নিজস্ব প্রতিবেদন: রাত পোহালেই ওয়াঘার ওপারে ভোট। সন্ত্রাস আর সেনার অদৃশ্য সেন্সরশিপের ছায়ায় ভোট দেবে পাকিস্তান। অধিকাংশ জনমত সমীক্ষায় নওয়াজ শরিফের দলের সঙ্গে ইমরান খানের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তবে, সেনার হাত মাথায় থাকায় ইমরানই বাজিমাত করতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে। তবে ভোটের ফল যাই হোক না কেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে পাকিস্তান। তাই, সতর্ক নজর রাখছে দিল্লিও।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সেনাশাহি যে দেশে বারবার গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরেছে, সেখানে সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষের পর ভোট হচ্ছে। এমনিতে শুনতে ভাল লাগলেও পাকিস্তানে অলিগলিতে কান পাতলে সেনার অদৃশ্য হাতের কথাই শোনা যাচ্ছে বারবার।


ভোটের পাটীগণিত-
বুধবার পাক জাতীয় আইনসভার ২৭২ আসনে ভোট।
বালুচিস্তানের ১৬, সিন্ধে ৬১, পঞ্জাবে ১৪১, জাতীয় রাজধানী অঞ্চল ইসলামাবাদে ৩, খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৩৯ ও স্বশাসিত উপজাতি অঞ্চলের ১২টি আসনে ভোট নেওয়া হচ্ছে।
বালুচিস্তান, সিন্ধ, পঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক আইনসভার ভোটও একই দিনে।


পাক জাতীয় আইনসভার মোট আসন ৩৪২। ম্যাজিক ফিগার- ১৭২। যদিও, ভোট হচ্ছে ২৭২ আসনে। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ আসন এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ১০ আসন, সরাসরি ভোটে প্রাপ্ত আসনের সমানুপাতে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ভাগ হয়। ফলে, ২৭২ আসনের মধ্যে ১৩৭টি আসন পেলেই জয় নিশ্চিত।


দুর্নীতির দায়ে জেলে নওয়াজ শরিফ। তবে, তাঁর ছবিকে সামনে রেখেই ভোটে লড়ছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন)। দুর্নীতির দায়ে আদালতের নির্দেশে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা আসিফ আলি জারদারিরও দেশ ছাড়া বারণ। ফলে, এমতাবস্থায় মসনদের লড়াইয়ে রয়েছেন প্রধানত ৩ নেতা- পিএমএলএন নেতা শাহবাজ শরিফ (নওয়াজ শরিফের ভাই), পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ইমরান খান এবং পিপিপি নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।


প্রসঙ্গত, ওয়াঘার এপারে যেমন দিল্লির রাস্তা উত্তরপ্রদেশ হয়ে যায় তেমনই ওপারে ইসলামাবাদের রাস্তা যায় পঞ্জাব হয়ে। অধিকাংশ জনমত সমীক্ষা বলছে, এবারের ভোটে নওয়াজ শরিফের দলের সঙ্গে ইমরান খানের দলের লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। কিন্তু, পাক পঞ্জাবে নওয়াজের দলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন ইমরান। এটাই এখন বড় চিন্তা শরিফ খানদানের। বরং, লাড়াইয়ে বস্তুত অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি।


পাক ভোটে যেই জিতুন না কেন, এবার নতুন প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে পাকিস্তান। আর সেখানেই সব নজর ইমরান খানের দিকে। সমর্থকরা বলছেন, ভোটের বাজারে নাকি উড়ে যাবে প্রাক্তন স্ত্রী রেহাম খানের সব অভিযোগ। এছাড়া, ইমরানের প্রধান দুই প্রতিপক্ষ জারদারি এবং শরিফের গায়ে দুর্নীতির দাগ। পাশাপাশি, সেনা সমর্থন করায় ক্যাপ্টেন বাজিমাত করতে পারেন বলে আশায় সমর্থকরা।


অতীতে পাকিস্তানের ভোটে কখনই ধর্মীয় দলগুলি সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এবার পরিস্থিতি অন্যরকম। ভোটের আসরে রয়েছে সন্ত্রাসবাদীরাও। মৌলবাদ এবং জঙ্গিযোগ রয়েছে এমন সাড়ে চারশো প্রার্থী ভোটের ময়দানে। ফলে, পাক ভোটে এবার কাশ্মীর নিয়ে সুর বেশি না চড়লেও লাগাতার ভারত-বিরোধী প্রচারে ব্যস্ত হাফিজ সইদ। হাফিজের ছেলে-জামাই-সহ ভোটের লড়াইয়ে নেমেছে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত একাধিক নেতা।  


পাকিস্তানের ভোটে এবার বিশাল সংখ্যায় নির্দল প্রার্থীরাও লড়ছেন। ফলে, মিলিজুলি সরকার হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। আর সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সেনার পোয়াবারো। তাই পাকিস্তানের ভোটে সতর্ক নজর রাখছে দিল্লি। প্রচারপর্বে জঙ্গি হামলায় বারবার রক্তাক্ত হয়েছে পাকিস্তান। সন্ত্রাস-আতঙ্ক সরিয়ে শেষপর্যন্ত কতজন ভোটার বুথমুখো হন এখন সেদিকেই নজর সবার। আরও পড়ুন- গুরুতর কিডনি সমস্যায় ভুগছেন নওয়াজ়, হৃদস্পন্দনও অস্বাভাবিক জানাচ্ছেন চিকিত্সকরা