আমফানেই শেষ নয়, বিশ্ব উষ্ণায়নে ঘনঘন ঝড় সইতে হবে বাংলাকে

বিশ্ব উষ্ণায়ন। তার ফলেই উত্তর মেরুতে বরফ গলছে, জলস্তর বাড়ছে।

Updated By: Jun 6, 2020, 11:42 PM IST
আমফানেই শেষ নয়, বিশ্ব উষ্ণায়নে ঘনঘন ঝড় সইতে হবে বাংলাকে

নিজস্ব প্রতিবেদন: আমফানের দাপট দেখেছে বাংলা। কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ নয়। বাংলাকে আরও অনেক ঝড়ের মুখোমুখি হতে হবে। এমনটাই জানালেন নদী বিশেষজ্ঞ সুপ্রতীম কর্মকার। তাঁর দাবি, গ্লোবাল ওয়ার্মিং-র প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বাংলায়, বিশেষত সুন্দরবনে। 

বিশ্ব উষ্ণায়ন। তার ফলেই উত্তর মেরুতে বরফ গলছে, জলস্তর বাড়ছে। এদিকে গঙ্গা আর ব্রহ্মপুত্রে জল থাকলেও, নদী বাঁধে তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নিম্নভাগে কমছে জল। এরপর তাপমাত্রা বেড়েছে নদীর। বঙ্গোপসাগরে দুই নদীর শীতল প্রবাহে মৌসুমী বায়ু পুষ্ট হত। বৃষ্টি হত স্বাভাবিক ভাবে। নদীর জলের তাপমাত্রা বেড়েছে। বঙ্গোপসাগরে এখন উষ্ণ স্রোত। এরফলেই ঘন ঘন নিম্নচাপ। তাপে বাড়ছে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ। আর তার জেরেই নিম্নচাপ পরিণত হচ্ছে ঘুর্ণিঝড়ে।

ফলাফল কী?

বাংলায় ঝড়ের আশঙ্কা। 
বাংলায় আরও বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের দাপট। 
ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব সহ্য করতে হবে বাংলাকে। 
জল কমছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রে, বাড়ছে তাপমাত্রা। 
তাপমাত্রা বাড়ার কারণেই শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ। 
ভারতীয় উপমহাদেশে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে।  
বাংলায় ঘূর্ণিঝড় বাড়বে। 

কারণ কী?

গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র যে পরিমাণ জল দেয়, সে পরিমাণ জল বঙ্গোপসাগরে ১০০-১২০ কিমি শীতল জলের প্রবাহ তৈরি করে। এই স্তরের ওপর দিয়ে যখন মৌসুমি বায়ু আসে তখন প্রচুর জলীয় বাষ্প নিয়ে আসে।
এই অঞ্চলে বৃষ্টি নামায়। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রের জল কমছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বঙ্গোপসাগরের জল স্তরের তাপমাত্রা বাড়ছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রা ছিল ২৪-২৮ ডিগ্রি , সেটা হয়েছে ৩২-৩৫ ডিগ্রি। তাপমাত্রা পরিবর্তনের ফলে ঝড়ের শক্তি বাড়ছে। যখন নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে, তখন সে জলীয় বাষ্প বেশি পাচ্ছে। ফলে শক্তি হচ্ছে বেশি। ঘন ঘন নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। আগে প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে একটা ঝড় আসত। প্রতি বছর আসত। কিন্তু তাতে বদ্বীপের সেভাবে ক্ষতি হত না। কিন্তু ঝ়ড়ের শত্তি বাড়তে লাগল ১৯৮০ সালের পর থেকে। তখন থেকে বাংলার প্রচুর ক্ষতি হতে লাগল। গত এক দশকে আরও বেড়ে গিয়েছে। আরও বাড়বে। 

পরিবেশ স্থানীয় ব্যাপার নয়। সামগ্রিক বিষয়। উত্তর মেরুর বরফ গললে তার প্রভাব পড়বে সুন্দরবনে। ভাঙছে  ঘোড়ামারা দ্বীপ। তিন ভাগ ভেঙে গেছে। লোহাচড়া ডুবে গিয়েছে। জম্বু দ্বীপের অবস্থাও শোচনীয়। সুন্দরবনও তার প্রভাব পেতে আরম্ভ  করেছে। আর সুন্দরবন না থাকলে কলকাতা তছনছ হয়ে যাবে। অয়েল স্পিল হওয়া মানে সেখানকার বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হচ্ছে। একই ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশের সুন্দরবনে। জলে তেল পড়েছিল। তার ফলে এখনও ওই অঞ্চলে ক্ষতি হয়েছিল। ১৯৯৫ অস্ট্রেলিয়ায় এমন ঘটনা  ঘটেছিল, সেখানে এখনও ম্যানগ্রোভ গড়ে উঠতে পারছে না। 

আরও পড়ুন- দুধ-হলুদ, দারচিনি-আদা- এমন ৪ ভাগে চলছে আর্য়ুবেদের 'করোনা পরীক্ষা'

.