মুখ্যমন্ত্রীর সিঙ্গাপুর সফর উস্কে দিচ্ছে নেতাজির স্মৃতি

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গাপুর সফর উস্কে দিচ্ছে এক মহান দেশপ্রেমিকের স্মৃতি।

Updated By: Aug 18, 2014, 11:03 AM IST
মুখ্যমন্ত্রীর সিঙ্গাপুর সফর উস্কে দিচ্ছে নেতাজির স্মৃতি

ওয়েব ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গাপুর সফর উস্কে দিচ্ছে এক মহান দেশপ্রেমিকের স্মৃতি। সুভাষচন্দ্র বসু। অত্যাধুনিক শহরের আত্মায় এখনও জেগে আছেন নেতাজি। আজ বিকেলে শহরের এসপ্ল্যানেড পার্কে আজাদ হিন্দ বাহিনীর শহিদস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অত্যাধুনিক শহর। পরিকাঠানো উন্নয়নে ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জনের পর, আজ বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্য কেন্দ্র। এই ঝাঁ চকচকে, রঙিন, অত্যাধুনিক শহরেরও আছে এক সাদাকালো ইতিহাস। আর সেই ইতিহাস জুড়ে রয়েছেন এক বাঙালি। শহর কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। সুভাষচন্দ্র বসু।

তারিখটা ছিল ১৯৪৩ সালের ২ জুলাই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তখন দ্বিধাবিভক্ত বিশ্ব। দেশ স্বাধীন করার স্বপ্ন নিয়ে সিঙ্গাপুরে পা রাখলেন ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ প্রধান সুভাষন্দ্র বসু। দুদিন পরে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সর্বাধিনায়কের পদ গ্রহণ করে তিনি হয়ে উঠলেন নেতাজি। আর্জি হুকুমত-এ আজাদ হিন্দ বা আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে।

নেতাজির নেতৃত্বে পরের দুবছর আজাদ হিন্দ বাহিনী যা করেছে তা গৌরবের ইতিহাস। উনিশশো পঁয়তাল্লিশের মে মাসে বার্লিনের পতনের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আক্রমণের তীব্রতা বাড়াল আমেরিকা। ব্রিটিশ রয়্যাল আর্মিও পূর্ব এশিয়ায় তার হারানো জমি পুনর্দখল শুরু করল। পিছু হঠল আজাদ হিন্দ ফৌজ। একের পর এক জমি হারাতে হারাতে নেতাজি বুঝলেন পূর্ব এশিয়া থেকে স্বাধীনতার লড়াই আর সম্ভব নয়। কিন্তু, পূর্ব এশিয়ায় আজাদ হিন্দ বাহিনীর জওয়ানদের আত্মত্যাগকে অমর করে  যেতে চাইলেন তিনি। নেতাজির নির্দেশে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় সিঙ্গাপুরের এসপ্ল্যানেড পার্কে তৈরি হল আজাহ হিন্দ বাহিনীর শহিদস্তম্ভ। স্তম্ভে লেখা ফারসি ভাষায় তিনটি শব্দ। ইত্তেফাক, অর্থাত্ একতা।ইতমাদ অর্থাত্ বিশ্বাস এবং কুরবানি, অর্থাত্ বলিদান। আটই জুলাই সেই শহিদ বেদিতে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে অনিশ্চিতের উদ্দেশে উড়ে গেলেন নেতাজি।

সাতদিনের মধ্যেই সিঙ্গাপুর পুনর্দখল করে ব্রিটিশ রয়্যাল আর্মি। কমান্ডার লর্ড মাউন্টব্যাটেনের নির্দেশে ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয় আজাদ হিন্দ বাহিনীর শহিদস্তম্ভ। পঞ্চাশ বছর বাদে সিঙ্গাপুর সরকার নতুন করে তৈরি করেছে সেই শহিদস্তম্ভ। একই জায়গায়। নেতাজি রয়ে গিয়েছেন সিঙ্গাপুরের স্মৃতিতে।

.