উত্তরবঙ্গে বনধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি তবে, মোটের উপর স্বাভাবিক

বিজেপি বনধের প্রভাব থাকা সত্ত্বেও সকালে আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি গামী সরকারি বাস চলেছে৷ ড্রাইভার ও কনট্রাকটর হেলমেট পরে বেরিয়েছেন৷ সরকারি বাস স্বাভাবিক ভাবেই চললেও বেসরকারি গাড়ি চলাচল করছে না

Edited By: অধীর রায় | Updated By: Jul 14, 2020, 01:03 PM IST
উত্তরবঙ্গে বনধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি তবে, মোটের উপর স্বাভাবিক
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন: হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর  প্রতিবাদে ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দেয় বিজেপি।  মঙ্গলবার সেই বনধ সফল করতে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বনধকে ঘিরে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি হচ্ছে ।

রায়গঞ্জ--

মোটর সাইকেল চেপে বনধের সমর্থনে বিজেপির পতাকা নিয়ে র‍্যালি করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। রায়গঞ্জ শহরের সুদর্শনপুর এলাকায় পুলিসের বিশাল বাহিনী গিয়ে আটক করে ওই বিজেপি কর্মীদের। রায়গঞ্জ শহরে আটক ৯ জন বন্ধ সমর্থনকারী বিজেপি কর্মী।

হেমতাবাদ--

এক বনধ সমর্থনকারী বিজেপি নেতাকে মেরে পা ভেঙে দেয় পুলিস। এমনই অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ থানার কাঁকরসিং এলাকায়। গুরুতর জখম চঞ্চল রায় নামে ওই বিজেপির নেতাকে রায়গঞ্জ গভঃ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। অবিলম্বে অভিযুক্ত ওই সিভিক পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতারের দাবি করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী। রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়।  বিজেপির অভিযোগ এই বনধ ব্যর্থ করতে পুলিশবাহিনী বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালায়।

কোচবিহার--

বিজেপির সমর্থকরা সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার টার্মিনাসের সামনে সব বাস আটকে দিয়েছে।  বিজেপির জেলা সভাপতি মালতি রাভা নিজেই ছিলেন এই কর্মসূচিতে।  বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বাসগুলিকে আটকে দিয়েছেন বিজেপির কর্মীরা।  পরে পুলিস এসে অবরোধ ওঠানোর সময় সমর্থকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়।  রাস্তা পরিষ্কার করে দিলেও বাস টার্মিনাস থেকে এখনও বের হতে পারেনি। সরকারি বাস ভাঙা হয়। পুলিস লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।  গ্রেফতার বহু বিজেপি নেতা কর্মী।

তীব্র উত্তেজনা কোচবিহারের ঘুঘুমারী তেও। পুলিস এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়।  গ্রেফতার বহু বিজেপির নেতা কর্মী। কোচবিহারের মতো একই ছবি মাথাভাঙ্গা , দিনহাটা ও মেখলিগঞ্জ শহরের।   কম সংখ্যক দোকানপাট খুলেছে। রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া কম।

খাগড়াবাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে অবরুদ্ধ করা হয় ৩১ নং জাতীয় সড়ক। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে জেলার পুলিস সুপার সন্তোষ নিম্ভলকারের  নেতৃত্বে বিরাট পুলিসের বাহিনী ।

আলিপুরদুয়ার - -

বিজেপি বনধের প্রভাব থাকা সত্ত্বেও সকালে আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি গামী সরকারি বাস চলেছে৷ ড্রাইভার ও কনট্রাকটর হেলমেট পরে বেরিয়েছেন৷ সরকারি বাস স্বাভাবিক ভাবেই চললেও বেসরকারি গাড়ি চলাচল করছে না৷ আলিপুরদুয়ার বীরপাড়া চৌপথিতে পিকেটিং করার জন্য ৮ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল আলিপুরদুয়ার থানার পুলিস।

মালদা--

 উত্তরবঙ্গ বনধের সমর্থনে রাস্তায় জেলা বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনও অশান্তির খবর নেই। ৩৪নং জাতীয় সড়কে বিজেপি কর্মীদের পিকেটিং। বাস আটকে দেয় বিজেপি কর্মীরা। মালদা জেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।

বালুরঘাট--

সকালে জেলার সমস্ত বিজেপি নেতৃত্ব জেলাশাসকের দফতরে সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। এই বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন ও অন্যান্য নেতৃত্ব । এখানে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত। দূরপাল্লার কিছু বাস খুব সকালে এসে বালুরঘাটে পৌছেছে। অন্য কোন গণপরিবহণ চলছে না। কোন সড়কে  পিকেটিং দেখা যায় নি । তবে বালুরঘাট উত্তরবঙ্গ পরিবহণ দপ্তরের সামনে বিজেপি কর্মীদের পিকেটিং করে  বাস আটকানোর চেষ্টা করে ।  কিন্তু পুলিসের তৎপরতায়  সর্মথকরা সরে গেলে আবার বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

শিলিগুড়ি-

 শিলিগুড়িতে সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে শহরের দোকানপাট , তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় সংখ্যায় কম হলেও বনধকে উপেক্ষা করে সরকারি এবং বেসরকারি যানবাহন চলছে রাস্তায়। চলছে  রাজ্য পুলিসের টহলদারি । বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর শিলিগুড়ির চেহারাটা আস্তে আস্তে পাল্টাতে শুরু করে । দোকানপাট খুলেছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম হলেও রাস্তায় যানবাহন স্বাভাবিক।

জলপাইগুড়ি--

বনধ সফল করতে রাস্তায় নামে বিজেপি কর্মীরা। ছোট ছোট দল করে বাইক নিয়ে দোকান বন্ধ করার অনুরোধ করে  বিজেপি কর্মীর । কোথাও কোন অশান্তির খবর নেই । সবমিলিয়ে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টা বনধে এখনও পর্যন্ত মিশ্র ছবি উঠে এসেছে ।

.