ন্যাটোর হেলিকপ্টার হামলা, নিহত ২৮ পাক সেনা

অ্যাবটাবাদের ওয়াজিরিস্তান হাভেলিতে মার্কিন নেভি সিলের লাদেন-নিধন অভিযানের পরই ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ কূটনৈতিক চোরাস্রোত শুরু হয়েছিল। শনিবার ভোররাতে আফগানিস্তান সীমান্তের পাক সেনা ঘাঁটিতে ন্যাটো বাহিনীর হেলিকপ্টার হানার পর সেই টানাপোড়েন প্রকাশ্য সংঘাতের চেহারা নিল।

Updated By: Nov 26, 2011, 04:23 PM IST

অ্যাবটাবাদের ওয়াজিরিস্তান হাভেলিতে মার্কিন নেভি সিলের লাদেন-নিধন অভিযানের পরই ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল। শনিবার ভোররাতে আফগানিস্তান সীমান্তের পাক সেনা ঘাঁটিতে ন্যাটো বাহিনীর হেলিকপ্টার হানার পর সেই চোরাস্রোত প্রকাশ্য সংঘাতের চেহারা নিল।
আদিবাসী অধ্যুষিত `ফেডেরালি অ্যাডমিনিস্টার্‍ড ট্রাইবাল এরিয়া (ফাটা)`-র মোহামন্দ এজেন্সিতে মার্কিন অ্যাপাচে`র ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রে মৃত্যু হয়েছে ২৮ জন পাক সেনার। এঁদের মধ্যে দু`জন অফিসারও রয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ৭ পাক ফৌজি।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ কিয়ানির দফতরের অভিযোগ, `কোনও উস্কানি ছাড়াই উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মোহামন্দ এজেন্সির বেইজাই জেলার সালালা চেকপোস্টে এই হামলা চালানো হয়েছে।` নিহত ও আহত পাক সেনারা ওই অঞ্চলে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই মোতায়েন ছিলেন বলে দাবি ইসলামাবাদের।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সরকার আফগানিস্তানে অবস্থানরত ন্যাটো সেনাদের রসদ সরবরাহের সীমান্তবর্তী সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে। খাইবার-পাখতুনওয়া (পূর্বতন উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ) এবং `ফাটা` প্রদেশ সন্নিহিত এই সীমান্ত সড়কগুলির মাধ্যমে দক্ষিণ আফগানিস্তানে মোতায়েন ন্যাটোর সেনাদের প্রায় ৮০ ভাগ রসদ সরবরাহ করা হয়। ফলে যথেষ্ট চাপে পড়েছে, হামিদ কারজাইয়ের মুলুকে তালিবান দমন অভিযানে নিয়োজিত আমেরিকার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী।

এই পরিস্থিতিতে কাবুলে ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহযোগী বাহিনীর (আইএসএএফ) মুখপাত্র জানান, এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা সম্পর্কে তাঁরা জেনেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন তাঁরা।
আফগান সীমান্তবর্তী ওই অঞ্চলে বেশ কয়েক মাস ধরেই তালিবান জঙ্গিদের অবস্থান লক্ষ করে ন্যাটো আকাশ পথে হামলা চালিয়ে আসছে। গত বছর ওই সীমান্তের নিকটবর্তী অঞ্চলে মার্কিন হেলিকপ্টারের হামলায় দুই পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ার জেরে আফগানিস্তানে অবস্থানরত বিদেশি সেনাদের রসদ সরবরাহের পথ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদের উষ্মা প্রশমনের জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে হয় ওবামা সরকারকে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এবারও সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।
চপার হামলার কড়া নিন্দা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে এদিন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। আমেরিকা থেকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, ন্যাটোর হামলার প্রতিবাদে সর্বত্রই সরব হয়েছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতরা। 

.