বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বীরভূমের শহিদ জওয়ান রাজেশের শেষ মেসেজ, 'চিনের দ্রব্য ব্যবহার করিস না'

বাড়ি ফেরা মানেই বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলত আড্ডা ৷ ভারত-চিন সীমান্তে যখন পরিস্থিতি খারাপের দিকে তখন চিনের জিনিস ব্যবহার করতে না করেছিলেন রাজেশ ৷

Updated By: Jun 18, 2020, 11:06 AM IST
বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বীরভূমের শহিদ জওয়ান রাজেশের শেষ মেসেজ, 'চিনের দ্রব্য ব্যবহার করিস না'

নিজস্ব প্রতিবেদন:  শেষের কয়েকটা দিন যখনই হোয়াটসঅ্যাপে কথা হত, তখনই মেসেজ করে চিনা দ্রব্য ব্যবহার করতে বারণ করত। বন্ধুরা তার কথাও শুনতও। কিন্তু সেটা হয়তো আর জেনে যাওয়া হল না রাজেশের। বন্ধুদের আফসোস সেটাই! হোয়াটসঅ্যাপ ডিপির ছবিটা এখনও জ্বলজ্বল করছে, বন্ধুদের গ্রুপে পাঠানো বরফে ঢাকা সীমান্তের ছবিগুলো মোবাইলের গ্যালারিতে রয়ে গিয়েছে, কিন্তু চলে গেল রাজেশ। গাছতলায় বসে মাটির দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজেশেরই কয়েকজন বন্ধু।
হোয়াটসঅ্যাপে তাঁদের একটা গ্রুপ রয়েছে ৷ রাজেশ সেখানে সীমান্ত থেকে সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে পাঠাতেন ৷ প্রতিদিন সবার খবর নিতেন ৷  বাড়ি ফেরা মানেই বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলত আড্ডা ৷ ভারত-চিন সীমান্তে যখন পরিস্থিতি খারাপের দিকে তখন চিনের জিনিস ব্যবহার করতে না করেছিলেন রাজেশ ৷
২০১৫ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন রাজেশ ওরাং ৷ সরস্বতী পুজোয় শেষবারের মতো বাড়ি এসেছিলেন ৷ ফের আসার কথা থাকলেও লকডাউনের জেরে আর হয়নি ৷ মাঝে শুরু হয়ে যায় ভারত-চিন সীমান্তে মুখোমুখি সংঘর্ষ ৷ সোমবার রাতে লাদাখের ভারত-চিন নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয় ৷
বাড়ি আসার কথা ছিল, কিন্তু লকডাউনে ফিরতে পারেননি, বীরভূমের বীর জওয়ান রাজেশ ফিরছেন কফিনবন্দি হয়েই...
বীরভূমের শহিদ জওয়ান রাজেশ  ওড়াংয়ের পাড়ায় ইতিমধ্যেই মানুষের ঢল। তাঁর এক চিলতে বাড়িতে উপচে পড়ছেন পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয়রা। প্রত্যেকেই বীর জওয়ানকে একবার চোখের দেখা দেখতে চান। থমথমে আবহ। কড়া নিরাপত্তার চাদরে গোটা গ্রাম।  প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে, ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে গ্রামের বিভিন্ন জায়গা। মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল বাহিনী।

বৃহস্পতিবার সকাল বেলা গ্রামে শহীদ জাওয়ানের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয় সাঁইথিয়া বিধানসভার বিধায়ক লীলাবতী সাহা। প্রথমে শহিদ জাওয়ানের ছবিতে মাল্যদান করেন।  তিনি জানান এই গ্রামে শহিদ  রাজেশ ওড়াংয়ের একটি আবক্ষ মূর্তি বানানো হবে। প্রশাসনের তরফ শহিদের পরিবারকে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

 

.