ভারতকে কোণঠাসা করতে তিব্বতিদের মনে ‘চিনা প্রেমের বীজ’ বোনার বার্তা বেজিংয়ের!
এই খেদের ইতিহাস কোনও হালফিলের ঘটনা থেকে তৈরি হয়নি। ১৯০৯ সালে মঞ্চু সম্রাটের তিব্বত দখলের পর তত্কালীন দলাই লামা ভারতে আশ্রয় নেন
নিজস্ব প্রতিবেদন: তিব্বতকে ‘দুর্ভেদ্য দুর্গ’ বানানোর উপর জোর দিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। কমিউনিস্ট পার্টির এক বৈঠকে চিনা প্রেসিডেন্টের বার্তা, তিব্বতকে চিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিব্বতিদের মনে ‘চিনা প্রেমের বীজ’ বুনে দিতে নির্দিষ্ট কিছু পরামর্শও জিনপিং এ দিন দিয়েছেন বলে চিনা সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া দাবি করেছে।
তিব্বতের উপর সর্বক্ষণের নজরদারি চিনের তো রয়েছে, তবে হঠাত্ বাড়তি জোর দেওয়ার প্রয়োজন কেন হয়ে পড়ল, সেই উত্তরই খুঁজছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, অন্যতম কারণ হলো সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গালোওয়ান-লাদাখ বিবাদ. যা কূটনৈতিকভাবে বড় ধাক্কা খেয়েছে চিন। ভারত-চিন সীমান্তের এই বিবাদে বেজিংয়ের কাছে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে তিব্বত, এ কথা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন জিনপিং। সেই কারণেই, এ দিন বৈঠকে জিনপিং নাকি বলেছেন, তিব্বতি যুবাদের মনে চিনা প্রেমের বীজ বুনে দিতে হবে। সেখানকার স্কুল-কলেজে রাজনৈতিক এবং আদর্শগত শিক্ষা প্রদান করতে হবে। যাতে আগামী দিনে তরুণ তিব্বতিদের মনে চিন নিয়ে কোনও খেদ না থাকে।
তবে, এই খেদের ইতিহাস কোনও হালফিলের ঘটনা থেকে তৈরি হয়নি। ১৯০৯ সালে মঞ্চু সম্রাটের তিব্বত দখলের পর তত্কালীন দলাই লামা ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর দেশে ফিরে চিনা আগ্রাসন থেকে মুক্ত করে ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ ঘোষণা করেন তিনি। সে দিন থেকেই এক প্রকার ‘ছায়াযুদ্ধ’ শুরু হয় চিন এবং তিব্বতের মধ্যে। আর এই প্রেক্ষাপটে প্রত্যক্ষ মদত দিয়ে চিনের কাছে অন্যতম শত্রু চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে ভারত।
আরও পড়ুন- ভিডিয়ো: কেঁপে উঠল ইউটিউব! আগ্নেয়গিরি তৈরি হলো ১০ হাজার লিটার কোকাকোলায়
সম্প্রতি গালওয়ান বিবাদ ঘটনায় চিনের কাছে স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে গিয়েছে, সে অরুণাচল হোক বা লাদাখ, সীমান্ত রক্ষায় ভারত এবার কঠোর হাতে তার জবাব দেবে। সেক্ষেত্রে ভারতের তথাকথিত ‘বন্ধু’ তিব্বতকে পাশে পেতে চিন মরিয়া। তাই, এবার দমননীতির পরিবর্তে কৌশলগতভাবে বন্ধুত্বের পথে হাঁটার কথা ভাবছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তিব্বতের তরুণ প্রজন্মের মনের ভিতর যদি ‘চিনা প্রীতি’ ঢুকিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে আগামী দিনে ভারতকে কোণঠাসা করতে সহজ হবে চিনের। তবে, সেটা আদৌ সফল হবে কিনা, হংকংয়ের পরিস্থিতিই তা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে বেজিংয়কে।