সম্প্রীতির রথ মাহেশে
মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক সম্প্রীতির কাহিনিও।
নিজস্ব প্রতিবেদন : পুরীর পরই দ্বিতীয় প্রাচীনতম রথ হুগলির মাহেশে। বলা হয়ে থাকে পুরীর দেবতা জগন্নাথ নাকি গঙ্গাস্নানের উদ্দেশ্যে মাহেশে এসে সেখানে থেকে যেতে মনস্থ করেন, এবং সেই অনুসারেই সেখানে জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয় ইতিহাস-পূর্বকালে।
তবে ইতিহাস বলে, চৈতন্য সমসাময়িক জনৈক ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী পুরী গিয়ে জগন্নাথ বিগ্রহ দর্শন করে প্রীত হয়ে মাহেশের গঙ্গাতীরে এক কুটিরে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরাম বিগ্রহ স্থাপন করেন। পরে শেওড়াফুলির জমিদার মনোহর রায় সেখানে প্রথম একটি মন্দির নির্মাণ করিয়ে দেন। সে মন্দির ভেঙে যাওয়ার পর কলকাতার বড়োবাজারের মল্লিক পরিবারের নিমাইচরণ মল্লিকের দানে ১২৬৫ বঙ্গাব্দে আজকের মন্দির তৈরি হয়। শ্রীচৈতন্যের নির্দেশে তাঁর ভক্ত কমলাকর পিপলাই আনুমানিক ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে বা তার কাছাকাছি সময়ে ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারীর কাছ থেকে জগন্নাথ মন্দিরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানেও তাঁর বংশধরেরা ওই মন্দিরের সেবায়েত।
মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক সম্প্রীতির কাহিনিও। সপ্তগ্রামের বোড়ো পরগনার জায়গীরদার নবাব খাঁনে আলি খাঁন গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করবার সময় এক বার ঝড়ে বিপদগ্রস্ত হয়ে মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হন। মন্দিরের তত্কালীন সেবায়েত রাজীব অধিকারীর আপ্যায়ণে সন্তুষ্ট হয়ে নবাব খাঁনে আলি ১৬৫০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর অঞ্চলের জগন্নাথপুরকে মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের নামে লিখিত দলিলের মাধ্যমে নিষ্কর দেবোত্তর করে দেন। পরে মাহেশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধিকারে এলে কোম্পানিও সেই দলিলকে মান্যতা দিয়ে ওই পরগনা নিষ্কর ঘোষণা করে। আরও পড়ুন, রশিতে টান পড়তেই, পুরীতে শুরু রথযাত্রা