রানাঘাটের পর লস অ্যাঞ্জেলস, হলিউড খুঁজে পেল তাদের রানু মণ্ডলকে
ফাঁকা শুনশান স্টেশনে দাঁড়িয়ে তাঁর অপেরা গান মন জয় করে নিয়েছে নেটিজেনদের।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রানাঘাট স্টেশনে 'এক পেয়্যার কা নাগমা হ্যায়' গেয়ে ভাইরাল হয়েছিলেন রানু মণ্ডল। তবে এ রকম অসাধারণ প্রতিভা ছড়িয়ে সারা বিশ্বজুড়েই। পৃথিবীর অপর প্রান্তের বড় রেল স্টেশনে খোঁজ মিলল আরেক রানু মণ্ডলের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলস স্টেশনে গান গেয়ে ভাইরাল হলেন এক ভিখারিনী। নাম এমিলি জামৌর্কা। ফাঁকা শুনশান স্টেশনে দাঁড়িয়ে তাঁর অপেরা গান মন জয় করে নিয়েছে নেটিজেনদের।
ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে ফাঁকা শুনশান লস এঞ্জেলসের সাবওয়েতে দাঁড়িয়ে এমিলি। হাতে ধরা কিছু ক্যারিব্যাগ। পেছনে একটি শপিং কার্টে রাখা সর্বস্ব। সেভাবে স্টেশনে লাইনের পাশে দাঁড়িয়েই মধুর কন্ঠে গান গাইছেন এমিলি। বেশ কঠিন অপেরা সংগীত অবলীলায় গেয়ে চলেছেন তিনি। ফাঁকা স্টেশনের শুন্যতা যেন আলাদা এক মাত্রা যোগ করেছে তাঁর গানে। তাঁর গানের সুরে যেন ভেসে যাচ্ছে স্টেশন। ভিডিয়োটি পোস্ট করে লস এঞ্জেলস পুলিস ডিপার্টমেন্টও।
4 million people call LA home. 4 million stories. 4 million voices...sometimes you just have to stop and listen to one, to hear something beautiful. pic.twitter.com/VzlmA0c6jX
— LAPD HQ (@LAPDHQ) September 27, 2019
স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করার সময়েই এক নিত্যযাত্রী হঠাত্ এমিলির গান শুনতে পান। তার পরে অনেকটা রানাঘাটের অতনুর মতোই মোবাইলে ভিডিয়োতে তুলে রাখেন এমিলির প্রতিভা। তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সেই ভিডিয়ো। মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় এমিলির গান। স্টেশনের ভিখারিনীর প্রতিভায় মুগ্ধ সকলেই। টুইটারে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ব্যক্তি ভিডিয়োটিতে লাইক দিয়েছেন। অনেকেই কমেন্টে লিখলেন, "প্রচারের অভাবে এভাবেই হয়তো লুকিয়ে আছে কত অজানা প্রতিভা।"
আরও পড়ুন: এবার উদিত নারায়ণের সঙ্গে গান রেকর্ড করলেন রানু মণ্ডল
লস এঞ্জেলস স্টেশনে তাঁর খোঁজে হাজির হয় একাধিক সংবাদসংস্থার প্রতিনিধিরা। তাঁদেরকে এমিলি জানান, তাঁর বয়স ৫২ বছর। কোনওদিন গান শেখেননি তিনি। তবে বেহালা ও পিয়ানো বাজানো শিখেছিলেন। মাত্র ২৪ বছর বয়সে রাশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তিনি। শিশুদের বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখিয়ে কোনওমতে চালাতেন এমিলি। তবে কয়েক বছর আগে হঠাত্ই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। চিকিত্সায় সর্বস্ব খোয়ান। তার পর থেকে স্টেশনে কার্ডবোর্ডের বিছানাই আশ্রয় তাঁর। স্টেশনে ও রাস্তায় গান করে ভিক্ষা করেই দিন কাটান।
তবে ফাঁকা স্টেশনে গান করতেই বেশি পছন্দ করেন বলে জানালেন এমিলি। তিনি বললেন, "আসলে ফাঁকা স্টেশনে অপেরার মতো এফেক্ট হয়। গানের সুর আরও মধুর শোনায়।" তাঁর ভিডিয়ো যে ভাইরাল হয়েছে তা জানতে পেরেছেন এমিলি। হলিউডের এজেন্টরাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে আগ্রহী। এ ব্যাপারে এমিলি বললেন, "আপাতত একটা মাথা গোঁজার আশ্রয় আর কিছু বাদ্যযন্ত্র পেলেই আমি কৃতজ্ঞ থাকব।"