গুজব থেকে গণপিটুনি রুখতে জেলাজুড়ে প্রচার মালদার ১২টি থানার পুলিসকর্মীদের
উত্তেজিত জনতার হাত থেকে রেহাই পাননি খোদ পুলিসকর্মীরাও।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মালদা জেলায় ঘটেই চলেছে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা। জেলাজুড়ে আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতায় চরম উদ্বিগ্ন প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার নড়েচড়ে বসল পুলিস। জেলার ১২টি থানা থেকে মাইকিং-লিফলেট বিলির মাধ্যমে স্থানীয়দের সচেতন করার উদ্যোগ নিলেন পুলিসকর্মীরা।
গত সাতদিনে পাঁচটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে মালদা জেলায়। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে রেহাই পাননি খোদ পুলিসকর্মীরাও। গত ১৩ অক্টোবর ইংরেজবাজার থানার মিল্কি ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। আক্রান্ত হন পুলিস আধিকারিকও। শুধু তাই নয়, সেই দিনই মালদা মেডিকেল কলেজ চত্বরে সন্দেহের বশে দুই শ্রমিককে গণপিটুনী দেওয়া হয়। গত ১৫ অক্টোবর ইংরেজবাজার থানার গৌড় রোডে সন্দেহের ভিত্তিতে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। ১৭ অক্টোবর সেই ইংরেজবাজার থানারই রথবাড়ি এলাকার একটি শপিং মলে গুজবের ভিত্তিতে এক ব্যক্তিকে মারধর করে উন্মত্ত জনতা। গত ১৯ সেপ্টেম্বর হরিশচন্দ্রপুর থানা এলাকাতে দুই ব্যক্তিকে সন্দেহের ভিত্তিতে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যায় প্ররোচনার সন্দেহে নানুরে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ
শুধু চলতি সপ্তাগেই নয়, চলতি বছরেও একের পর এক গণপিটুনির সাক্ষী থেকেছে মালদা জেলা। এই বছরেই পরকীয়ার অভিযোগে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয় কালিয়াচকে। একই অভিযোগে বৈষ্ণবগড় থানাতেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। দুই ক্ষেত্রে প্রহৃত যুবকদের মৃত্যু হয়। জেলাজুড়ে ক্রমশই এ ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকায় তাই কপালে চিন্তার ভাঁজ জেলা প্রশাসনের।
সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গণপিটুনি রোধের প্রচেষ্টায় তাই কোমর বেঁধে নেমেছে মালদার প্রশাসন। মানুষ যাতে নিজের হাতে আইন তুলে না নেয়, সে বিষয়ে সচেতনতার প্রসার করা হচ্ছে। গুজব ছড়ানো ও বিশ্বাস করা থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে থাকার বিষয়ে সতর্কতা বাড়াতে চাইছে স্থানীয় প্রশাসন। শুধু তাই নয়, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে মারধর না করে সরাসরি ফোন করে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়ারও আর্জি জানানো হয়। সেই উদ্দেশ্যে মাইকিং ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার করা হয় স্থানীয় থানাগুলির ফোন নম্বর। এ প্রসঙ্গে মালদা জেলার পুলিস সুপার অলোক রাজরিয়া বলেন, "জনগণকে সচেতন করতে আগামী বেশ কয়েকদিন এ ধরনের প্রচার অভিযান চালানো হবে।"