'ট্রপিকাল ট্রাম্প' বলসোনারোকে হারিয়ে তৃতীয়বার ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি বামপন্থী লুলা
বলসোনারোর রাজনৈতিক রোল মডেল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নাড়িয়ে দেওয়া ক্যাপিটল দাঙ্গার মতো ঘটনা ব্রাজিলেও ঘটার ভয় পাচ্ছেন অনেকেই। বলসোনারো চার বছর আগে জয়লাভ করেছিলেন। লুলার ওয়ার্কার্স পার্টির (পিটি) সমর্থকরা সারা দেশের শহরগুলিতে এই জয় উদযাপন করেছেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রবীণ বামপন্থী নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা রবিবার ব্রাজিলের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচনে জিতেছেন।রাষ্ট্রপতি জাইর বলসোনারোকে হারিয়ে নিজের অসাধারণ রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন তিনি। বলসনার কীভাবে এই ফলাফলের প্রতিক্রিয়া জানাবেন সেইদিকে সকলের নজর থাকবে। বহু মাস ধরে তিনি দাবি করেছেন ব্রাজিলের ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম জালিয়াতিতে জর্জরিত এবং আদালত, মিডিয়া এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলি তার তাঁর ডানপন্থি আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। যদিও এর পক্ষে কোনও প্রমাণ ছাড়াই এই দাবি করেছেন বলসোনারো।
বিজয় প্রাক্তন ধাতুকর্মী লুলার জন্য এটি একটি অত্যাশ্চর্য প্রত্যাবর্তন। তিনি ২০১০ সালে ব্রাজিলের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি হিসাবে অফিস ছেড়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে একটি বিতর্কিত দুর্নীতির অভিযোগে ১৮ মাস জেলবন্দী করা হয়। সেই সময় তাঁর ইমেজ খারাপ হলেও এই অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি এবং তিনি ৭৭ বছর বয়সে আবার ফিরে এসেছেন তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য।
বলসোনারো, ভিট্রিওলিক কট্টরপন্থী রক্ষণশীল। তিনি ‘ট্রপিক্যাল ট্রাম্প’ নামেও পরিচিত। অন্যদিকে ব্রাজিল তার ১৯৬৪-১৯৮৫ সালের সামরিক একনায়কত্বের শেষে দেশে গণতন্ত্রে ফিরে আসার পর থেকে বলসোনারো প্রথম রাষ্ট্রপতি যিনি দ্বিতীয়বার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পাননি।
জানা গিয়েছে এই নির্বাচনে লুলা পেয়েছেন ৫১ শতাংশ ভোট অন্যদিকে বলসোনারোর জন্য রয়েছে ৪৯ শতাংশ
লুলার ওয়ার্কার্স পার্টির (পিটি) সমর্থকরা সারা দেশের শহরগুলিতে এই জয় উদযাপন করেছেন। রিও ডি জেনিরোতে আতশবাজি ফাটান হয় এবং সাও পাওলোতে সমর্থকদের উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখা যায়।
লুলা দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী সাও পাওলোতে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের অভ্যর্থনা জানিয়েছেন এবং ব্রাজিলের পতাকার ছবির পাশাপাশি ‘গণতন্ত্র’ লিখে টুইট করেছেন।
আরও পড়ুন: হ্যালোউইন উৎসবে দক্ষিণ কোরিয়ায় পদপিষ্ট ১৫১ জন, মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত বিশ্ব
বলসোনারো চার বছর আগে জয়লাভ করেছিলেন, কিন্তু কোভিড - ১৯ মহামারী প্রতিরোধে তার সরকার বিপর্যয় ঘটানোর জন্য সমালোচনার মুখে পড়েন। এর ফলে ব্রাজিলে ৬৮০,০০০ এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে একটি দুর্বল অর্থনীতি এবং মেরুকরণ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের উপর হামলা বলে মনে করেন অনেকে।
বলসোনারোর রাজনৈতিক রোল মডেল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নাড়িয়ে দেওয়া ক্যাপিটল দাঙ্গার মতো ঘটনা ব্রাজিলেও ঘটার ভয় পাচ্ছেন অনেকেই।
যদিও বলসোনারো যেভাবেই প্রতিক্রিয়া দেখান ১ জানুয়ারি থেকে লুলা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন।
বলসোনারোর অতি ডানপন্থী সহায়করা দুই অক্টোবর প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে আইনসভা এবং গভর্নরদের নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে এবং কংগ্রেসের বৃহত্তম শক্তি হতে চলেছে তাঁরা।