ঘরে খাবার নেই, খিদের জ্বালায় কাতর বাচ্চাদের মন ভোলাতে পাথর রাঁধল মা
কেনিয়ার মোম্বাসা শহরের এক মায়ের মর্মস্পর্শী কাহিনি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নিজস্ব প্রতিবেদন— ঘরে একটা চালের দানাও নেই। খিদের জ্বালায় কাঁদছে, ছটফট করছে সন্তানরা। অসহায় মা অঝোরে কাঁদছে। কিছুই করার নেই তাঁর। বড় কঠিন বেঁচে থাকা। তার চেয়েও কঠিন খিদের জ্বালা সহ্য করা। প্রাপ্তবয়স্ক মনকে পরিস্থিতি বোঝানো যায়! শিশুমন কি আর বোঝে! খিদের জ্বালায় কাতর ছেলেমেয়ের মন ভোলাতে মা শেষমেশ রান্না করার অভিনয় করলেন। বাচ্চারা খাবারের অপেক্ষা করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়বে! এই আশায় মা উনুনে পাথর চাপালেন। বাচ্চারা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ল।
কেনিয়ার মোম্বাসা শহরের এক মায়ের মর্মস্পর্শী কাহিনি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। পেনিনা বাহাতি কিতসাও নামের ওই বিধবা মহিলার দুর্দশার খবর প্রকাশ্যে আসে তাঁর এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে। সন্তানদের নিয়ে তিনি অভুক্ত রয়েছেন গত কয়েকদিন ধরে। এমন দুঃখজনক ঘটনা সামনে আসার পর অনেকে তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কিতসাও পড়াশোনা শেখেননি। স্বামী মারা যাওয়ার পর স্থানীয় একটি লনড্রিতে কাজ করতেন তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোরে সরকারি বিধিনিষেধের জন্য কাজ নেই তাঁর। আট সন্তানের মা কিতসা এখন অসহায়।
আরও পড়ুন— লকডাউনে বন্ধ জুতোর দোকানে মিলল ২০০টি গোখরো সাপ, পিটিয়ে মারল উন্মত্ত জনতা
কিতসার প্রতিবেশী প্রিসকা মোমানির গোটা ঘটনাটি সামনে এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাচ্চাদের কান্নার শব্দ শুনে কিতসার বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তার পরই সেই হৃদয়বিদারক ঘটনা দেখতে পান। কিতসাওকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসায় কেনিয়ার সরকার ও রেড ক্রসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। সহায় সম্বলহীন কিতসাও দুটি বেডরুমের যে বাড়িতে থাকেন সেখানে না আছে জল, না বিদ্যুতের সংযোগ। গত বছর গুণ্ডাদের হাতে নিহত হন তাঁর স্বামী। তার পর থেকেই অথৈ জলে পড়েছেন কিতসা। প্রসঙ্গত, পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় ৪০০। মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। দরিদ্র দেশে খুজলে পরে আরও অনেক এমন কিতসাদের পাওয়া যাবে, বলছেন কেনিয়ার জনগণ।