অশোক মান্না: শিয়ালদহ-বজবজ শাখার বজবজ স্টেশনে বেশ কিছুদিন ধরেই এক অন্তঃসত্ত্বা মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা ঘুরে বেড়াচ্ছিল। বজবজ স্টেশন চত্বরে প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ঝুপড়িতেই থাকত ওই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা এবং তাঁর মা। পথ চলতি মানুষ থেকে ট্রেন যাত্রী প্রায় সকলের থেকেই কিছু কিছু পয়সা চেয়ে তাদের দিন চলত। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ওই মহিলা একদিকে যেমন কানে শুনতে পায় না, ঠিক তেমনি রাতের বেলাতেও একদমই প্রায় দেখতে পেত না। বজবজ শিয়ালদহ শাখায় যাত্রীদের থেকে ভিক্ষা করা কুনাল দলুই নামে পূজালীর বাসিন্দা এক বৃহন্নলার দাবি তাঁকে তিনি প্রতিদিন দেখতেন। কিন্তু দেখলেও কোনও প্রকার অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ত না চোখে। কিন্তু ওইদিন তিনি ওই মহিলাকে স্টেশন চত্তরেই নগ্ন অবস্থায় ছটফট করতে দেখেন। কাছে যেতেই তিনি বুঝতে পারেন ওই মহিলা অন্তঃসত্ত্বা। 


প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ওই বৃহন্নলা মহিলাকে জামা কাপড় পরায়। তত্‍ক্ষণাত্‍ চিকিৎসার জন্য তিনি তাঁকে স্থানীয় বজবজ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কৌশিক রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কাউন্সিলর তাঁকে বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা করাতে গেলে ওই ভারসাম্যহীন মহিলার পরিচয় পত্র চাওয়া হয়, আর তাতেই সমস্যার সৃষ্টি হয়।


আরও পড়ুন:Durga Puja Weather: আগের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দুর্গাপুজোয় বৃষ্টি নিয়ে বড় আপডেট আবহাওয়া দফতরের!


এই মর্মে কৌশিক বাবু ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর অফিসে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেই ওই ভারসাম্যহীন মহিলার চিকিৎসার জন্য যাতে ওই বৃহন্নলার পরিচয় পত্র ব্যবহার করা যায় সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তবে ৬ দিন ধরে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ওই ভারসাম্যহীন মহিলা ভর্তি থাকলেও কোন সন্তান প্রসব করে না। অবশেষে তার তিন দিন বাদেই বজবজ পৌর হাসপাতালে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় ওই মহিলা। খবর চাউর হতেই নিঃসন্তান কয়েকজন দম্পতি ওই বাচ্চাটিকে নিতে চায়। 


অন্যদিকে, প্রথম থেকেই পোশাক পরিয়ে সেবা শুশ্রূষা করা থেকে শুরু করে হাসপাতালে নিয়ে আসা বৃহন্নলার কাছেই আপাতত রয়েছে ওই সদ্যোজাত-সহ মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাটি। পাশাপাশি ওই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা এবং তাঁর মায়ের থাকার জন্যও অস্থায়ী একটি ঘরেরও ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে কাউন্সিলর কৌশিক রায়ের উদ্যোগে। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য ওই মহিলার চিকিৎসার জন্য যাবতীয় খরচ নিজে থেকেই গ্রহণ করেছিলেন বজবজ পৌরসভার চেয়ারম্যান গৌতম দাশগুপ্ত। বজবজ পৌরসভার কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন মা এবং সদ্যোজাত দুজনেই সুস্থ রয়েছে। 


 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)