বাড়ি ঢুকে বুকে গুলি করে প্রাক্তন স্ত্রীকে খুন, শুভলগ্না হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন সুলতান আলির
২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বাড়িতে চড়াও হয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে শুভলগ্নার বুকে গুলি করে সুলতান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
![বাড়ি ঢুকে বুকে গুলি করে প্রাক্তন স্ত্রীকে খুন, শুভলগ্না হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন সুলতান আলির বাড়ি ঢুকে বুকে গুলি করে প্রাক্তন স্ত্রীকে খুন, শুভলগ্না হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন সুলতান আলির](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2019/11/28/220926-128031-sbcfl.jpeg)
নিজস্ব প্রতিবেদন : হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা শুভলগ্না চক্রবর্তীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রাক্তন স্বামী সুলতান আলিকে যাবজ্জীবন সাজা দিল শ্রীরামপুর অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত। ২০১৮-র ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়িতে চড়াও হয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি করে শুভলগ্নাকে খুন করে সুলতান। ভরসন্ধ্যায় বাড়ি ঢুকে এভাবে খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয় রাজ্য। তদন্ত শুরু করে আগ্নেয়াস্ত্র সহ অভিযুক্ত সুলতান আলিকে গ্রেফতার করে উত্তরপাড়া থানার পুলিস। অভিযুক্ত সুলতান আলির বিরুদ্ধে ৩০২ (খুন) সহ আরও ৩ ধারায় মামলা রুজু হয়। প্রায় একবছরের উপর ধরে চলে মামলার শুনানিপর্ব। ১৪ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্যদান করে। অবশেষে গতকাল বিচারক মহানন্দ দাস অভিযুক্ত সুলতান আলিকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আজ সুলতান আলিকে যাবজ্জীবন সাজা শোনান বিচারক। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৭ বছর জেল। মেয়ের খুনির এই সাজায় তাঁরা খুশি বলে জানিয়েছেন শুভলগ্নার বাবা, মা।
কোন্নগরের অলিম্পিক মাঠ সংলগ্ন এলাকায় বাবা তুষার চক্রবর্তী ও মা শুভ্রাদেবীর সঙ্গে থাকতেন শুভলগ্না। ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধায় বাবা-মায়ের সঙ্গে কাছেই কাকার বাড়িতে গিয়েছিলেন শুভলগ্না। অভিযোগ, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ তাঁরা যখন বাড়ি ফেরেন, তখন তাঁদের পিছন পিছনই ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে সুলতান। ঘরে ঢুকেই দরজা আটকে দেয়। তারপরই পিস্তল নিয়ে স্ত্রী শুভলগ্নার উপর চড়াও হয় সুলতান। দুজনের মধ্যে বচসা বাঁধে। বচসা চলাকালীনই সেভেন এম এম পিস্তল দিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে শুভলগ্নার বুকে গুলি করে সুলতান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। শুভলগ্নাকে বাঁচাতে এলে তাঁর বাবা, মাকেও পিস্তলের বাঁট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয় সুলতান। তাঁদেরকেও খুনের চেষ্টা করে। পাশেই শুভলগ্নার কাকা দীপক চক্রবর্তীর বাড়ি। তিনি গুলির শব্দ পেয়ে বেরিয়ে এলে, পালিয়ে যায় সুলতান।
আরও পড়ুন, '৯ বছর ফিরিয়ে দাও', প্রেমিকার বাড়ির সামনে ধরনায় বসলেন প্রেমিক!
তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, পড়শি সুলতানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল শুভলগ্নার। ২০১৪ সালে সুলতানের সঙ্গে রেজিস্ট্রিও করেছিলেন শুভলগ্না। কিন্তু সেকথা বাড়িতে গোপন রেখেছিলেন। এরপর সুলতানের সঙ্গে মতবিরোধ হতেই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন শুভলগ্না। অন্যদিকে, দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য তাঁর সম্বন্ধ পাকা হয়ে যায়। নভেম্বরেই ছিল বিয়ে। সেজন্য কেনাকাটাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। একথা জানতে পেরে গিয়েছিল সুলতান। আর তারপরই আক্রোশ থেকে শুভলগ্নাকে খুন করে সে।