China: বিয়ে করা প্রায় সম্ভবই হচ্ছে না, জন্মহারও তলানিতে! সংকটে দিশেহারা প্রশাসন...
চিনে মহিলারা বিশেষ করে দেরি করে বিয়ের পরিকল্পনা করছেন। আবার দেরি করে বিয়ে করেও যে চট করে সন্তান ধারণ করছেন, তা-ও নয়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চিনে মহিলারা বিশেষ করে দেরি করে বিয়ের পরিকল্পনা করছেন। আবার দেরি করে বিয়ে করেও যে চট করে সন্তান ধারণ করছেন, তা-ও নয়। কেন সেখানে মহিলারা এমনটা করে চলেছেন? চিনে আসলে দ্রুতগতিশীল অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনই এটা ঘটাচ্ছে। কেমন প্রগতি? সেখানেও বৈষম্য বইকি! চিনের এক অংশ যেখানে সেই উন্নতির শরিক হয়ে জীবন যাপন করছেন, অন্য একটি বড় অংশ তার শরিক হতে না পেরে গুমরে মরছেন, পিছিয়ে পড়ছেন। তবে দুই শ্রেণির মধ্যেই বিয়ে ও সন্তানধারণের প্রবণতাটি একরকম। একদল ব্যস্ততার জেরে বিয়ে বা সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। অন্য দলটি লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে বিয়ে করা থেকে পিছিয়ে আসছে। আঈর যদি বা ঠেলায় পড়ে কোনও ভাবে বিয়ে করেও নিচ্ছে, সন্তান ধারণ পিছিয়ে দিচ্ছে স্রেফ খরচ সামলাতে পারবে না বলে। চিনে আসলে শিক্ষাক্ষেত্রে খরচের পাশাপাশি সন্তানপালনের সামগ্রিক খরচখরচাও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। পাল্লা দিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিয়ের হারও। আর এসবের জেরেই চিনে এক দশক ধরেই একটু একটু করে জন্মহার কমেছে। তবে এই পুরো ব্যাপারটা কেন এখন এভাবে স্পষ্ট হয়ে চোখে পড়ছে? তারও কারণ সমাজ-অর্থনীতিবিদেরা বার করেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এটা ঘটছে কোভিডের জেরে। কোভিডে বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছে চিন। সেটা আর সামলে উঠতে পারছে না। অন্তত তেমনই জানিয়েছে চিনের ন্যাশনাল হেল্থ কমিশন।
আরও পড়ুন: Donald Trump: গোয়েন্দারা যেন এখনই বাজেয়াপ্ত নথিতে হাত না দেন, এফবিআই'কে শাসানি ট্রাম্পের
চিনের ন্যাশনাল হেল্থ কমিশনের ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, আর্থিক এবং সামাজিক-- দুদিক থেকেই দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে চিন। সেই সূত্রেই এই পরিণতি অনুমান করা হচ্ছে। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, অধিকাংশ মহিলাই বিয়ের পরিকল্পনা পিছিয়ে দিচ্ছেন। আগের তুলনায় মাতৃত্ব গ্রহণ করার পরিকল্পনাও পিছিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। তা ছাড়া, নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বড় শহরে গিয়ে থাকার প্রবণতা বাড়ছে। উচ্চশিক্ষা শেষ করতেই অনেকটা সময় পেরিয়ে যাচ্ছে তাঁদের। এর পরে চাকরি। আর তখন কাজের চাপের প্রভাব পড়ছে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন ও পরিবারের উপর, যা প্রকারান্তরে চাপ ফেলছে পরিবার পরিকল্পনার উপরেও।
বিশেষজ্ঞেরা আরও ব্যাখ্যা দিচ্ছেন-- চিনের কড়া জিরো-কোভিড নীতিও দম্পতিদের মধ্যে সন্তান জন্ম দেওয়ার ইচ্ছে কমিয়ে দিয়েছে। স্বভাবতই বিয়ের আয়োজনের ক্ষেত্রেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সম্প্রতি এমন এক রিপোর্টও উঠে এসেছে, যা জানাচ্ছে, এ বছর চিনের নিম্নগামী জন্মহার প্রায় রেকর্ড করতে চলেছে। আর এই সামগ্রিক পরিস্থিতিটা নিয়েই বিশেষ চিন্তিত হয়ে পড়েছে প্রশাসন।
কোন পদক্ষেপ করেছে চিন?
এর আগেও যখন এই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছিল, তখন করের ক্ষেত্রে নানারকম ছাড়ের প্যাকেজ এনেছিলে চিন প্রশাসন। তা ছাড়া মেটারনিটি লিভ দীর্ঘ করেছিল, মেডিক্যাল ইনসিওরেন্স বাড়িয়ে দিয়েছিল, হাউজিংয়ের ক্ষেত্রে ভরতুকি দিয়েছিল, তৃতীয় সন্তানের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। এবারে দেখার সরকার নতুন কী ভাবে।