এরা সব চামচা-বেলচা, এরাই দল শেষ করে দেবে: জিতেন্দ্র তিওয়ারি
দিদি নিয়ে সমস্যা নেই। দিদি নিজে সব দেখেন না। তাঁর নীচের ধাপের লোকজন মানুষকে মানুষ মনে করেন না।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) গতকাল বুধবার বিধানসভায় তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার পরেই বাংলার রাজ্য-রাজনীতিতে অনেক 'ইফস অ্যান্ড বাটস' (ifs and buts)-এর জন্ম হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ফোন পাওয়ার পরেও আসানসোল (Asansol) পুরসভার প্রধান প্রশাসক এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tewari) পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসায় তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের (Sunil Mandal) বাড়িতে দলের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব রচনা করা শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সরগরম এই বঙ্গভূমে রাজনীতির নতুন সমীকরণ নিয়ে তাই নানা কানাঘুষোও শোনা যাচ্ছে। ঠিক এই প্রেক্ষিতে zee 24 Ghanta-র তরফে জিতেন্দ্র তিওয়ারির মুখোমুখি হওয়া গিয়েছিল।
আজ, বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলে zee 24 Ghanta-র প্রতিনিধির মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন জিতেন্দ্র।
জিতেন্দ্র বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে যাব। ওঁকে দেখে দল করা। আমি যে সমস্যা অনুভব করেছি, সেটা জানাব। তারপর যদি সমাধান হয়, ভাল। অন্তত এটুকু বলতে পারব, আমি মনের কথা খুলে বলতে পেরেছি। আমি ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে যাব।'
এ পর্যন্ত বলে একটু একটু করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন জিতেন্দ্র। বলে দেন, 'একটা পুরসভা সব পাবে, আর একটা শুধু ভোট দিয়ে যাবে, তা হয় না। মানুষের কাছে জবাব দিতে হয় আমাদের।'
দল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে কিছু জানিয়েছেন কি?
জিতেন্দ্র জানান, তাঁকে সুব্রত বক্সী 'টেক্সট' করেছেন। কিছুদিন পর্যন্ত মিটিং-জনসভা করতে বারণ করা হয়েছে। ববি কী বলেছেন তা তিনি জানেন না। এর পরই খানিকটা যেন আবেগপ্রবণ সুরে জিতেন্দ্র বলেন, 'দিদি এটা পুরোটা জানেন কিনা জানি না। মন বলছে, দিদি জানেন না। কিন্তু পরে যদি দেখি, দিদি জানেন, তবু আমাকে এই 'টেক্সট' করা হয়েছে, তা হলে খুব কষ্ট পাব।'
সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে বৈঠকের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে জিতেন্দ্র বলেন, 'গতকাল (বুধবার) দেড় ঘণ্টা বৈঠক হয় । শুভেন্দুর সঙ্গে বসলেই কথা লম্বা হয়ে যায়। দল রাখলে থাকব। না থাকলে আমি তো ঘরে বসে থাকব না, অসুস্থ হয়ে পড়ব। মানুষের কাজ করতে গিয়ে যা করণীয় তাই করব।'
also read: 'TMC উঠে যাবে, ও দল আর থাকবে না': Adhir
আসন্ন ভোটে তৃণমূল কেমন ফল করবে এ বিষয়ে জিতেন্দ্র বলেন, 'খুব সহজে আবার তৃণমূল জিততে পারত। কেউ কেউ অযথা জটিল করে দিলেন। এঁরা সব চামচা-বেলচা। এঁরাই দল শেষ করে দেবেন।'
বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন সে বিষয়ে জিগ্যেস করা হলে জিতেন্দ্র জানান, বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব আন্তরিক ও ভাল।
কিন্তু তিনি কি মমতার উপর ক্ষুব্ধ? ভুল ভেঙে দিয়ে জিতেন্দ্র স্পষ্ট বলেন, 'দিদি নিয়ে সমস্যা নেই। দিদি নিজে সব দেখেন না। তাঁর নীচের ধাপের লোকজন মানুষকে মানুষ মনে করেন না। কেউ কেউ পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি নিয়ে রেখেছেন।'
তবে শুভেন্দুর বিষয়েই সব চেয়ে উচ্ছ্বসিত দেখায় জিতেন্দ্রকে। তিনি পরিষ্কার বলে দেন, 'মমতার পর শুভেন্দু। বাংলার সব থেকে পপুলার নেতা। দিদির পরে শুভেন্দুই। এই সহজ সত্যটা মেনে নিলেই এত ঝামেলা হত না। ওঁকে (শুভেন্দুকে) কত জায়গায় সরাল, কত পদ বিলোপ করে আটকানোর চেষ্টা করা হল। কী লাভ হল? ওঁর জনপ্রিয়তা বিপুল! আটকানো গেল?
also read: ইস্তফায় আইনি জটিলতা Suvendu-র! ইস্তফাপত্র পেলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা: বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়
শুভেন্দু ডাকলে তাঁর সঙ্গে যাবেন কিনা এই প্রশ্ন এখন ওঠা স্বাভাবিকই। সেই প্রশ্নের উত্তরে খুবই তাৎপর্যপূর্ণভাবে জিতেন্দ্র বলেন, 'উনি আমাকে ডাকবেন কিনা জানি না। যাঁর যাওয়ার তিনি যাবেন, উনি পথ করে দেবেন।'