নিজস্ব প্রতিবেদন: অমানবিক, অমানুষিক! 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কী বলা হবে এই ঘটনাকে? দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বছর চল্লিশের এক মহিলা বদ্ধঘরে আটক। সারাদিনে মাত্র দু'বার জানালার ফাঁক দিয়ে কিছু খাবার দেওয়া হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় এক বোতল জল। এটুকুই বাঁচার রসদ। কনকনে শীতে সম্বল শুধু একটা ছেঁড়াফাটা কম্বল। মলমূত্র ত্যাগও অন্ধকার এক চিলতে ওই ঘরেই। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে এই ভাবেই বন্দিদশায় নরকযন্ত্রণাময় জীবন কাটাতে হচ্ছে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলাকে। প্রায় কয়েদিদের মতো জীবন।


পূর্ব বর্ধমানের (burdwan) আউশগ্রাম (ausgram) ১ ব্লকের বড়া গ্রামে সবিতা ঘোষ নামে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা মাঝেমধ্যেই আর্ত চিৎকার করেন। কিন্তু কে শোনে! বন্দিদশা ঘোচে না তাঁর।


কী করে এমন হল? 


স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সবিতা অনেকদিন আগেই তাঁর মাকে হারিয়েছেন। বাবা শিবপ্রসাদ ঘোষ মারা গিয়েছেন কয়েকবছর আগে। শিবপ্রসাদের দু'টি বিয়ে। প্রথমপক্ষের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছোট মেয়ে হলেন সবিতা। শিবপ্রসাদের দ্বিতীয়পক্ষের মেয়ে কাবেরী মণ্ডলের বড়া গ্রামেই বিয়ে হয়েছে। পৈতৃক বাড়ির একটি ঘরেই বন্দি সবিতা। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর নিজের দাদা উজ্জ্বল ঘোষ, দাদার স্ত্রী ও তাঁদের এক মেয়ে। সবিতার দাদা উজ্জ্বল গ্রামের সম্পন্ন চাষি হিসাবে পরিচিত। পৈতৃক জমিজমা রয়েছে ভালোই। তবে একই বাড়িতে থাকলেও তিনি কোনও খোঁজ নেন না অসুস্থ বোনের। খেতে পর্যন্ত দেন না। বরং সবিতার সৎবোন কাবেরীই নিয়ম করে দু'বেলা এসে খাবার ও জল দিয়ে যান জানালার ফাঁক দিয়ে।


আরও পড়ুন: শুধু দা হাতেই চিতাবাঘের সঙ্গে দুঃসাহসিক লড়াই প্রৌঢ়ার


কাবেরী কী বলছেন নিজের অসুস্থ দিদির বিষয়ে? 


কাবেরী বলেন, 'দিদি পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। ভালো নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশও করেন। তারপর হঠাৎই তিনি মানসিক ভারসাম্য হারান। দাদা তাঁকে ঘরে আটকে রাখেন। ঘরের চাবি তাঁর কাছেই থাকে। এত বছরে সেভাবে দিদির চিকিৎসাও হয়নি।'


কাবেরীর স্বামী মনোজ মণ্ডলও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। তিনি জানান, 'একজন মানুষকে অমানুষিক ভাবে বছরের পর বছর গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। চিকিৎসা করালে হয়তো সুস্থ জীবন ফিরে পেতেন তিনি। আমার স্ত্রী তাঁর সৎদিদিকে খাবার দেন।'


আর গ্রামবাসীরা? গ্রামবাসীরা জানান, ঘরবন্দি সবিতার চিকিৎসা হয়নি। তাঁরা তাঁর মুক্তি চান।


আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে বিতাড়িত বাবা-মায়েদের জন্য নিখরচায় বৃদ্ধাশ্রম