Bangladesh: বাংলাদেশে ভারতের রফতানি কমল ৯ শতাংশ, পাকিস্তান কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে?

Bangladesh: একই সময় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে ভারত থেকে পণ্য আমদানি। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫২ দশমিক ১ মিলিয়ন (২০৫ কোটি ২১ লাখ) ডলারের

Updated By: Dec 30, 2024, 02:13 PM IST
Bangladesh: বাংলাদেশে ভারতের রফতানি কমল ৯ শতাংশ, পাকিস্তান কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে?

সেলিম রেজা, ঢাকা: চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি বেড়েছে ২৭ শতাংশের বেশি। একই সময়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে বাংলাদেশের। একই সঙ্গে সম্পর্কে কিছুটা শীতল ভাব দেখা যাচ্ছে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে। এরই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে দুই দেশ থেকে পণ্য আমদানির পরিসংখ্যানে।

আরও পড়ুন-ভোটের মুখে বড় ঘোষণা কেজরির! প্রতিমাসে ১৮ হাজার 'পুরোহিত ভাতা'...

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয় মূলত পোশাক শিল্পের কাঁচামাল ও রাসায়নিক, কাচশিল্পের কাঁচামাল ভাঙা কাচ, প্লাস্টিক ও রাবার শিল্পের কাঁচামাল, খনিজ পদার্থ ও পেঁয়াজ-আলুসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৭৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন (১৭ কোটি ৯৪ লাখ) ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে দেশটি থেকে পণ্য আমদানির পরিমাণ ছিল ১৪১ মিলিয়ন (১৪ কোটি ১০ লাখ) ডলারের। এ হিসাব অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে এক প্রান্তিকে পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি বেড়েছে ২৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।

একই সময় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে ভারত থেকে পণ্য আমদানি। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫২ দশমিক ১ মিলিয়ন (২০৫ কোটি ২১ লাখ) ডলারের। যদিও আগের অর্থবছরের একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৬৭ দশমিক ২ মিলিয়ন (২২৬ কোটি ৭২ লাখ) ডলারের। সে অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তুলনায় আমদানি কমেছে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

তবে এখনো বাংলাদেশে পণ্য আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস ভারত। চিনের পরই দেশটি থেকে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পরিমাণে পণ্য আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও বাংলাদেশের শীর্ষ ২০ আমদানির উৎস দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। তখন ভারত থেকে ৯ বিলিয়ন (৯০০ কোটি) ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছিল, যা মোট আমদানির ১৪ শতাংশের বেশি। আর সর্বোচ্চ পণ্য আমদানি হয়েছিল চীন থেকে, যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এটি ছিল মোট আমদানির ২৬ শতাংশের বেশি। গত অর্থবছরে আমদানি পণ্যের উৎস হিসেবে পাকিস্তানের অবস্থান ছিল তালিকার ২০তম। দেশটি থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৬২৭ মিলিয়ন (৬২ কোটি ৭০ লাখ) ডলার। মোট আমদানিতে দেশটির অবদান ছিল মাত্র ১ শতাংশ। তবে সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু করায় দেশটি থেকে আমদানির পরিমাণ বাড়ছে।

পাকিস্তান থেকে বাণিজ্য আগেও বাড়তে পারতো বলে মনে করছেন ভারতীয় বাজাজ ব্রান্ডের মোটর সাইকেলের বাংলাদেশের সার্ভিস ম্যানেজার আল আমরান। জি ২৪ ঘন্টাকে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের অনেক রফতানি করার মতো সুবিধাজনক পণ্য রয়েছে। তবে এতদিন তা আসতে পারেনি, এখন আসছে। দুই দেশের মধ্যে ভিসা বন্ধ থাকায় হয়তো ভারত থেকে আমদানি কমেছে। আর এখন পাকিস্তান থেকে বাড়লেও পরিমাণের দিক থেকে ভারত থেকেই আমদানি বেশি থাকবে। কারণ ভারত আমাদের প্রতিবেশী এবং বন্ধুপ্রতিম দেশ। আর ভবিষ্যতেও বাণিজ্যিক সম্পর্কগুলোর মূল নিয়ামক থাকবে চাহিদা ও সরবরাহ।’

বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতারা অবশ্য বলছেন, ভারত থেকে আমদানি কমাটা রাজনৈতিক কারণের চেয়ে বিনিয়োগ পরিবেশের সঙ্গে বেশি সম্পর্কযুক্ত। এ বিষয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক পরিচালক এসএম জিল্লুর রহমান আজাদ জি ২৪ ঘন্টাকে বলেন, ‘ভারত থেকে মূলত যন্ত্রপাতি এবং শিল্পের কাঁচামাল আমদানি হয় বেশি। কিন্তু সামগ্রিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় আমদানি কিছুটা কমেছে। তবে এখনো ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের একটি বড় অংশ আসে ভারত থেকে। তাই এখানে কোনো সরবরাহ সংকট হলে বড় সমস্যা তৈরি হবে। কিন্তু পাকিস্তান থেকে মূলত তুলা ছাড়া তেমন কোনো পণ্য আমদানি হয় না। আবার পাকিস্তানে আমাদের কোনো রফতানি নেই। দেশটির বাজার ছোট হওয়ায় এবং রফতানির জন্য কোনো প্রচারণা না থাকায় এমনটা হয়েছে। তবে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সখ্য এখন আগের চেয়ে বেড়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে কূটনৈতিক পর্যায়ে এই তৎপরতা চোখে পড়ছে।’

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.