প্রায় এক বছর পরে খুলল স্কুল, কোথাও নির্বিঘ্ন ক্লাস, কোথাও ছন্দপতন
স্কুলেগেট না খোলায় ছাত্রছাত্রীরা খেজুরি হেড়িয়ার রাজ্য সড়কে অবরোধে সামিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কোভিড-পর্ব পেরিয়ে এগারো মাসের মাথায় খুলল স্কুল। এতদিন অনলাইনে ক্লাস চললেও সহপাঠী ও শিক্ষকদের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত ছিল পড়ুয়ারা। ফলে সব মিলিয়ে বেশ আনন্দের আবহ। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু শুক্রবার থেকে। তবে ইস্কুলনামা সর্বত্রই এক হল না। কোথাও নির্বিঘ্নেই ক্লাস হল। কোথাও বনধের জেরে খুলেও বন্ধ হয়ে গেল স্কুল। কোথাও আবার পড়ুয়ারাই রাস্তায় বসে অবরোধে সামিল।
রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর দ্বারিকপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যাচক্রের ক্লাস প্রথমদিনের প্রথম লগ্নেই বিঘ্নিত হল। রায়গঞ্জ চারমাথার মোড়ে বাম সমর্থকেরা বনধ কর্মসূচি পালন করছিলেন। স্কুলটি ওই মোড়ের কাছেই। স্কুল খোলার পরেই কয়েকজন বনধ সমর্থক স্কুলের প্রধানশিক্ষককে স্কুল বন্ধ করার অনুরোধ করেন। ছাত্রযুবদের স্বার্থরক্ষার জেরে যে বনধ সেখানে স্কুলপড়ুয়াদেরও সামিল করার পরামর্শ দেন তাঁরা। যদিও তাঁদের কথায় সায় দেন না প্রধান শিক্ষক। তিনি স্কুল খোলার প্রথম দিনেই স্কুল বন্ধ করার অনুমতি দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। বনধ সমর্থকেরা ফিরে যান তাঁর কথা শুনে।
আরও পড়ুয়া: LIVE: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিসদের মিষ্টিমুখ ধর্মঘটীদের
হুগলিতে (hooghly) ছবিটা অবশ্য শান্তিপূর্ণ। দীর্ঘদিন পরে স্কুল খোলায় সেখানে খুশি পড়ুয়ারা, অভিভাবকেরাও। আনন্দের আবহ দেখা গেল হুগলি কলেজিয়েট,বালিকা বাণীমন্দির, ডানকুনি চাকুন্দি হাইস্কুল অথবা শ্রীরামপুর শিশুতীর্থে। সর্বত্রই প্রথমদিনের ক্লাস হল সমস্ত নিয়ম মেনে নির্বিঘ্নে। শিক্ষা দপ্তরের বেঁধে দেওয়া কোভিডবিধি মেনে পড়ুয়াদের বেঞ্চে বসানো হয়েছিল। মাস্ক স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বিষয়ে হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন গোস্বামী জানান, সপ্তাহে তিনদিন ক্লাস করানো হবে। মাস্ক স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক। স্কুলে আসার ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের অভিভাবকের অনুমতিপত্র দেখাতে হবে।
আনন্দের এই ছবিটা অবশ্য় একটু টোল খেয়ে গেল খেজুরিতে। খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের খেজুরি আদর্শ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের ফটক বন্ধ থাকায় স্কুলে ঢুকতেই পারল না পড়ুয়ারা। দীর্ঘ সময় ছাত্রছাত্রীরা অপেক্ষা করে। স্কুলেগেট না খোলায় তারা খেজুরি হেড়িয়ার রাজ্য সড়ক অবরোধ করে।
স্কুল খোলার প্রথম দিনে উত্তেজনা মালদহের (malda) কোথাও কোথাও। চাঁচোলের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনকে কেন্দ্র করে ছড়াল তুমুল উত্তেজনা। বনধ সমর্থকদের সঙ্গে বিবাদে জড়ায় স্কুলের পড়ুয়ারা। বনধ সমর্থকরা চাঁচোলের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার পাশাপাশি সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনও বন্ধ সফল করতে গেলে বাধা পান। বিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও। ঘটনাস্থলে আসে চাঁচোল থানার পুলিস। পুলিসের অনুরোধে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও প্রথমে বাধা পায় পড়ুয়ারা। যদিও পরে পড়ুয়াদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়।
নদিয়ার ঘটনাটা অবশ্য বেশ আলাদা। এখানেও ক্লাস করা হল না পড়ুয়াদের। তবে তা বনধের জন্য নয়। কেউ স্কুলড্রেস পরে না আসায়, কারও উগ্র হেয়ার স্টাইলের জন্য সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের স্কুলে ঢোকার অনুমতি দেননি শিক্ষকেরা। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার মাজদিয়া রেলবাজার হাইস্কুলে।
আরও পড়ুয়া: সাগরদিঘিতে BJP 'পরিবর্তন যাত্রা'র রথ আটকানো ঘিরে উত্তেজনা