হিমালয়ে গাইড ছাড়া ট্রেকিং করা যাবে না, বড় সিদ্ধান্ত নিল নেপাল সরকার
নেপাল প্রশাসনের দাবি, ট্রেকিং করতে গিয়ে প্রতিবছর হিমালয়ের কোলে হারিয়ে যান ৪০ থেকে ৫০ জন বিদেশি পর্যটক। তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায় না।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রতি বছরই হিমালয় (Himalaya) অভিযান ও তুষারপাতে অগনিত মানুষ প্রাণ হারান। কয়েক মাস আগেও বেশ কয়েকজন বিদেশী প্রাণ হারিয়েছেন। বিশেষ করে শেরপার সাহায্য ছাড়া ট্রেক (Trekking) করার জন্যই হয়েছে একের পর এক দুর্ঘটনা। আর তাই এবার কঠিন পদক্ষেপ নিল নেপাল সরকার (Nepal Government)। স্থানীয় গাইড ও শেরপা ছাড়া হিমালয় অঞ্চলে একা একা ট্রেকিং নয়। বিদেশিদের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে নেপাল সরকার। আগামী ১ এপ্রিল থেকে প্রয়োগ হবে এই নতুন নিয়ম। বিদেশি ট্রেকারদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই নিয়ম চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কাঠমাণ্ডু।
নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের মুখপাত্র মণি রাজ লামিছনে বলেছেন, "একা হিমালয়ে ট্রেকিং করতে গিয়ে প্রতিবছরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন বিদেশিরা। এই সংখ্যা গত কয়েক বছরে উত্তরোত্তর বেড়েছে। এতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। তাই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হল।"
নেপাল প্রশাসনের দাবি, ট্রেকিং করতে গিয়ে প্রতিবছর হিমালয়ের কোলে হারিয়ে যান ৪০ থেকে ৫০ জন বিদেশি পর্যটক। তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায় না। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের মৃতদের উদ্ধার করাও সম্ভব হয় না বলে জানিয়েছে তারা।
মণি রাজ ফের যোগ করেছেন, "একা হিমালয়ে ট্রেকিং করতে গিয়ে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। এর ফলে ভুল বার্তা যাচ্ছিল। অনেক বিদেশিই মনে করেন ট্রেকিংয়ের পক্ষে নেপাল অত্যন্ত বিপজ্জনক জায়গা। সেই কারণেই এই পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিদেশি ট্রেকারদের নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
আরও পড়ুন: Germany Shooting: এবার চার্চেই চলল গুলি, জার্মানির হামবুর্গে ভয়াবহ হত্যাকান্ড; মৃত ৬ আহত বহু
আরও পড়ুন: Indonesia: ক্রমশ সমুদ্রের জলে তলিয়ে যাচ্ছে রাজধানী! শহর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে জরুরি ভিত্তিতে...
অন্যদিকে নেপালে ট্রেকিং নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছে ট্রেকিং এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব নেপাল বা টিএএএন। সংস্থাটির দাবি, নেপালে নিরাপদে ও সংগঠিতভাবে ট্রেকিংয়ের আয়োজন করা হয়। টিএএএনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রেকারদের স্ট্যান্ডার্ড পারমিট দেওয়া থেকে শুরু করে বীমা পর্যন্ত দেওয়া হয়। এছাড়া ট্রেকিংয়ের যাত্রাপথে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে চেকপয়েন্টও তৈরি করা হয়েছে।
হিমালয়ে ট্রেকিংয়ের ক্ষেত্রে নতুন এই নিয়ম শুধু বিদেশিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড। মণি রাজ বলেচন, "এতে কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি ট্রেকিংকে আরো সংগঠিত করা যাবে।"
টিএএএনের দাবি, ২০১২ থেকেই ট্রেকিংয়ের ক্ষেত্রে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। সেই বছর থেকেই ‘এক ট্রেকার এক গাইড’ পদ্ধতি চালু করা হয়। তবে নেপাল সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে তারা।
নেপাল প্রশাসনের দাবি, দুই ধরনের বিদেশি ট্রেকার তাদের দেশে আসেন। তাদের মধ্যে একদল হল স্বাধীন ট্রেকার, যারা একা হিমালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেকিং করেন। তারা কোনও গাইডের ধার ধারে না তারা। অন্য ধরনের ট্রেকাররা অবশ্য বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমেই পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে পছন্দ করেন। প্রথম ধরনের ট্রেকারদের দুর্ঘটনার কবলে পড়ার সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছে নেপাল প্রশাসন। আর তাই এমন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হল।