়ে। ব্যাতিক্রম দেবী জগদ্ধাত্রী।
চন্দননগর স্টেশন ছাড়িয়ে মাত্র দুশো মিটার এগোলেই বর্ধমানগামী রেল লাইনের পাশে আটত্রিশ বছরের পুরনো বারোয়ারি পুজো সুভাষপল্লীর। রেল লাইনের যে প্রান্তে মন্ডপ, মূল শহর তার অন্যপ্রান্তে। আর মাঝে মানুষ ও বাইক সাইকেল যাতায়াতের জন্য যে ছোট্ট আন্ডারপাস আছে, তার উচ্চতা মাত্র সাড়ে পাঁচ ফুট। তাহলে দেবী ওপারে যাবেন কিভাবে? কার্নিভালের জন্য কিভাবে পৌছাবেন স্ট্রান্ড ব্যাঙ্ক রোডে? বা যখন কার্নিভাল চালু হয়নি, তখন কিভাবে পৌছাবেন স্ট্রান্ড ঘাটে?
আরও পড়ুন-মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার, এখন কেমন আছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা?
সমস্যা দূরীকরণে ৩৮ বছর আগেই রীতিমতো সই সাবুদ করে বোঝাপড়া হয় পূর্ব রেলের সঙ্গে। তাই মন্ডপ থেকে বেরিয়েই মা উঠে পড়েন রেললাইনে। লাইন ধরেই চলতে থাকেন। এগিয়ে যান প্রায় দেড়শো মিটার রেলপথ। তারপর স্টেশনের একটু আগে, তাঁকে নামিয়ে আনা হয় সড়কে। এই রেওয়াজ পুজো এবং ভারতীয় রেল, উভয়পক্ষই একটি স্পেশাল কেস বা ব্যতিক্রম হিসেবে নথিবদ্ধ করে।
উল্লেখ্য, দেবীমূর্তি, আলোকসজ্জা ও শোভাযাত্রার জন্য বিখ্যাত চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির অনুমোদিত তিনশোর বেশি পুজো হয় এখানে। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রীপুজো এখন হেরিটজ। প্রচুর মানুষ নানা দিক থেকে এই পুজোর রঙ রূপ দেখতে ছুটে আসেন।
প্রায় আড়াইশো বছর আগে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণও চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেন। এখনও পর্যন্ত এই পুজোয় দেওয়ান চৌধুরীদের উত্তরপুরুষের নামে সংকল্প হয়। এখানকার প্রতিমা সনাতনরীতির। সাদা সিংহ এবং বিপরীতমুখী অবস্থানে হাতি। শোনা যায়, বিসর্জনের সময় আদি কালে এই প্রতিমা জলে পড়লেই শুশুক বা সাপের দেখা পাওয়া যেত। লোকবিশ্বাসে এই দেবী অত্যন্ত জাগ্রতা। ইতিহাস বলছে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রবর্তক ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। জানা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ এই ইন্দ্রনারায়ণ ছিলেন চন্দননগরের ফরাসি সরকারের দেওয়ান।