শিক্ষক পেটানোর পালটা অভিযোগ! নিগৃহীত অধ্যাপকের দাবি, 'মমতা ফোন করায় প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে তৃণমূল'
"মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পর, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠবে তা আমি জানতাম। তৃণমূল-ই এটা করাচ্ছে।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : কোন্নগরের অধ্যাপক নিগ্রহকাণ্ডে নয়া মোড়। নিগৃহীত অধ্যাপক নিজেই নাকি শিক্ষক পেটানোয় অভিযুক্ত! সামনে এল এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। যদিও সবটাই 'চক্রান্ত' বলে দাবি করেছেন অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে সেই 'আক্রান্ত' শিক্ষক বলছেন, 'প্রাপ্য শাস্তি-ই পেয়েছেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়।'
নিগৃহীত অধ্যাপকের বিরুদ্ধেই শিক্ষক নিগ্রহের অভিযোগ! সেই অভিযোগের প্রেক্ষাপট জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে ২২ বছর। অভিযোগ, ১৯৯৭ সালে এক রাজনৈতিক বচসার সময় এক স্কুল শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করেছিলেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাটি ঘটেছিল হুগলির বাহিরখণ্ডের নারায়ণপুরে। সেই ঘটনায় চন্দননগর আদালতে পনের বছর ধরে মামলাও চলেছিল।
সেই 'আক্রান্ত' শিক্ষক মনসারাম ঘোষের দাবিকে সমর্থন করেছেন বাহিরখণ্ডের বাসিন্দারাও। তাঁরা বলছেন, সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কথা স্পষ্ট মনে আছে তাঁদের। শিক্ষককে মারধর করার অপরাধে অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় নিজেও অপরাধী। প্রাপ্য শাস্তি-ই পেয়েছেন তিনি। একই কথা বলছেন সেদিনের 'আক্রান্ত' শিক্ষকও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বাহিরখণ্ডের নারায়ণপুর গ্রামেই ছোট থেকে বড় হয়েছেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। ১৯৯৭ সালে তাঁর হাতেই নিগৃহীত হন তৎকালীন রামনগর নূটবিহারী পাল চৌধুরী হাইস্কুলের শিক্ষক মনসারাম ঘোষ। গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁকে রীতিমতো 'জুতোপেটা' করছিলেন নাকি সুব্রতবাবু!
আরও পড়ুন, কোন্নগরের নিগৃহীত অধ্যাপককে ফোন মুখ্যমন্ত্রীর, দুঃখপ্রকাশ, নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ সুব্রতবাবুর
যদিও গোটা ঘটনাটি-ই অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক সুব্রতবাবু। তাঁর পাল্টা দাবি, "অধ্যাপক নিগ্রহের ঘটনায় ফোন করে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পর, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠবে তা আমি জানতাম। তৃণমূল-ই এটা করাচ্ছে।" উল্লেখ্য, কোন্নগরের নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজের অধ্যাপক সুব্রতবাবুকে মারধর ও তাঁকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। তন্ময় দেব প্রামাণিক নামে ওই কাউন্সিলরকে শোকজও করা হয়েছে।
এদিকে হামলার খবর জানার পর নিগৃহীত অধ্যাপককে নিজে ফোন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। এরপরই জি ২৪ ঘণ্টাকে একান্ত সাক্ষাতকারে অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভ উগরে দেন। বলেন, "২০১১ সালের পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অনেকবারই ভেবেছি চাকরি ছেড়ে দেব। রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে ভাবতে বাধ্য হয়েছি।" এখন নিগৃহীত অধ্যাপকের বিরুদ্ধেই শিক্ষক মারধরের নয়া অভিযোগ সামনে আসতে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।