দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবথেকে বড় উদ্বাস্তু সমস্যার সম্মুখীন ইউরোপ, আয়লানকে নিজে হাতে সমাহিত করলেন বাবা
তুরস্কের সমুদ্রের তীরে মুখ থুবরে পড়েছিল তার ছোট্ট নিথর দেহটা। এত দিন পর্যন্ত যারা সিরিয়ার উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে নিশ্চুপ ছিলেন, পুঁচকে আয়লানের এই ছবি হয়ত এক ধাক্কায় ভেঙে দিয়েছে তাদের সুখী ঘুম। নিজের ৩ বছরের জীবনের মূল্যে আজ পৃথিবীর চর্চার কেন্দ্রে সিরিয়ার উদ্বাস্তু সমস্যা।
ওয়েব ডেস্ক: তুরস্কের সমুদ্রের তীরে মুখ থুবরে পড়েছিল তার ছোট্ট নিথর দেহটা। এত দিন পর্যন্ত যারা সিরিয়ার উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে নিশ্চুপ ছিলেন, পুঁচকে আয়লানের এই ছবি হয়ত এক ধাক্কায় ভেঙে দিয়েছে তাদের সুখী ঘুম। নিজের ৩ বছরের জীবনের মূল্যে আজ পৃথিবীর চর্চার কেন্দ্রে সিরিয়ার উদ্বাস্তু সমস্যা।
এই বিপুল পৃথিবীতে তার জন্য একফালি আশ্রয়ের সন্ধান দিতে পারেনি বড়রা। তবে ব্যবস্থা করল কবরের। আবদুল্লাহ কুর্দি, নিজে হাতে ৩ বছরের সন্তানকে মাটির নীচে চাপা দিলেন। আবেদন করলেন, এই বার অন্তত থামুক এই মৃত্যু মিছিল।
একটা ছবি। তাতেই ওলট পালট এখন গোটা বিশ্ব। এতদিন মহাশক্তিধর ইউরোপ যেভাবে সীমান্তের কাঁটাতারে 'উদ্বাস্তু' তকমা দিয়ে বেঁধে রাখতে চাইছিল মানবাধিকার, আজ তারাই চাপে পরে হঠাৎ ভোল পাল্টিয়েছে।
২০০ জন সিরিয়াবাসীকে 'আশ্রয়' দিয়ে নিজেদের 'ঔদার্য' প্রকাশে ব্যস্ত ছিল ব্রিটেন। আজ তারা জানিয়েছে আরও ১০০০ জন উদ্বাস্তু সে দেশে স্বাগত।
আন্তর্জাতিক স্তরে প্রবল সমালোচনার মুখে পরে এই মুহূর্ত উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত ইউরোপের দেশগুলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এত বড় উদ্বাস্তু সমস্যায় পড়েনি সে মহাদেশ।
রাষ্ট্রপুঞ্জে তরফ থেকে জানানো হয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উচিৎ এই মুহূর্তে প্রাণভয়ে দেশত্যাগী অন্তত ২ লক্ষ গৃহহীন মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
এই নিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশ গুলির মধ্যেই তীব্র মতবিরোধ শুরু হয়েছে। একদিকে জার্মানি চাইছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে, অন্য দিকে হাঙ্গেরি সীমান্ত নিয়ে এখনও কঠোর অবস্থান পেশ করছে।
রাজনৈতিক কচকচানির মধ্যেই অন্য রকম ভূমিকা রাখলেন আয়ারল্যান্ডের সাধারণ মানুষরা। সে দেশের হাজার হাজার মানুষ গৃহহীনদের জন্য নিজেদের বাড়ির দরজা উন্মুক্ত করে দিলেন।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট জানিয়েছেন আয়লানের মৃত্যু আসলে নৌকো করে মানুষ পাচারের ফল।
গতবছর থেকেই আইসিস-কুর্দ যুদ্ধের কেন্দ্রভূমি হয়ে ওঠেছে কোবানি। সিরিয়া ও ইরাকের মতো দেশে ক্রমশ আইসিসের প্রভাব বিস্তার করার ফলে দেশ ছেড়ে গ্রিস সীমান্তে আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ রিফিউজি পরিবার।
গত ৪ বছরে সিরিয়ায় যুদ্ধে মারা গিয়েছে ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। দেশ ছেড়েছেন ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ।