তন্ময় প্রামাণিক: করোনা পরিস্থিতিতে ফের রোগী হয়রানি ও মৃত্য়ুর খবর প্রকাশ্যে। আবারও অভিযোগ সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। রোগী এক, অথচ দু-জায়গায় করোনার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট দু-রকম। আর তা নিয়েই কার্যত ধুন্ধুমার খাস কলকাতায়। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের গাফিলতির কারণেই মৃত্যু হয়েছে রোগীর। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সূত্রের খবর শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে সুভাষগ্রাম হাসপাতালে যান সোনারপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় সেন (৪৩)। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ২০ জুন ভোরবেলা বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় সঞ্জয়বাবুকে। দুপুরে ফের অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হিন্দুস্তান হেলথ পয়েন্টে। সেখানে জানানো হয় রোগীর ফুসফুলের অবস্থা খারাপ। 


আরও পড়ুন: ধুন্ধুমার RG Kar, শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করাতে এসে হাসপাতাল থেকে উধাও সদ্যজাত


পরিবারের অভিযোগ করোনা সন্দেহে কোনও চিকিৎসা না করেই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পিয়ারলেস, ডিসান, আইরিশ, এম আর বাঙ্গুরের মতো ৬টি হাসপাতাল ঘুরে ২দিন পর ২২ জুন ফের সুভাষগ্রাম হাসপাতালে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে নাইসেডে পাঠানো হয়।


২২ জুন বাড়ি ফিরে পরিস্থিতি অবনতি হওয়া তাঁকে NRS হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে সেখানে মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে করা নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ২৪ জুন রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ICU-তে নিয়ে গেলে দুপুরেই মৃত্যু হয় রোগীর। এরপর সুভাষগ্রাম হাসপাতালের তরফে পাঠানো রিপোর্টে করোনা পজেটিভ মেলে রোগীর। 


তবে রোগীর করোনা পজেটিভ নাকি নেগেটিভ তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেই গিয়েছে। নাইসেডের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট বলছে সঞ্জয়বাবু করোনা পজেটিভ। NRS-এর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের রিপোর্ট বলছে ওই একই রোগী করোনা নেগেটিভ। আর তাতেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। 


আরও পড়ুন: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হৃদযন্ত্র বিকল! মৃত্যুকে জয় করে করোনা রোগীকে ফেরাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ


তাঁর মৃত্যুর পরদিনই বাড়িতে হাজির স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিক ও পুলিস। জানান, যাঁরা দাহ করতে গেছিলেন, পরিবারের লোকজন, সঞ্জয়ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ পাড়ার লোকজনকে কোয়ারেন্টাইন এ যেতে হবে। এরপরই এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্বাস্থ্য ভবনের প্রতিনিধিরা। বহুক্ষণ স্বাস্থ্য ভবনের প্রতিনিধিদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 


ঘটনা প্রসঙ্গে এক প্রতিনিধি জানান, "আমরা নাইসেডের রিপোর্ট নিয়ে এসেছি। যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর নমুনা পজিটিভ। সেই কারণেই আমরা এসেছি।" সঞ্জয়ের আত্মীয়ের কথায়, "নাইসেডের রিপোর্ট বলছে, রোগী করোনা আক্রান্ত। কিন্তু সেই রিপোর্ট জানার আগেই NRS মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিজেদের ল্যাবে পরীক্ষা করে ওই রোগীর রিপোর্ট নেগেটিভ পেয়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব? রিপোর্টের ভিত্তিতে মৃত্যুর পর দেহ আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আমরা বাড়ি নিয়ে এসে তাঁকে দাহ করি। এখন বলা হচ্ছে রোগী করোনা আক্রান্ত। এতজন মানুষ দেহের সংস্পর্শে এসেছে। এর দায় কে নেবে?"


আরও পড়ুন: অবসাদ না অভাব? রিজেন্ট পার্কে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা গোটা পরিবারের


স্বাস্থ্য ভবনের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। গোটা বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। সূত্রের খবর, NRS হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সঞ্জয় সেনে পরিবার, NRS-এর মেল মেডিসিন ওয়ার্ডের রোগী-কর্মী-নার্স-চিকিৎসক-আই সি ইউ-সহ কতজন রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন, কোন কোন জায়গা সানিটাইসড করতে হবে এখন তারই হিসেব নিকেশ চলছে।