মগরাহাট নিয়ে মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে নেই স্বরাষ্ট্র সচিব

মগরাহাট নিয়ে মহাকরণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই বৈঠকে ডাক পেলেন না স্বরাষ্ট্র সচিব।

Updated By: Dec 1, 2011, 11:11 PM IST

মগরাহাট নিয়ে মহাকরণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই বৈঠকে ডাক পেলেন না স্বরাষ্ট্র সচিব। সঠিক সময়ে মগরাহাটের খবর মুখ্য মন্ত্রীর কাছে আসা নিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিবের
মন্তব্যের সাথে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের গড়মিল নিয়ে যে মতভেদ তৈরি হয়েছে
তার জেরেই এই অনুপস্থিতি বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
অন্যদিকে, পুলিসের গুলিতে দুজনের মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ বামফ্রন্টের ডাকে বারো ঘণ্টার বন্‌ধ চলছে মগরাহাটে। সকাল থেকেই বনধে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট এবং যানচলাচলও। সকাল থেকেই বিশাল পুলিসবাহিনী রুটমার্চ করায়,  এলাকার পরিস্থিতি এখনও থমথমে। থানার সামনে ভিড় করেছেন শতাধিক গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার পুলিসের গুলিতে দুজনের মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকালই ঘটনাস্থলে যান বামফ্রন্টের প্রতিনিধিদল।  পুরো ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন তাঁরা। আজ মৃতদেরর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে মগরাহাটে যাচ্ছে বিজেপির একটি প্রতিনিধিদল। গোটা ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল মগরাহাটে বারো ঘন্টার বনধের ডাক দিয়েছেন এসইউসিআই। বাম প্রতিনিধিদের কাছে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।  পুলিস যেভাবে গুলি চালিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীদের মেরেছে কড়া ভাষায় তার নিন্দাও করেন বাম নেতারা। একই সঙ্গে দোষী পুলিসদের কঠোরতম শাস্তির দাবিও তুলেছেন তাঁরা। মৃতদের পরিবারপিছু একজনকে চাকরি ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে। 
সিপিআইএম নেতা রেজ্জাক মোল্লা, কান্তি গাঙ্গুলি, সুজন চক্রবর্তী ও আরএসপি নেতা সুভাষ নস্কর ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। বিদ্যুতের দাবির জন্য যেভাবে পুলিস গুলি চালিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীদের মেরেছে তার কড়া ভাষায় নিন্দা করেন বাম নেতারা। অপরদিকে, এই ঘটনার পরে মগরাহাট থানার ওসিকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। মগরাহাটে হুকিং বন্ধে অভিযান চালানো হয়েছিল বিদুত্‍মন্ত্রীর নির্দেশেই। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানের পরিকল্পনা করেন বিদ্যুত্‍ বণ্টন সংস্থার এক প্রাক্তন কর্তা। তাঁকে সম্প্রতি ওই সংস্থায় পুনর্নিয়োগ করা হয়। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুক্রবার ঘটনাস্থলে যান তৃণমূল নেতা মুকুল রায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুলিসের গুলি চালনার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধীরা। মগরাহাট পরিদর্শনে গেছে কংগ্রেস প্রতিনিধি দলও।

বৃহস্পতিবার রাতে মগরাহাটে পুলিসের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরীসহ দুজনের। নিহত রেজিনা খাতুন ১৪, ও সইদা বিবি ২৮। এই ঘটনায় রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক কিশোরকে আনা হয় কলকাতায়। আহত কিশোর জব্বর নাইয়াকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। তার পেটে গুলি লেগেছে। অপর ২ আহত নুরুল হুদা মল্লিক ও বাপ্পা মণ্ডল ভর্তি আছেন মগারাহাট এবং ডায়মন্ড বারবার হাসপাতালে। মগরাহাটে সংঘর্ষে ষোলো জন পুলিস কর্মী জখম হয়েছেন। ৬ পুলিসকর্মী ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গ্রামবাসীদের ছোঁড়া ইঁটের আঘাতে জখম হয়েছেন একজন বিদ্যুত দফতরের কর্মীও।

অভিযোগ ছিল এলাকায় বিদ্যুত্‍‍‍ চুরির ঘটনা ঘটছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিদ্যুত্‍‍ দফতরের কর্মীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান। এরপর এলাকার মানুষ বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের ঘিরে ধরে অবিলম্বে গ্রামে বিদ্যুত দিতে হবে এই দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পুলিসের গাড়ি ভাঙচুর করে ক্ষুব্ধ জনতা। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইঁট পাটকেল ছুড়তে থাকে। অবস্থার সামাল দিতে নামোনো হয় র‍্যাফ। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পুলিসের সঙ্গে জনতার খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। এরপরই পুলিস এলোপাথাড়ি গুলি চালায় বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে র‍্যাফও বিশাল পুলিস বাহিনী।

.