আতঙ্কের ঘোরেই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী আমেরিকা

কানেক্টিকাটের প্রাথমিক স্কুলে বন্দুকবাজের হামলায় শিশুহত্যার আতঙ্ক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি আমেরিকা। ঘাতক অ্যাডাম ল্যানজার কাছে যে পরিমাণ বুলেট ছিল তাতে স্কুলের সব শিশুর মৃত্যু হতে পারত বলে জানা গেছে। নিহত শিশু সহ অন্যদের শেষকৃত্য শুরু হয়েছে। নিউটাউনের রাস্তায় বেরিয়েছে মোমবাতি মিছিল। শোকের এই পরিবেশের মধ্যেই নতুন করে জোরদার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি।

Updated By: Dec 18, 2012, 10:31 AM IST

কানেক্টিকাটের প্রাথমিক স্কুলে বন্দুকবাজের হামলায় শিশুহত্যার আতঙ্ক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি আমেরিকা। ঘাতক অ্যাডাম ল্যানজার কাছে যে পরিমাণ বুলেট ছিল তাতে স্কুলের সব শিশুর মৃত্যু হতে পারত বলে জানা গেছে। নিহত শিশু সহ অন্যদের শেষকৃত্য শুরু হয়েছে। নিউটাউনের রাস্তায় বেরিয়েছে মোমবাতি মিছিল। শোকের এই পরিবেশের মধ্যেই নতুন করে জোরদার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি। 
স্যান্ডি হুক প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা সাড়ে ৬০০-র বেশি। পুলিস আসার খবর পেয়ে গত শুক্রবার অ্যাডাম ল্যানজা নিজেই নিজেকে গুলি না করলে মৃত্যু হতে পারত সমস্ত খুদে পড়ুয়ার। স্কুলের ভিতরে পাওয়া গেছে অসংখ্য অব্যবহৃত বন্দুকের গুলি। তিরিশটি করে গুলিভর্তি একাধিক ম্যাগাজিন নিয়ে আততায়ী স্কুলে ঢুকেছিল বলে জানিয়েছে পুলিস। খুনের জন্য ব্যবহৃত বুলেটগুলি অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল বলে  নিহত শিশুদের ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক স্কুলে হত্যালীলা চালানোর আগে নিজের মাকে খুন করে অ্যাডাম ল্যানজা। তার মা ন্যান্সি ল্যানজার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি জানিয়েছেন ছেলেকে নিয়ে সবসময়ই চিন্তিত ছিলেন ন্যান্সি। মানসিক ভাবে অসুস্থ ছেলে অ্যাডাম আত্মহত্যা করতে পারে, এই চিন্তা ন্যান্সিকে গ্রাস করে রাখত বলে জানিয়েছেন তাঁর বন্ধু। মার্কিন আইন অনুযায়ী সে দেশে আত্মরক্ষার্থে যে কেউ আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে পারেন। কানেক্টিকাটের ঘটনার পর সেই আইন পরিবর্তনের দাবি জোরালো হয়েছে। আততায়ী অ্যাডাম ৯ বছর বয়স থেকে রাইফেল চালাতে পারদর্শী ছিল বলে জানা গেছে। 
আমেরিকায় বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। তবুও, স্যান্ডি হুকের রক্তস্রোত নাড়িয়ে দিয়েছে মার্কিন জনগণকে। বন্দুক নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন তাঁরা। অস্ত্র আইনে পরিবর্তন চেয়ে বারাক ওবামার কাছে দাবি জানিয়েছেন রাজনীতিবিদরাও।
তবে, আছে অন্য মতও। মার্কিন নাগরিকদের অনেকের মতে অস্ত্র আইনে কড়াকড়ি করে লাভ হবে না। খুন যে করতে চাইবে, সে যে কোনও ভাবে ঠিক যোগাড় করে ফেলবে আধুনিক অস্ত্র।
প্রথমবার ক্ষমতায় আসার আগে বন্দুক নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছিলেন বারাক ওবামা। যদিও, ওভাল অফিসে গত চার বছরে সে কাজ করেননি তিনি। কানেক্টিকাটের ঘটনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান, দুদলের মধ্যেই অস্ত্র আইন পরিবর্তনের পক্ষে-বিপক্ষের লোক রয়েছেন।
মার্কিন সেনেটে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। প্রতিনিধিসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা। এই অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রাইম মিনিস্টার জন হাওয়ার্ডের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ওবামা জনগণের বন্দুকের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেন কিনা এখন সে দিকেই তাকিয়ে তামাম আমেরিকাবাসী।

.